৩৪তম বিসিএস প্রিলিমিনারি টেস্ট/বাংলা এর প্রশ্ন পরুন ।

প্রশ্নঃ ' চর্যাপদ' কত সালে আবিষ্কৃত হয়?

বর্ণনাঃ বাংলা ভাষার প্রাচীন যুগের একমাত্র নিদর্শন 'চর্যাপদ' মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী কর্তৃক ১৯০৭ সালে নেপালের রাজগ্রন্থাগার থেকে আবিষ্কৃত হয় । বৌদ্ধ সহজিয়াগণের রচিত চর্যাপদ ১৯১৬ সালে কলকাতার বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ থেকে আধুনিক লিপিতে প্রকাশিত হয় ।চর্যার পুঁথিতে ৫১ টি গান ছিল, যার সাড়ে ৪৬ টি পাওয়া গেছে।

প্রশ্নঃ বাংলা সাহিত্যের পঠন-পাঠনের সুবিধার জন্য বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসকে তিনটি যুগে ভাগ করা হয়েছে ---বাংলা সাহিত্যের প্রাচীন যুগ।

বর্ণনাঃ বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসকে প্রধানত তিনটি যুগে বাগ করা হয়েছে। যথা : ক .প্রাচীন বা আদি যুগ (৬৫০-১২০০ ) খ. মধ্যযুগ (১২০১-১৮০০) এবং গ. আধুনিক যুগ ( ১৮০১ -বর্তমান পর্যন্ত)

প্রশ্নঃ মধ্যযুগের কবি নন কে?

বর্ণনাঃ জয়নন্দী বা জয়নন্দীপা 'চর্যাপদ' -এর তথা প্রাচীন যুগের কবি। তিনি চর্যাপদ -এর ৪৬ নং পদের রচয়িতা । মধ্যযুগের প্রথম কাব্য 'শ্রীকৃষ্ণকীর্তন' - এর রচয়িতা বডু চণ্ডীদাস। মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের মূল্যবান নিদর্শন বৈষ্ণব পদাবলী' -এর অন্যতম দুই মহাকবি জ্ঞানদাস ও গোবিন্দদাস।

প্রশ্নঃ বাংলা সাহিত্যে অন্ধকার যুগ বলতে ----

বর্ণনাঃ ১২০১ -১৩৫০ পর্যন্ত সময়কে অনেক সমালোচক বাংলা সাহিত্যের 'অন্ধকার যুগ' বলে মনে করেন। তাঁদের মতে, এই ১৫০ বছর বাংলা সাহিত্যে তেমন কোনো সাহিত্যকর্ম সৃষ্টি হয়নি। তবে ক্রয়োদশ শতকের শেষের দিকে রামাই পণ্ডিতের 'শূন্যপুরাণ' ও হলায়ূধ মিশ্রের ' সেক শুভোদয়া' এই সময়ের উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ।

প্রশ্নঃ ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের অধ্যক্ষ কে ছিলেন?

বর্ণনাঃ ১৮০০ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত ফোর্ট উইলিয়ামের কলেজে ১৮০১ খ্রিষ্টাব্দে বাংলা বিভাগ খোলা হয়। উইলিয়াম কেরি স্বীয় যোগ্যতাবলে ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের অধ্যক্ষ হন। মৃত্যুঞ্জয় বিদ্যালঙ্কার ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের বাংলা বিভাগের একজন পণ্ডিত ছিলেন। তার রচিত গ্রন্থ 'বত্রিশ সিংহাসন' 'হিতোপদেশ' 'রাজাবলি' উল্লেখযোগ্য । উইলিয়াম কেরির সহকারী রামরাম বসু ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের পাঠ্যপুস্তক প্রণেতাদের মধ্যে প্রথম ও প্রধান । তার রচিত গ্রন্থ 'রাজা প্রতাপাদিত্য চরিত্র' 'লিপিমালা'।

প্রশ্নঃ বাংলা সাহিত্যের জনক হিসেবে কার নাম চির স্মরণীয়?

বর্ণনাঃ বাংলা গদ্যের জনক ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর । বাংলা উপন্যাসের জনক বঙ্কিমচন্দ্র চট্রোপাধ্যায়। মাইকেল মধুসূদন দত্ত আধুনিক বাংলা কবিতার জনক । রাজা রামমোহন রায় ব্রাহ্ম সমাজের প্রতিষ্ঠাতা।]

প্রশ্নঃ মাইকেল মধুসূদন দত্তের রচনা নয় কোনটি?

বর্ণনাঃ মাইকেল মধুসূদন দত্ত অমিত্রাক্ষর ছন্দের সফল প্রয়োগ ঘটান 'তিলোত্তমাসম্ভব' কাব্যগ্রন্থে। তার রচিত' মেঘনাদবধ কাব্য' বাংলা সাহিত্যের সর্বপ্রথম ও সর্বশ্রেষ্ঠ মহাকাব্য এবং 'বীরঙ্গনা' বাংলা সাহিত্যের সর্বপ্রথম পত্রকাব্য। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর রচিত 'বেতালপঞ্চবিংশতি' হিন্দি 'বৈতাল পচ্চীসীর' অনুবাদ' বিদ্যাসাগর এই গ্রন্থে সর্বপ্রথম যতি-চিহ্নের সফল প্রয়োগ করেন।

প্রশ্নঃ কুলীন কুলসর্বস্ব নাটকটি কার লেখা?

বর্ণনাঃ 'কুলীনকুল সর্বস্ব' নাটকটির রচয়িতা রামনারায়ণ তর্করত্ন। মাইকেলের রচিত উল্লেখযোগ্য নাটক শর্মিষ্ঠা, কৃষ্ণকুমারী, পদ্মাবতী ।দীনবন্ধু মিত্রের বিখ্যাত নাটক 'নীল দর্পণ'। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উল্লেখযোগ্য নাটক রক্তকরবী, ডাকঘর , বিসর্জন।

প্রশ্নঃ ' নীল দর্পণ' নাটকটির বিষবস্তু কি?

বর্ণনাঃ ঊনবিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগে নীলকরদের অত্যাচারে পীড়িত সাধারণ কৃষক -জীবনের মর্মন্তুদ ছবি 'নীল দর্পণ' নাটক প্রকাশিত হয় । গ্রন্থটির ইংরেজি অনুবাদ করেন মধুসূদন দত্ত এবং তা প্রকাশ করেন রেভারেন্ড জেমস্ লঙ। উল্লেখযোগ্য চরিত্র: গোলক বসু, নবীন মাধব, তোরাপ ,সাবিত্রী।

প্রশ্নঃ ' ঘরে বাইরে' উপন্যাসটি কার লেখা?

বর্ণনাঃ 'ঘরে বাইরে' রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অন্যতম উপন্যাস। এটি স্বদেশী আন্দোলনের পটভূমিতে রচিত। ব্রিটিশ ভারতের রাজনীতি এর মূল উপজীব্য বিষয়। উল্লেখযোগ্য চরিত্র বিমলা, নিখিলেশ, সন্দ্বীপ ।

প্রশ্নঃ সৈয়দ মুজতবা আলীর প্রবন্ধ গ্রন্থ কোনটি?

বর্ণনাঃ সৈয়দ মুজতবা আলী রচিত ' পঞ্চতন্ত্র' দুই পর্বে বিভক্ত ব্যক্তিগত প্রবন্ধ সংকলন। প্রথম পর্বে ৩৪ টি এবং দ্বিতীয় পর্বে ৩১ টি মোট ৬৫ টি রচনার সংকলন এটি। এসব প্রবন্ধ 'বসুমতী' ও 'দেশ ' পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল।

প্রশ্নঃ ' তত্ত্ববোধিনী' পত্রিকার সম্পাদক কে ছিলেন?

বর্ণনাঃ সাহিত্য, বিজ্ঞান, দর্শন, ইতিহাস, রাজনীতি, সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমস্যা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে ১৮৪৩ সালে ' তত্ত্বোবধিনী' পত্রিকাটি যাত্রা শুরু করে। এ পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন অক্ষয়কুমার দত্ত।

প্রশ্নঃ ভাষা আন্দোলনভিত্তিক নাটক কোনটি?

বর্ণনাঃ ভাষা আন্দোলনভিত্তিক নাটক 'কবর' যার রচয়িতা মুনীর চৌধুরী। ১৯৫৫ সালের আগস্ট মাসে 'সংবাদ' পত্রিকার আজাদী সংখ্যায় কবর প্রথম প্রকাশিত হয় । এর ১০ বছর পর হাসান হাফিজুর রহমান সম্পাদিত 'একুশে ফেব্রুয়ারি' সংকলনের দ্বিতীয় সংস্করণে নাটকটি পুনর্মুদ্রিত হয়।

প্রশ্নঃ ' ভানুসিংহ ঠাকুর' কার ছদ্মনাম?

বর্ণনাঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছদ্মনাম' ভানুসিংহ ঠাকুর ' । রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এ ছদ্মনামে 'ভানুসিংহ ঠাকুরের পদাবলী' রচনা করেন। প্রমথ চৌধুরীর ছদ্মনাম 'বীরবল'।

প্রশ্নঃ কোন কাব্যটি পল্লীকবি জসীমউদ্‌দীন রচিত?

বর্ণনাঃ 'রাখালী' পল্লীকবি' জসীমউদ্দীন রচিত প্রথম গ্রন্থ ও কাব্যগ্রন্থ। 'কবর' কবিতাটি এ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত। কবিতাটি 'কল্লোল' পত্রিকায় প্রথম প্রকাশিত হয়।

প্রশ্নঃ 'তুমি আসবে বলে হে স্বাধীনতা ' ----- কার কবিতা?

বর্ণনাঃ শামসুর রাহমান বাংলাদেশের আধুনিক কবি। 'তুমি আসবে বলে হে স্বাধীনতা' কবিতাটি তাঁর 'শামসুর রাহমানের শ্রেষ্ঠ কবিতা' সংকলনের অন্তর্ভুক্ত। তাঁর রচিত অন্যান্য উল্লেখযোগ্য কবিতা - 'স্বাধীনতা তুমি' 'পণ্ডশ্রম' মধুস্মৃতি' 'রক্তাক্ত প্রান্তরে।

প্রশ্নঃ ' দেয়াল' রচনাটি কার?

বর্ণনাঃ 'দেয়াল ' কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের রাজনৈতিক উপন্যাস। ২০১১ সালে তিনি এ উপন্যাস রচনা শুরু করেন যা তার মৃত্যুর পর ২০১৩ সালে প্রকাশিত হয়। তিনি ছাড়াও 'দেয়াল' (১৯৮৫) নামে উপন্যাস রচনা করেছেন- আবু জাফর শামসুদ্দীন ।

প্রশ্নঃ মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাস কোনটি?

বর্ণনাঃ কথাশিল্পী সেলিনা হোসেনের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাস 'হাঙর নদী গ্রেনেড' (১৯৭৬) । তার উপন্যাস অবলম্বনে ১৯৯৭ সালে চাষী নজরুল ইসলাম নির্মাণ করেন মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র 'হাঙর নদী গ্রেনেড' ।

প্রশ্নঃ ' আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি আমি কি ভুলিতে পারি।' ----- এ গানের প্রথম সুরকার কে?

বর্ণনাঃ 'আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি ' গানটির প্রথম সুরকার আবদুল লতিফ। দ্বিতীয় দফায় গানটিতে সুরারোপ করেন আলতাফ মাহমুদ। প্রথম পর্যায়ে কণ্ঠশিল্পী ছিলেন আবদুল লতিফ, বর্তমানে এটি সমবেত কণ্ঠে গাওয়া হয় । গানটির গীতিকার আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী।

প্রশ্নঃ ১৯৮৫ সালে নাসির উদ্দিন স্বর্ণপদক কে পান?

বর্ণনাঃ শিক্ষাবিদ ও কবি সৈয়দ আলী আহসানের বিখ্যাত অনুবাদ গ্রন্থ' হুইটম্যানের কবিতা' ও 'ইডিপাস । বাংলা সাহিত্যে অনন্য অবদানের জন্য তিনি বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরষ্কার (১৯৬৭) ,সুফী মোতাহের হোসেন স্বর্ণপদক (১৯৮৫), নাসির উদ্দিন স্বর্ণপদক (১৯৮৫) স্বাধীনতা পুরস্কারসহ (১৯৮৮) নানা পুরস্কার লাভ করেন।

প্রশ্নঃ প্রাণদ : জল : : মহীজ : ?

বর্ণনাঃ মহীজ শব্দের অর্থ আসামি। এর ইংরেজি প্রতিশব্দ Mars। আবার এর বাংলা অর্থ মঙ্গলগ্রহ, যা গ্রহের একক রুপ। সুতরাং মহীজের সমার্থক গ্রহ। অন্যদিকে নিঃসর্গ পৃথিবীর সমার্থক শব্দ মহী, মহীজ নয়।