প্রশ্নঃ সনেটের প্রথম ভাগে কত লাইন হয়?
Best One ব্যাখ্যা যোগ করুন।বর্ণনাঃ
চতুর্দশপদী হল এক ধরনের কবিতা যার প্রথম উদ্ভব হয় মধ্যযুগে ইতালিতে। এর বৈশিষ্ট হল যে এই কবিতাগুলো ১৪টি চরণে সংগঠিত এবং প্রতিটি চরণে সাধারণভাবে মোট ১৪টি করে অক্ষর থাকবে।এর প্রথম আট চরণের স্তবককে অষ্টক এবং পরবর্তী ছয় চরণের স্তবককে ষষ্টক বলে। অষ্টকে মূলত ভাবের প্রবর্তনা এবং ষষ্টকে ভাবের পরিণতি থাকে।
প্রশ্নঃ কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন কোনটি?
Best One ব্যাখ্যা যোগ করুন।বর্ণনাঃ
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এফআরএএস (৭ই মে, ১৮৬১ - ৭ই আগস্ট, ১৯৪১) (২৫শে বৈশাখ, ১২৬৮ - ২২শে শ্রাবণ, ১৩৪৮ বঙ্গাব্দ) ছিলেন অগ্রণী বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, সংগীতস্রষ্টা, নাট্যকার, চিত্রকর, ছোটগল্পকার, প্রাবন্ধিক, অভিনেতা, কণ্ঠশিল্পী ও দার্শনিক। তাকে বাংলা ভাষার সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক মনে করা হয়। রবীন্দ্রনাথকে গুরুদেব, কবিগুরু ও বিশ্বকবি অভিধায় ভূষিত করা হয়। রবীন্দ্রনাথের ৫২টি কাব্যগ্রন্থ, ৩৮টি নাটক, ১৩টি উপন্যাস ও ৩৬টি প্রবন্ধ ও অন্যান্য গদ্যসংকলন তার জীবদ্দশায় বা মৃত্যুর অব্যবহিত পরে প্রকাশিত হয়। তার সর্বমোট ৯৫টি ছোটগল্প ও ১৯১৫টি গান যথাক্রমে গল্পগুচ্ছ ও গীতবিতান সংকলনের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের যাবতীয় প্রকাশিত ও গ্রন্থাকারে অপ্রকাশিত রচনা ৩২ খণ্ডে রবীন্দ্র রচনাবলী নামে প্রকাশিত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের যাবতীয় পত্রসাহিত্য উনিশ খণ্ডে চিঠিপত্র ও চারটি পৃথক গ্রন্থে প্রকাশিত। এছাড়া তিনি প্রায় দুই হাজার ছবি এঁকেছিলেন। রবীন্দ্রনাথের রচনা বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে। ১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের ইংরেজি অনুবাদের জন্য তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কলকাতার এক ধনাঢ্য ও সংস্কৃতিবান ব্রাহ্ম পিরালী ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বাল্যকালে প্রথাগত বিদ্যালয়-শিক্ষা তিনি গ্রহণ করেননি; গৃহশিক্ষক রেখে বাড়িতেই তার শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। আট বছর বয়সে তিনি কবিতা লেখা শুরু করেন। ১৮৭৪ সালে তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা-এ তার "অভিলাষ" কবিতাটি প্রকাশিত হয়। এটিই ছিল তার প্রথম প্রকাশিত রচনা। ১৮৭৮ সালে মাত্র সতেরো বছর বয়সে রবীন্দ্রনাথ প্রথমবার ইংল্যান্ডে যান। ১৮৮৩ সালে মৃণালিনী দেবীর সঙ্গে তার বিবাহ হয়। ১৮৯০ সাল থেকে রবীন্দ্রনাথ পূর্ববঙ্গের শিলাইদহের জমিদারি এস্টেটে বসবাস শুরু করেন। ১৯০১ সালে তিনি পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে ব্রহ্মচর্যাশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন এবং সেখানেই পাকাপাকিভাবে বসবাস শুরু করেন। ১৯০২ সালে তার পত্নীবিয়োগ হয়। ১৯০৫ সালে তিনি বঙ্গভঙ্গ-বিরোধী আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। ১৯১৫ সালে ব্রিটিশ সরকার তাকে নাইট উপাধিতে ভূষিত করেন। কিন্তু ১৯১৯ সালে জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে তিনি সেই উপাধি ত্যাগ করেন। ১৯২১ সালে গ্রামোন্নয়নের জন্য তিনি শ্রীনিকেতন নামে একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন।১৯২৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠিত হয়। দীর্ঘজীবনে তিনি বহুবার বিদেশ ভ্রমণ করেন এবং সমগ্র বিশ্বে বিশ্বভ্রাতৃত্বের বাণী প্রচার করেন। ১৯৪১ সালে দীর্ঘ রোগভোগের পর কলকাতার পৈত্রিক বাসভবনেই তার মৃত্যু হয়।
রবীন্দ্রনাথের কাব্যসাহিত্যের বৈশিষ্ট্য ভাবগভীরতা, গীতিধর্মিতা চিত্ররূপময়তা, অধ্যাত্মচেতনা, ঐতিহ্যপ্রীতি, প্রকৃতিপ্রেম, মানবপ্রেম, স্বদেশপ্রেম, বিশ্বপ্রেম, রোম্যান্টিক সৌন্দর্যচেতনা, ভাব, ভাষা, ছন্দ ও আঙ্গিকের বৈচিত্র্য, বাস্তবচেতনা ও প্রগতিচেতনা। রবীন্দ্রনাথের গদ্যভাষাও কাব্যিক। ভারতের ধ্রুপদি ও লৌকিক সংস্কৃতি এবং পাশ্চাত্য বিজ্ঞানচেতনা ও শিল্পদর্শন তার রচনায় গভীর প্রভাব বিস্তার করেছিল। কথাসাহিত্য ও প্রবন্ধের মাধ্যমে তিনি সমাজ, রাজনীতি ও রাষ্ট্রনীতি সম্পর্কে নিজ মতামত প্রকাশ করেছিলেন। সমাজকল্যাণের উপায় হিসেবে তিনি গ্রামোন্নয়ন ও গ্রামের দরিদ্র মানুষ কে শিক্ষিত করে তোলার পক্ষে মতপ্রকাশ করেন। এর পাশাপাশি সামাজিক ভেদাভেদ, অস্পৃশ্যতা, ধর্মীয় গোঁড়ামি ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধেও তিনি তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। রবীন্দ্রনাথের দর্শনচেতনায় ঈশ্বরের মূল হিসেবে মানব সংসারকেই নির্দিষ্ট করা হয়েছে; রবীন্দ্রনাথ দেববিগ্রহের পরিবর্তে কর্মী অর্থাৎ মানুষ ঈশ্বরের পূজার কথা বলেছিলেন। সংগীত ও নৃত্যকে তিনি শিক্ষার অপরিহার্য অঙ্গ মনে করতেন। রবীন্দ্রনাথের গান তার অন্যতম শ্রেষ্ঠ কীর্তি। তার রচিত আমার সোনার বাংলা ও জনগণমন-অধিনায়ক জয় হে গানদুটি যথাক্রমে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ ও ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের জাতীয় সংগীত।
সুত্রঃ ইউকিপিডিয়া
প্রশ্নঃ ২০১৬ সালের ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর কততম জন্মবার্ষিকী পালন করা হলো?
Best One ব্যাখ্যা যোগ করুন।বর্ণনাঃ
শেখ মুজিবুর রহমান (১৭ মার্চ ১৯২০ - ১৫ আগস্ট ১৯৭৫), সংক্ষিপ্তাকারে শেখ মুজিব বা মুজিব, ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি ও ভারতীয় উপমহাদেশের একজন অন্যতম প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, যিনি বাঙালির অধিকার রক্ষায় ব্রিটিশ ভারত থেকে ভারত বিভাজন আন্দোলন এবং পরবর্তীতে পূর্ব পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে কেন্দ্রীয়ভাবে নেতৃত্ব প্রদান করেন। প্রাচীন বাঙালি সভ্যতার আধুনিক স্থপতি হিসাবে শেখ মুজিবুর রহমানকে বাংলাদেশের "জাতির জনক" বা "জাতির পিতা" বলা হয়ে থাকে। তিনি মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী প্রতিষ্ঠিত আওয়ামী লীগের সভাপতি, বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি এবং পরবর্তীতে এদেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। জনসাধারণের কাছে তিনি শেখ মুজিব এবং শেখ সাহেব হিসাবে বেশি পরিচিত ছিলেন এবং তার উপাধি "বঙ্গবন্ধু"। তার কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বর্তমান সভানেত্রী এবং বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী।
১৯৪৭-এ ভারত বিভাগ পরবর্তী পূর্ব পাকিস্তানের রাজনীতির প্রাথমিক পর্যায়ে শেখ মুজিব ছিলেন তরুন ছাত্রনেতা। পরবর্তীতে তিনি মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী প্রতিষ্ঠিত আওয়ামী লীগের সভাপতি হন । সমাজতন্ত্রের পক্ষসমর্থনকারী একজন অধিবক্তা হিসেবে তিনি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের জনগোষ্ঠীর প্রতি সকল ধরনের বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলেন। জনগণের স্বাধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তিনি একসময় ছয় দফা স্বায়ত্ত্বশাসন পরিকল্পনা প্রস্তাব করেন যাকে পশ্চিম পাকিস্তানে একটি বিচ্ছিন্নতাবাদী পরিকল্পনা হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছিল। ছয় দফা দাবীর মধ্যে প্রধান ছিল বর্ধিত প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসন যার কারণে তিনি আইয়ুব খানের সামরিক শাসনের অন্যতম বিরোধী পক্ষে পরিণত হন। ১৯৬৮ খ্রিষ্টাব্দে ভারত সরকারের সাথে যোগসাজশ ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগে তার বিচার শুরু হয় এবং পরবর্তীতে তিনি নির্দোষ প্রমাণিত হন। ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দের নির্বাচনে তার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ বিপুল বিজয় অর্জন করে। তথাপি তাকে সরকার গঠনের সুযোগ দেয়া হয় নি।
পাকিস্তানের নতুন সরকার গঠন বিষয়ে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ইয়াহিয়া খান এবং পশ্চিম পাকিস্তানের রাজনীতিবিদ জুলফিকার আলী ভুট্টোর সাথে শেখ মুজিবের আলোচনা বিফলে যাওয়ার পর ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে মার্চ ২৫ মধ্যরাত্রে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ঢাকা শহরে গণহত্যা পরিচালনা করে। একই রাতে তাকে গ্রেফতার করা হয় এবং পরবর্তীকালে পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হয়। রহিমুদ্দিন খান সামরিক আদালতে তাকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করে তবে তা কার্যকর করা হয় নি। ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ শেষে ১৯৭১-এর ১৬ই ডিসেম্বর বাংলাদেশ-ভারত যৌথ বাহিনীর কাছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী আত্মসমর্পণ করার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ নামে স্বাধীন রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা হয়। ১০ জানুয়ারি ১৯৭২ শেখ মুজিব পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করেন এবং বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন। ১৯৭২-এর ১২ই জানুয়ারি তিনি সংসদীয় শাসনব্যবস্থা প্রবর্তন করে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। মতাদর্শগতভাবে তিনি বাঙালি জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতায় বিশ্বাসী ছিলেন, যা সম্মিলিতভাবে মুজিববাদ নামে পরিচিত। জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতাকে ভিত্তি করে সংবিধান প্রণয়ন এবং সে অনুযায়ী রাষ্ট্র চালনার চেষ্টা সত্ত্বেও তীব্র দারিদ্র্য, বেকারত্ব, সর্বব্যাপী অরাজকতা এবং সেই সাথে ব্যাপক দুর্নীতি মোকাবেলায় তিনি কঠিন সময় অতিবাহিত করেন। ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক অস্থিরতা দমনের লক্ষ্যে ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দে তিনি এক দলীয় রাজনীতি ঘোষণা করেন। এর সাত মাস পরে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তারিখে একদল সামরিক কর্মকর্তার হাতে তিনি সপরিবারে নিহত হন। ২০০৪ সালে বিবিসি'র সম্পাদিত একটি জরিপে শেখ মুজিবুর রহমান "সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি" হিসেবে সর্বাধিক ভোটপ্রাপ্ত হন।
সুত্রঃ উইকিপিডিয়া
প্রশ্নঃ শিখা অনির্বাণ কোথায় অবস্থিত?
Best One ব্যাখ্যা যোগ করুন।বর্ণনাঃ
শিখা অনির্বান বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ। যুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সৈনিকদের স্মৃতিকে জাতির জীবনে চির উজ্জ্বল রাখার উদ্দেশ্যে এই স্মৃতিস্তম্ভে সার্বক্ষনিক ভাবে শিখা প্রজ্জ্বলন করে রাখা হয়। ঢাকা সেনানিবাসস্থ কুর্মিটোলা গলফ ক্লাব ও সেনানিবাসস্থ কেন্দ্রীয় মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় এটি স্থাপিত। এর স্থাপত্য পরিকল্পনা করেছে ঢাকার ডিজাইন ডেভেলপমেন্ট সেন্টার।
প্রশ্নঃ বাংলাদেশে নদের সংখ্যা কয়টি ?
Best One ব্যাখ্যা যোগ করুন।বর্ণনাঃ
বাংলাদেশে নদের সংখ্যা কতটি? উত্তর: ২ টি কপোতাক্ষ নদ ও ব্রহ্মপুত্
প্রশ্নঃ কোন তারিখে বাংলাদেশের সংবিধান কার্যকরী হয়?
Best One ব্যাখ্যা যোগ করুন।বর্ণনাঃ
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন। এটি একটি লিখিত দলিল। ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দের ৪ঠা নভেম্বর তারিখে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে এই সংবিধান গৃহীত হয় এবং একই বছরের ১৬ই ডিসেম্বর অর্থাৎ বাংলাদেশের বিজয় দিবসের প্রথম বার্ষিকী হতে এটি কার্যকর হয়। মূল সংবিধান ইংরেজি ভাষায় রচিত হয় এবং একে বাংলায় অনুবাদ করা হয়। তাই এটি বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায় বিদ্যমান। তবে ইংরেজি ও বাংলার মধ্যে অর্থগত বিরোধ দৃশ্যমান হলে বাংলা রূপ অনুসরণীয় হবে।
১০ই এপ্রিল ২০১৮ সালের সপ্তদশ সংশোধনী সহ বাংলাদেশের সংবিধান সর্বমোট ১৭ বার সংশোধীত হয়েছে। এই সংবিধান সংশোধনের জন্য জাতীয় সংসদের সদস্যদের মোট সংখ্যার দুই তৃতীয়াংশ ভোটের প্রয়োজন হয়। তবে পঞ্চম সংশোধনী , সপ্তম সংশোধনী , ত্রয়োদশ সংশোধনী ও পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিলের আদেশে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট রায় দিয়েছে যে, সংবিধানের মূল কাঠামো পরিবর্তন হয়ে যায় এরূপ কোনো সংশোধনী এতে আনা যাবে না; আনা হলে তা হবে এখতিয়ার বহির্ভূত।
বাংলাদেশের সংবিধান কেবল বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আইনই নয়;- সংবিধানে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের মূল চরিত্র বর্ণিত রয়েছে। এতে বাংলাদেশের ভৌগোলিক সীমারেখা বিধৃত আছে। দেশটি হবে প্রজাতান্ত্রিক, গণতন্ত্র হবে এদেশের প্রশাসনিক ভিত্তি, জনগণ হবে সকল ক্ষমতার উৎস এবং বিচার বিভাগ হবে স্বাধীন। জনগণ সকল ক্ষমতার উৎস হলেও দেশ আইন দ্বারা পরিচালিত হবে। সংবিধানে জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা -কে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে।
সংবিধান প্রণয়নের উদ্দেশ্যে ১৯৭২ সালের ১১ই এপ্রিল ড. কামাল হোসেনকে সভাপতি করে ৩৪ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। তারা হলেন ড. কামাল হোসেন (ঢাকা-৯, জাতীয় পরিষদ), মো. লুৎফর রহমান (রংপুর-৪, জাতীয় পরিষদ), অধ্যাপক আবু সাইয়িদ (পাবনা-৫, জাতীয় পরিষদ), এম আবদুর রহিম (দিনাজপুর-৭, প্রাদেশিক পরিষদ), এম আমীর-উল ইসলাম (কুষ্টিয়া-১, জাতীয় পরিষদ), মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম মনজুর (বাকেরগঞ্জ-৩, জাতীয় পরিষদ), আবদুল মুনতাকীম চৌধুরী (সিলেট-৫, জাতীয় পরিষদ), ডা. ক্ষিতীশ চন্দ্র (বাকেরগঞ্জ-১৫, প্রাদেশিক পরিষদ), সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত (সিলেট-২, প্রাদেশিক পরিষদ), সৈয়দ নজরুল ইসলাম (ময়মনসিংহ-১৭, জাতীয় পরিষদ), তাজউদ্দীন আহমদ (ঢাকা-৫, জাতীয় পরিষদ), খন্দকার মোশতাক আহমেদ (কুমিল্লা-৮, জাতীয় পরিষদ), এ এইচ এম কামারুজ্জামান (রাজশাহী-৬, জাতীয় পরিষদ), আবদুল মমিন তালুকদার (পাবনা-৩, জাতীয় পরিষদ), আবদুর রউফ (রংপুর-১১, ডোমার, জাতীয় পরিষদ), মোহাম্মদ বায়তুল্লাহ (রাজশাহী-৩, জাতীয় পরিষদ), বাদল রশীদ, বার অ্যাট ল, খন্দকার আবদুল হাফিজ (যশোর-৭, জাতীয় পরিষদ), শওকত আলী খান (টাঙ্গাইল-২, জাতীয় পরিষদ), মো. হুমায়ুন খালিদ, আছাদুজ্জামান খান (যশোর-১০, প্রাদেশিক পরিষদ), এ কে মোশাররফ হোসেন আখন্দ (ময়মনসিংহ-৬, জাতীয় পরিষদ), আবদুল মমিন, শামসুদ্দিন মোল্লা (ফরিদপুর-৪, জাতীয় পরিষদ), শেখ আবদুর রহমান (খুলনা-২, প্রাদেশিক পরিষদ), ফকির সাহাব উদ্দিন আহমদ, অধ্যাপক খোরশেদ আলম (কুমিল্লা-৫, জাতীয় পরিষদ), এম. মোজাফ্ফর আলী (জাতীয় পরিষদ হোমনা - দাউদকান্দি), অ্যাডভোকেট সিরাজুল হক (কুমিল্লা-৪, জাতীয় পরিষদ), দেওয়ান আবু আব্বাছ (কুমিল্লা-৫, জাতীয় পরিষদ), হাফেজ হাবিবুর রহমান (কুমিল্লা-১২, জাতীয় পরিষদ), আবদুর রশিদ, নুরুল ইসলাম চৌধুরী (চট্টগ্রাম-৬, জাতীয় পরিষদ), মোহাম্মদ খালেদ (চট্টগ্রাম-৫, জাতীয় পরিষদ) ও বেগম রাজিয়া বানু (নারী আসন, জাতীয় পরিষদ)।
একই বছরের ১৭ই এপ্রিল থেকে ৩রা অক্টোবর পর্যন্ত এই কমিটি বিভিন্ন পর্যায়ে বৈঠক করে। জনগণের মতামত সংগ্রহের জন্য মতামত আহবান করা হয়। সংগৃহীত মতামত থেকে ৯৮টি সুপারিশ গ্রহণ করা হয়। ১৯৭২ সালের ১২ অক্টোবর গণপরিষদের দ্বিতীয় অধিবেশনে তৎকালীন আইনমন্ত্রী ড. কামাল হোসেন খসড়া সংবিধান বিল আকারে উত্থাপন করেন। ১৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর গণপরিষদে বাংলাদেশের সংবিধান গৃহীত হয় এবং ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭২ (বিজয় দিবস) থেকে কার্যকর হয়। গণপরিষদে সংবিধানের উপর বক্তব্য রাখতে গিয়ে বঙ্গবন্ধু বলেন,
এই সংবিধান শহীদের রক্তে লিখিত, এ সংবিধান সমগ্র জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার মূর্ত প্রতীক হয়ে বেঁচে থাকবে।
সংবিধান লেখার পর এর বাংলা ভাষারূপ পর্যালোচনার জন্য ড. আনিসুজ্জামানকে আহবায়ক, সৈয়দ আলী আহসান এবং মযহারুল ইসলামকে ভাষা বিশেষজ্ঞ হিসেবে একটি কমিটি গঠন করে পর্যালোচনার ভার দেয়া হয়।
গণপরিষদ ভবন, যা বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন, সেখানে সংবিধান প্রণয়ন কমিটির বৈঠকে সহযোগিতা করেন ব্রিটিশ আইনসভার খসড়া আইন-প্রণেতা আই গাথরি।
সংবিধান ছাপাতে ১৪ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছিলো। সংবিধান অলংকরণের জন্য পাঁচ সদস্যের কমিটি করা হয়েছিল যার প্রধান ছিলেন শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন। এই কমিটির সদস্য ছিলেন শিল্পী হাশেম খান, জনাবুল ইসলাম, সমরজিৎ রায় চৌধুরী ও আবুল বারক আলভী। শিল্পী হাশেম খান অলংকরণ করেছিলেন। ১৯৪৮ সালে তৈরী ক্র্যাবটি ব্রান্ডের দুটি অফসেট মেশিনে সংবিধানটি ছাপা হয়।
মূল সংবিধানের কপিটি বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে।
বিস্মিল্লাহির-রহ্মানির রহিম (দয়াময়, পরম দয়ালু, আল্লাহের নামে/পরম করুণাময় সৃষ্টিকর্তার নামে।)
আমরা, বাংলাদেশের জনগণ, ১৯৭১ খ্রীষ্টাব্দের মার্চ মাসের ২৬ তারিখে স্বাধীনতা ঘোষণা করিয়া জাতীয় মুক্তির জন্য ঐতিহাসিক সংগ্রামের মাধ্যমে স্বাধীন ও সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত করিয়াছি;
আমরা অঙ্গীকার করিতেছি যে, যে সকল মহান আদর্শ আমাদের বীর জনগণকে জাতীয় মুক্তি সংগ্রামে আত্মনিয়োগ ও বীর শহীদদিগকে প্রাণোৎসর্গ করিতে উদ্বুদ্ধ করিয়াছিল-জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার সেই সকল আদর্শ এই সংবিধানের মূলনীতি হইবে;
আমরা আরও অঙ্গীকার করিতেছি যে, আমাদের রাষ্ট্রের অন্যতম মূল লক্ষ্য হইবে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে এমন এক শোষণমুক্ত সমাজতান্ত্রিক সমাজের প্রতিষ্ঠা- যেখানে সকল নাগরিকের জন্য আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার এবং রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাম্য, স্বাধীনতা ও সুবিচার নিশ্চিত হইবে;
আমরা দৃঢ়ভাবে ঘোষণা করিতেছি যে, আমরা যাহাতে স্বাধীন সত্তায় সমৃদ্ধি লাভ করিতে পারি এবং মানবজাতির প্রগতিশীল আশা-আকাঙ্খার সহিত সঙ্গতি রক্ষা করিয়া আন্তর্জাতিক শান্তি ও সহযোগিতার ক্ষেত্রে পূর্ণ ভূমিকা পালন করিতে পারি, সেইজন্য বাংলাদেশের জনগণের অভিপ্রায়ের অভিব্যক্তিস্বরূপ এই সংবিধানের প্রাধান্য অক্ষুণ্ন রাখা এবং ইহার রক্ষণ, সমর্থন ও নিরাপত্তাবিধান আমাদের পবিত্র কর্তব্য;
এতদ্বারা আমাদের এই গণপরিষদে, অদ্য তের শত ঊনআশী বঙ্গাব্দের কার্তিক মাসের আঠারোো তারিখ, মোতাবেক ঊনিশ শত বাহাত্তর খ্রীষ্টাব্দের নভেম্বর মাসের চার তারিখে, আমরা এই সংবিধান রচনা ও বিধিবদ্ধ করিয়া সমবেতভাবে গ্রহণ করিলাম।
(প্রথম ভাগ)
প্রজাতন্ত্র
১৷ প্রজাতন্ত্র
২৷ প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রীয় সীমানা
২ক৷ রাষ্ট্রধর্ম
৩৷ রাষ্ট্রভাষা
৪৷ জাতীয় সঙ্গীত, পতাকা ও প্রতীক
৪ক। জাতির পিতার প্রতিকৃতি
৫৷ রাজধানী
৬৷ নাগরিকত্ব
৭৷ সংবিধানের প্রাধান্য
৭ক। সংবিধান বাতিল, স্থগিতকরণ, ইত্যাদি অপরাধ
৭খ। সংবিধানের মৌলিক বিধানাবলী সংশোধন অযোগ্য
(দ্বিতীয় ভাগ)
রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি
৮৷ মূলনীতিসমূহ
৯। জাতীয়তাবাদ
১০। সমাজতন্ত্র ও শোষণমুক্তি
১১৷ গণতন্ত্র ও মানবাধিকার
১২। ধর্ম নিরপেক্ষতা ও ধর্মীয় স্বাধীনতা
১৩৷ মালিকানার নীতি
১৪৷ কৃষক ও শ্রমিকের মুক্তি
১৫৷ মৌলিক প্রয়োজনের ব্যবস্থা
১৬৷ গ্রামীণ উন্নয়ন ও কৃষি বিপ্লব
১৭৷ অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক শিক্ষা
১৮৷ জনস্বাস্থ্য ও নৈতিকতা
১৮ক। পরিবেশ ও জীব-বৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও উন্নয়ন
১৯৷ সুযোগের সমতা
২০৷ অধিকার ও কর্তব্যরূপে কর্ম
২১৷ নাগরিক ও সরকারী কর্মচারীদের কর্তব্য
২২৷ নির্বাহী বিভাগ হইতে বিচার বিভাগের পৃথকীকরণ
২৩৷ জাতীয় সংস্কৃতি
২৩ক। উপজাতি, ক্ষুদ্র জাতিসত্তা, নৃ-গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের সংস্কৃতি
২৪৷ জাতীয় স্মৃতিনিদর্শন, প্রভৃতি
২৫৷ আন্তর্জাতিক শান্তি, নিরাপত্তা ও সংহতির উন্নয়ন
(তৃতীয় ভাগ)
মৌলিক অধিকার
২৬। মৌলিক অধিকারের সহিত অসমঞ্জস আইন বাতিল
২৭। আইনের দৃষ্টিতে সমতা
২৮। ধর্ম, প্রভৃতি কারণে বৈষম্য
২৯। সরকারী নিয়োগ-লাভে সুযোগের সমতা
৩০। বিদেশী, খেতাব, প্রভৃতি গ্রহণ নিষিদ্ধকরণ
৩১। আইনের আশ্রয়-লাভের অধিকার
৩২। জীবন ও ব্যক্তি-স্বাধীনতার অধিকাররক্ষণ
৩৩। গ্রেপ্তার ও আটক সম্পর্কে রক্ষাকবচ
৩৪। জবরদস্তি-শ্রম নিষিদ্ধকরণ
৩৫। বিচার ও দন্ড সম্পর্কে রক্ষণ
৩৬। চলাফেরার স্বাধীনতা
৩৭। সমাবেশের স্বাধীনতা
৩৮। সংগঠনের স্বাধীনতা
৩৯। চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা এবং বাক্-স্বাধীনতা
৪০। পেশা বা বৃত্তির স্বাধীনতা
৪১। ধর্মীয় স্বাধীনতা
৪২। সম্পত্তির অধিকার
৪৩। গৃহ ও যোগাযোগের রক্ষণ
৪৪। মৌলিক অধিকার বলবৎকরণ
৪৫। শৃঙ্খলামূলক আইনের ক্ষেত্রে অধিকারের পরিবর্তন
৪৬। দায়মুক্তি-বিধানের ক্ষমতা
৪৭। কতিপয় আইনের হেফাজত
৪৭ক। সংবিধানের কতিপয় বিধানের অপ্রযোজ্যতা
(চতুর্থ ভাগ)
নির্বাহী বিভাগ
১ম পরিচ্ছেদঃ
৪৮। রাষ্ট্রপতি
৪৯। ক্ষমা প্রদর্শনের অধিকার
৫০। রাষ্ট্রপতি-পদের মেয়াদ
৫১। রাষ্ট্রপতির দায়মুক্তি
৫২। রাষ্ট্রপতির অভিশংসন
৫৩। অসামর্থ্যের কারণে রাষ্ট্রপতির অপসারণ
৫৪। অনুপস্থিতি প্রভৃতির-কালে রাষ্ট্রপতি-পদে স্পীকার
২য় পরিচ্ছেদঃ
৫৫। মন্ত্রিসভা
৫৬। মন্ত্রিগণ
৫৭। প্রধানমন্ত্রীর পদের মেয়াদ
৫৮। অন্যান্য মন্ত্রীর পদের মেয়াদ
৫৮ক [বিলুপ্ত]
২ক পরিচ্ছেদ
নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার [সংবিধান (পঞ্চদশ সংশোধন) আইন, ২০১১ (২০১১ সনের ১৪ নং আইন)-এর ২১ ধারাবলে পরিচ্ছেদটি বিলুপ্ত।]
[বিলুপ্ত]
৩য় পরিচ্ছেদঃ
৫৯। স্থানীয় শাসন
৬০। স্থানীয় শাসন সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠানের ক্ষমতা
৪র্থ পরিচ্ছেদঃ
৬১। সর্বাধিনায়কতা
৬২। প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগে ভর্তি প্রভৃতি
৬৩। যুদ্ধ
৫ম পরিচ্ছেদঃ
৬৪। অ্যাটর্ণি-জেনারেল
(পঞ্চম ভাগ)
আইনসভা
১ম পরিচ্ছেদঃ
৬৫। সংসদ-প্রতিষ্ঠা
৬৬। সংসদে নির্বাচিত হইবার যোগ্যতা ও অযোগ্যতা
৬৭। সদস্যদের আসন শূন্য হওয়া
৬৮। সংসদ-সদস্যদের [পারিশ্রমিক] প্রভৃতি
৬৯। শপথ গ্রহণের পূর্বে আসন গ্রহণ বা ভোট দান করিলে সদস্যের অর্থদন্ড
৭০। রাজনৈতিক দল হইতে পদত্যাগ বা দলের বিপক্ষে ভোটদানের কারণে আসন শূন্য হওয়া
৭১। দ্বৈত-সদস্যতায় বাধা
৭২। সংসদের অধিবেশন
৭৩। সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণ ও বাণী
৭৩ক। সংসদ সম্পর্কে মন্ত্রীগণের অধিকার
৭৪। স্পীকার ও ডেপুটি স্পীকার
৭৫। কার্যপ্রণালী-বিধি, কোরাম প্রভৃতি
৭৬। সংসদের স্থায়ী কমিটিসমূহ
৭৭। ন্যায়পাল
৭৮। সংসদ ও সদস্যদের বিশেষ অধিকার ও দায়মুক্তি
৭৯। সংসদ-সচিবালয়
২য় পরিচ্ছেদঃ
৮০। আইন প্রণয়ন পদ্ধতি
৮১। অর্থবিল
৮২। আর্থিক ব্যবস্থাবলীর সুপারিশ
৮৩। সংসদের আইন ব্যতীত করারোপে বাধা
৮৪। সংযুক্ত তহবিল ও প্রজাতন্ত্রের সরকারী হিসাব
৮৫। সরকারী অর্থের নিয়ন্ত্রণ
৮৬। প্রজাতন্ত্রের সরকারী হিসাবে প্রদেয় অর্থ
৮৭। বার্ষিক আর্থিক বিবৃতি
৮৮। সংযুক্ত তহবিলের উপর দায়
৮৯। বার্ষিক আর্থিক বিবৃতি সম্পর্কিত পদ্ধতি
৯০। নির্দিষ্টকরণ আইন
৯১। সম্পূরক ও অতিরিক্ত মঞ্জুরী
৯২। হিসাব, ঋণ প্রভৃতির উপর ভোট
৯২ক। [বিলুপ্ত]
৩য় পরিচ্ছেদঃ
৯৩। অধ্যাদেশপ্রণয়ন-ক্ষমতা
(ষষ্ঠ ভাগ)
বিচারবিভাগ
১ম পরিচ্ছেদঃ
৯৪। সুপ্রীম কোর্ট প্রতিষ্ঠা
৯৫। বিচারক-নিয়োগ
৯৬। বিচারকের পদের মেয়াদ
৯৭। অস্থায়ী প্রধান বিচারপতি নিয়োগ
৯৮। সুপ্রীম কোর্টের অতিরিক্ত বিচারকগণ
৯৯। অবসর গ্রহণের পর বিচারগণের অক্ষমতা
১০০। সুপ্রীম কোর্টের আসন
১০১। হাইকোর্ট বিভাগের এখতিয়ার
১০২। কতিপয় আদেশ ও নির্দেশ প্রভৃতি দানের ক্ষেত্রে হাইকোর্ট বিভাগের ক্ষমতা
১০৩। আপীল বিভাগের এখতিয়ার
১০৪। আপীল বিভাগের পরোয়ানা জারী ও নির্বাহ
১০৫। আপীল বিভাগ কর্তৃক রায় বা আদেশ পুনর্বিবেচনা
১০৬। সুপ্রীম কোর্টের উপদেষ্টামূলক এখতিয়ার
১০৭। সুপ্রীম কোর্টের বিধি-প্রণয়ন-ক্ষমতা
১০৮। "কোর্ট অব রেকর্ড" রূপে সুপ্রীম কোর্ট
১০৯। আদালতসমূহের উপর তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণ
১১০। অধস্তন আদালত হইতে হাইকোর্ট বিভাগে মামলা স্থানান্তর
১১১। সুপ্রীম কোর্টের রায়ের বাধ্যতামূলক কার্যকরতা
১১২। সুপ্রীম কোর্টের সহায়তা
১১৩। সুপ্রীম কোর্টের কর্মচারীগণ
২য় পরিচ্ছেদঃ
১১৪। অধস্তন আদালত-সমূহ প্রতিষ্ঠা
১১৫। অধস্তন আদালতে নিয়োগ
১১৬। অধস্তন আদালতসমূহের নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলা
১১৬ক। বিচারবিভাগীয় কর্মচারীগণ বিচারকার্য পালনের ক্ষেত্রে স্বাধীন
৩য় পরিচ্ছেদঃ
১১৭। প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালসমূহ
ষষ্ঠ ক ভাগ-জাতীয়দল
[সংবিধান (পঞ্চদশ সংশোধন) আইন, ২০১১ (২০১১ সনের ১৪ নং আইন)-এর ৪১ ধারাবলে বিলুপ্ত।]
[বিলুপ্ত]
(সপ্তম ভাগ)
নির্বাচন
১১৮। নির্বাচন কমিশন প্রতিষ্ঠা
১১৯। নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব
১২০। নির্বাচন কমিশনের কর্মচারীগণ
১২১। প্রতি এলাকার জন্য একটিমাত্র ভোটার তালিকা
১২২। ভোটার-তালিকায় নামভুক্তির যোগ্যতা
১২৩। নির্বাচন-অনুষ্ঠানের সময়
১২৪। নির্বাচন সম্পর্কে সংসদের বিধান প্রণয়নের ক্ষমতা
১২৫। নির্বাচনী আইন ও নির্বাচনের বৈধতা
১২৬। নির্বাচন কমিশনকে নির্বাহী কর্তৃপক্ষের সহায়তাদান
(অষ্টম ভাগ)
মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক
১২৭। মহা হিসাব-নিরীক্ষক পদের প্রতিষ্ঠা
১২৮। মহা-হিসাব নিরীক্ষকের দায়িত্ব
১২৯। মহা হিসাব-নিরীক্ষকের কর্মের মেয়াদ
১৩০। অস্থায়ী মহা হিসাব-নিরীক্ষক
১৩১। প্রজাতন্ত্রের হিসাব-রক্ষার আকার ও পদ্ধতি
১৩২। সংসদে মহা হিসাব-নিরীক্ষকের রিপোর্ট উপস্থাপন
(নবম ভাগ)
বাংলাদেশের কর্মবিভাগ
১ম পরিচ্ছেদঃ
১৩৩। নিয়োগ ও কর্মের শর্তাবলী
১৩৪। কর্মের মেয়াদ
১৩৫। অসামরিক সরকারী কর্মচারীদের বরখাস্ত প্রভৃতি
১৩৬। কর্মবিভাগ-পুনর্গঠন
২য় পরিচ্ছেদঃ
১৩৭। কমিশন-প্রতিষ্ঠা
১৩৮। সদস্য-নিয়োগ
১৩৯। পদের মেয়াদ
১৪০। কমিশনের দায়িত্ব
১৪১। বার্ষিক রিপোর্ট
৫ নবম-ক ভাগ
জরুরী বিধানাবলী
১৪১ক। জরুরী-অবস্থা ঘোষণা
১৪১খ। জরুরী-অবস্থার সময় সংবিধানের কতিপয় অনুচ্ছেদের বিধান স্থগিতকরণ
১৪১গ। জরুরী-অবস্থার সময় মৌলিক অধিকারসমূহ স্থগিতকরণ
(দশম ভাগ)
সংবিধান-সংশোধন
১৪২। সংবিধানের বিধান সংশোধনের ক্ষমতা
(একাদশ ভাগ)
বিবিধ
১৪৩। প্রজাতন্ত্রের সম্পত্তি
১৪৪। সম্পত্তি ও কারবার প্রভৃতি-প্রসঙ্গে নির্বাহী কর্তৃত্ব
১৪৫। চুক্তি ও দলিল
১৪৫ক। আন্তর্জাতিক চুক্তি
১৪৬। বাংলাদেশের নামে মামলা
১৪৭। কতিপয় পদাধিকারীর পারিশ্রমিক প্রভৃতি
১৪৮। পদের শপথ
১৪৯। প্রচলিত আইনের হেফাজত
১৫০। ক্রান্তিকালীন ও অস্থায়ী বিধানাবলী
১৫১। রহিতকরণ
১৫২। ব্যাখ্যা
১৫৩। প্রবর্তন, উল্লেখ ও নির্ভরযোগ্য পাঠ
প্রশ্নঃ বিশ্বব্যাংকের প্রধান কার্যালয় কোথায় অবস্থিত?
Best One ব্যাখ্যা যোগ করুন।বর্ণনাঃ
বিশ্বব্যাংক (World Bank) একটি আন্তর্জাতিক আর্থিক সহায়তা সংস্থা যা উন্নয়নশীল দেশগুলোর উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের জন্য ঋণ ও অনুদান প্রদান করে। বিশ্বব্যাংকের অনুষ্ঠানিক লক্ষ্য হল বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্য বিমোচন। সারা বিশ্বের ১৮৯টি সদস্য রাষ্ট্র নিয়ে গঠিত একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা। এর প্রধান সদর দপ্তর ওয়াশিংটন, ডি.সি.-তে অবস্থিত।
সংগঠনটির আর্টিকেলস্ অব এগ্রিমেন্ট (১৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯৮৯ সালে এ সংশোধনীটি কার্যকরী হয়) অনুযায়ী বৈদেশিক বিনিয়োগ ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যেকে সহজতর করা এবং পুঁজির বিনিয়োগ নিশ্চিত করা, এ দু'টি উদ্দেশ্য হবে বিশ্বব্যাংকের সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রধান নিয়ামক। দুইটি প্রতিষ্ঠান নিয়ে বিশ্বব্যাংক গঠিত: পুনর্গঠন ও উন্নয়নের জন্য আন্তর্জাতিক ব্যাংক (International Bank for Reconstruction and Development, IBRD) আর আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (International Development Association, IDA)। বিশ্বব্যাংক বিশ্বব্যাংক গ্রুপের মোট চারটি সদস্যের মধ্যে একটি। অন্য তিনটি প্রতিষ্ঠান হল আন্তর্জাতিক ফাইন্যান্স কর্পোরেশন (International Finance Corporation, IFC), মিগা (Multilateral Investment Guarantee Agency, MIGA) ও আইসিএসআইডি (International Centre for Settlement of Investment Disputes, ICSID)।
বিশ্বব্যাংক |
|
বিশ্বব্যাংকের লোগো |
|
প্রতিষ্ঠিত | জুলাই ১৯৪৪ |
---|---|
ধরন | আন্তর্জাতিক সংগঠন |
আইনি অবস্থা | চুক্তিভিত্তিক সংগঠন |
উদ্দেশ্য | আর্থিক লেনদেন |
অবস্থান |
ওয়াশিংটন ডিসি, যুক্তরাষ্ট্র |
সদস্যপদ |
১৮৯টি রাষ্ট্র (IBRD) ১৭৩টি রাষ্ট্র (IDA) |
প্রেসিডেন্ট |
ডেভিড ম্যালপাস (২০১৯ সাল থেকে) |
প্রধান অর্থনীতিবিদ |
পিনেলপি কৌজিনৌ গোল্ডবার্গ (২০১৮ থেকে) |
প্রধান অঙ্গ |
বোর্ড অব ডিরেক্টরস |
প্রধান প্রতিষ্ঠান |
বিশ্বব্যাংক গ্রুপ |
ওয়েবসাইট | worldbank.org |
সুত্রঃ উইকিপিডিয়া
প্রশ্নঃ ইবোলা ভাইরাসে আক্রান্তের লক্ষণ কি ?
Best One ব্যাখ্যা যোগ করুন।বর্ণনাঃ
ইবোলা ভাইরাস ডিজিজ (EVD), ইবোলা হেমোরেজিক ফিভার (EHF), শুধু ইবোলা অথবা এবোলা হল ইবোলা ভাইরাস ঘটিত মনুষ্য রোগ। সাধারণতঃ লক্ষণগুলি ধরা পড়ে ভাইরাস সংক্রমণের দুই থেকে তিন সপ্তাহ পর, যেগুলি হল জ্বর, গলা ব্যথা, পেশীর ব্যথা, এবং মাথা ধরা। সাধারণতঃ এর পর গা গোলানো, বমি, এবং ডাইরিয়া হয়,সাথে লিভার ও কিডনীর কর্মক্ষমতা হ্রাস পেতে থাকে। এই জায়গাতে এসে কিছু মানুষের রক্তপাতজনিত সমস্যা শুরু হয়।
এই ভাইরাসের সংক্রমণ হতে পারে কোন সংক্রামিত পশুর (সাধারণতঃ বানর অথবা ফলাহারী বাদুড় fruit bat)-এর রক্ত বা শরীর রস-এর সংস্পর্শ থেকে। প্রাকৃতিক পরিবেশে হাওয়ার মাধ্যমে সংক্রমণের কোন খবর পাওয়া যায়নি । বিশ্বাস করা হয় যে বাদুড় নিজে আক্রান্ত না হয়ে এই রোগ বহন করে ও ছড়ায়। মানব শরীরে একবার সংক্রমণ ঘটলে মানুষের মধ্যে এই রোগ ছড়িয়ে পড়তে পারে। জীবিত পুরুষের বীর্য-এর মাধ্যমে এই রোগ প্রায় দুই মাস পর্যন্ত পরিবাহিত হতে সক্ষম। রোগণিরূপণ করার জন্য সাধারণতঃ একই প্রকার লক্ষণযুক্ত অন্যান্য রোগ, যেমন, ম্যালেরিয়া, কলেরা এবং অন্যান্য ভাইরাল হেমোরেজিক ফিভারগুলিকে বাদ দিতে হয়। রোগণিরূপণকে নিশ্চিত করতে রক্তের নমুনাগুলির পরীক্ষা ভাইরাল অ্যান্টিবডি, ভাইরাল RNA, অথবা এই ভাইরাসটির জন্যই করতে হবে।
রোগ প্রতিরোধ করার জন্য আক্রান্ত বানর ও শূকরের থেকে মানুষের মধ্যে রোগ ছড়ানো হ্রাস হওয়া দরকার। রোগ ধরা পড়লে এইরকম সংক্রমিত প্রাণীদের চিহ্নিত করে মেরে ফেলে দেহগুলি সঠিকভাবে বিনষ্ট করে ফেলার মাধ্যমে এটা করা যেতে পারে। সঠিকভাবে রান্না হওয়া মাংস এবং মাংস নিয়ে কাজ করার সময় প্রতিরোধী পরিচ্ছদ পরা সহায়ক হতে পারে, একইভাবে যখন রোগগ্রস্ত কেউ কাছাকাছি থাকে তখন প্রতিরোধী পরিচ্ছদ পরা এবং হাত ওয়াশকরা প্রয়োজন। রোগগ্রস্ত ব্যক্তির শরীর রস এবং কোষকলার নমুনা বিশেষ সতর্কতার সাথে নাড়াচাড়া করতে হবে।
এই রোগের কোন নির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই; আক্রান্ত ব্যক্তিদের সাহায্য করতে হয় ওরাল রিহাইড্রেশন থেরাপি (পান করার জন্য সামান্য মিষ্টি ও নোনতা জল) নয়তো ইন্ট্রাভেনাস ফ্লুইডদেওয়া হয়। এই রোগে মৃত্যু হার অত্যন্ত বেশি: প্রায়শ এই ভাইরাস আক্রান্তদের মৃত্যুর হার হয় 50% থেকে 90%-এর মধ্যে। EVD প্রথম চিহ্নিত হয় সুদান ও গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রতে। সাধারণতঃ এই রোগ মহামারী আকারে দেখা দেয় সাব-সাহারান আফ্রিকার ট্রপিক্যাল অঞ্চলে। 1976 থেকে (যখন এটি প্রথম শনাক্ত হয়) 2013 পর্যন্ত, fewer than প্রতিবছর 1,000-এর বেশি লোকের সংক্রমণ ঘটেছে। আজ পর্যন্ত বৃহত্তম মহামারী এখন চলছে 2014 পশ্চিম আফ্রিকা ইবোলা মহামারী, যার প্রকোপে পড়েছে গিনি, সিয়েরা লিওন, লাইবেরিয়া এবং সম্ভবতঃ নাইজেরিয়া। আগস্ট 2014 পর্যন্ত 1600-র বেশি কেস শনাক্ত করা হয়েছে। ভ্যাক্সিন তৈরির চেষ্টা চলছে। তবে এখনও পর্যন্ত কিছু করা যায়নি।
সুত্রঃ উইকিপিডিয়া
প্রশ্নঃ নিচের শব্দগুলোর মধ্যে কোনটি দেশি শব্দ নয়?
Best One ব্যাখ্যা যোগ করুন।বর্ণনাঃ
চাবি শব্দটি দেশি শব্দ নয় । এটি পর্তুগিজ ভাষা থেকে বাংলায় এসেছে।
চাবি-কাঠি /বিশেষ্য পদ/ তালা বন্ধ করিবার বা খুলিবার শলাকাবিশেষ, কুঞ্চিকা, হার্মনিয়মের স্টপার; ঘড়ির দম দিবার যন্ত্র।
নীচের সারণিতে পর্তুগিজ ভাষা থেকে বাংলা ভাষায় আগত শব্দগুলির একটি প্রায়-সম্পূর্ণ তালিকা দেওয়া হল।
উৎস পর্তুগিজ শব্দ | বাংলা শব্দ |
---|---|
Cadeira | কেদারা |
Câmara | কামরা |
Janela | জানালা |
Chave | চাবি |
Gamela | গামলা |
Balde | বালতি |
Botelha | বোতল |
Armário | আলমারি |
Igreja | গির্জা |
Saia | সায়া |
Camisa | কামিজ |
Aia | আয়া |
Alfinete | আলপিন |
Botão | বোতাম |
Pão | পাঁউরুটি |
Couve | কপি (বাঁধাকপি) |
Caju | কাজু |
Cruz | ক্রুশ |
Mármore | মর্মর |
Padre | পাদ্রি |
Pipa | পিপা |
Pires | পিরিচ |
Fita | ফিতা |
Sabão | সাবান |
Santo | সন্ত |
Ceroulas | সালোয়ার |
Toalha | তোয়ালে |
Viúva (?) | বিধবা |
Jesu | যিশু |
Inglez | ইংরেজ |
Christão | খ্রিস্টান |
Tabaco | তামাক |
Zamboa | জাম্বুরা |
Varanda | বারান্দা |
Charuto | চুরুট |
Ananas | আনারস |
Papaia | পেঁপে |
Leilão | নিলাম |
Falto | ফালতু |
Mestre | মিস্ত্রি |
Cartucho | কার্তুজ |
Estirar | ইস্ত্রি |
Pera | পেয়ারা |
Âncora | নোঙর |
Alcatrão | আলকাতরা |
Boia | বয়া |
Boião | বয়াম |
Viola | বেহালা |
Bomba | বোমা |
Grade | গরাদ |
Gudão | গুদাম |
Espada | ইস্পাত |
Coronel | কর্নেল |
Mastro | মাস্তুল |
Prego | পেরেক |
Jogar | জুয়া |
Bruça | বুরুশ |
Recibo | রশিদ |
Tanque | টাংকি |
Bacia | বাসন |
Forma | ফর্মা |
Ata (from old Mexican "ate") |
আতা |
প্রশ্নঃ বিভক্তিহীন নাম পদকে বলা হয়-
Best One ব্যাখ্যা যোগ করুন।বর্ণনাঃ
বিভক্তিহীন নাম পদকে বলা হয়- প্রাতিপাদিক
বিভক্তিহীন নাম-প্রকৃতি বা সাধিত শব্দকে এবং বিভক্তিহীন অথচ প্রত্যয়যুক্ত ধাতু বা ক্রিয়া-প্রকৃতিকে প্রাতিপাদিক বলে। সংক্ষেপে বল্লে, প্রকৃতির সাথে প্রত্যয়ের যোগে যে শব্দ বা ধাতু গঠিত হয় তার নাম প্রাতিপাদিক। 'প্রাতিপাদিক' মানে যা দিয়ে শুরু করা হয়।
বিভক্তহীন ও প্রত্যয়হীন কংবা বিভক্তিহীন অথচ প্রত্যয়যুক্ত নাম-প্রকৃতিকে নাম প্রাতিপাদিক বলে। যেমন- দোকান + দার = দোকানদার + কে = দোকানদারকে
বিভক্তহীন ও প্রত্যয়যুক্ত ধাতু-প্রকৃতিকে ক্রিয়া-প্রাতিপাদিক বলে। যেমন- কর্ + অ = করা + কে = করাকে
বাংলা ভাষার সমস্ত ধাতুকে ২০টি গণে ভাগ করা হয়েছে। যথা:-
ক্রমিক নং | ধাতুগণ | উদাহরণ |
---|---|---|
১ | হ-আদিগণ | হ (হওয়া), ল (লওয়া) ইত্যাদি। |
২ | খা-আদিগণ | খা (খাওয়া), ধা (ধাওয়া), পা (পাওয়া), যা (যাওয়া) ইত্যাদি। |
৩ | দি-আদিগণ | দি (দেওয়া), নি (নেওয়া) ইত্যাদি। |
৪ | শু-আদিগণ | চু (চোঁয়ানো), নু (নোয়ানো), ছু (ছোঁয়া) ইত্যাদি। |
৫ | কর্-আদিগণ | কর্ ( করা), কম্ (কমা), গড় (গড়া), চল (চলা) ইত্যাদি। |
৬ | কহ্-আদিগণ | কহ্ (কহা), সহ্ (সহা), বহ্ (বহা) ইত্যাদি। |
৭ | কাট্-আদিগণ | গাঁথ্, চাল্, আক্, বাঁধ্, কাঁদ্ ইত্যাদি। |
৮ | গাহ্-আদিগণ | চাহ্, বাহ্, নাহ্ (নাহান>স্নান) ইত্যাদি। |
৯ | লিখ্-আদিগণ | কিন্, ঘির্, জিত্, ফির্, ভিড়্, চিন্ ইত্যাদি। |
১০ | উঠ্-আদিগণ | উড়্, শুন্, ফুট্, খুঁজ্, খুল্, ডুব্, তুল্ ইত্যাদি। |
১১ | লাফা-আদিগণ | কাটা, ডাকা, বাজা, আগা (অগ্রসর হওয়া) ইত্যাদি। |
১২ | নাহা-আদিগণ | গাহা ইত্যাদি। |
১৩ | ফিরা-আদিগণ | ছিটা, শিখা, ঝিমা, চিরা ইত্যাদি। |
১৪ | ঘুরা-আদিগণ | উঁচা, লুকা, কুড়া (কুড়াচ্ছে) ইত্যাদি। |
১৫ | ধোয়া-আদিগণ | শোয়া, খোঁচা, খোয়া, গোছা, যোগা ইত্যাদি। |
১৬ | দৌড়া-আদিগণ | পৌঁছা, দৌড়া ইত্যাদি। |
১৭ | চটকা-আদিগণ | সমঝা, ধমকা, কচলা ইত্যাদি। |
১৮ | বিগড়া-আদিগণ | হিচড়া, ছিটকা, সিটকা ইত্যাদি। |
১৯ | উলটা-আদিগণ | দুমড়া, মুচড়া, উপচা ইত্যাদি। |
২০ | ছোবলা-আদিগণ | কোঁচকা, কোঁকড়া, কোদলা ইত্যাদি। |
প্রশ্নঃ 'গুরুচান্ডলী' দোষমুক্ত শব্দ কোনটি?
Best One ব্যাখ্যা যোগ করুন।বর্ণনাঃ
অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া মৃত্যুর পরে হিন্দু ধর্মাবলম্বী কর্তৃক শবদাহ বা মৃতদেহ পোড়ানোর ধর্মীয় সংস্কার। এই শব্দটিকে বিশ্লেষণ করা হলে দাঁড়ায় অন্ত (শেষ) + ইষ্টি (সংস্কার) + ক্রিয়া অর্থাৎ মৃত্যুর পরে মৃতদেহের শেষবারের মতো সংস্কারকার্য। পূর্বে কঠোরভাবে এ সংস্কারের রীতিনীতি থাকলেও বর্তমানে তা অনেকটাই কঠোরতামুক্ত। বর্তমানে শিশু, সন্ন্যাসী, সাপে কাটা অথবা বিশেষ কোনো রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির ক্ষেত্রে জলসমাধি (পানিতে ভাসিয়ে দেওয়া) কিংবা মৃৎসমাধি (মাটিতে কবর) দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। শবদাহ করার কাজে বিশেষ ব্যক্তির ক্ষেত্রে চন্দনকাঠ বা চন্দনগুঁড়া ব্যবহার করা হয়, কিন্তু সাধারণ লোকের ক্ষেত্রে ধরাবাঁধা কোনো নিয়ম নেই।
প্রশ্নঃ কোন বাক্যে 'মাথা' শব্দটি বুদ্ধি অর্থে ব্যাবহৃত হয়েছে?
Best One ব্যাখ্যা যোগ করুন।বর্ণনাঃ
মাথা খাটিয়ে কাজ করবে বাক্যে 'মাথা' শব্দটি বুদ্ধি অর্থে ব্যাবহৃত হয়েছে ।
শব্দই ভাষার সম্পদ। বাংলা ভাষার শব্দ ভান্ডারে অসংখ্য শব্দ রয়েছে। এক একটি শব্দের এক একটি বিশেষ অর্থ আছে।
কিন্তু অনেক সময় দেখা যায় যে কোন একটি শব্দ শুধুমাত্র একটি বিশেষ অর্থে ব্যবহৃত না হয়ে ভিন্ন ভিন্ন বিশেষ বিশেষ অর্থে ব্যবহৃত হয়। শব্দের এরূপ ব্যবহারকে ভিন্নার্থে প্রয়োগ বলা হয়। বাংলা ব্যাকরণে এরূপ কতকগুলো শব্দের ভিন্নার্থক বিশেষ্য, বিশেষণ ও ক্রিয়াপদের প্রয়োগ দেখানো হল।
প্রশ্নঃ 'অর্বাচীন' শব্দের বিপরীত শব্দ কোনোটি?
Best One ব্যাখ্যা যোগ করুন।বর্ণনাঃ
অর্বাচীন /বিশেষণ পদ/ অপক্কবুদ্ধি, নবীন, মূর্খ। /অর্বাচ্+ঈন/।
একটি শব্দের বিপরীত অর্থবাচক শব্দকে বিপরীতার্থক শব্দ বা বিপরীত শব্দ বলে ।
যেমন- আগত – শব্দটির শুরুতে অন- উপসর্গটি যুক্ত হয়ে বিপরীত শব্দ হল- অনাগত ।
যেমন- অনুরাগ- শব্দটি রাগ- শব্দমূলের পূর্বে অনু- উপসর্গ যুক্ত হয়ে গঠিত হয়েছে, যেখানে অনু- উপসর্গটি ইতিবাচক অর্থ প্রকাশ করেছে । এখন অনু-র পরিবর্তে বি- উপসর্গ ব্যবহার করলে, বিরাগ- শব্দে বি-উপসর্গটি নেতিবাচক অর্থ প্রকাশ করে, এবং শব্দটির অর্থ সম্পূর্ণ উল্টে যায় । অর্থাৎ, ইতিবাচক অনু- উপসর্গের বদলে নেতিবাচক বি-উপসর্গের ব্যবহারে বিপরীত শব্দ গঠিত হল ।
যেমন- আজ – কাল, অতীত- ভবিষ্যত, অধম- উত্তম, ইত্যাদি ।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিপরীত শব্দ
অ
অকর্মক |
সকর্মক |
অজ্ঞ |
প্রাজ্ঞ |
অধিত্যকা |
উপত্যকা |
অক্ষম |
সক্ষম |
অতিকায় |
ক্ষুদ্রকায় |
অনন্ত |
সান্ত |
অগ্র |
পশ্চাৎ |
অতিবৃষ্টি |
অনাবৃষ্টি |
অনুকূল |
প্রতিকূল |
অগ্রজ |
অনুজ |
অতীত |
ভবিষ্যত |
অনুগ্রহ |
নিগ্রহ |
অণু |
বৃহৎ |
অদ্য |
কল্য |
অগ্রজ |
অনুজ |
অচল |
সচল |
অধঃ |
ঊর্ধ্ব |
অনুরক্ত |
বিরক্ত |
অচলায়তন |
সচলায়তন |
অধম |
উত্তম |
অনুরাগ |
বিরাগ |
অচেতন |
সচেতন |
অধমর্ণ |
উত্তমর্ণ |
অনুলোম |
প্রতিলোম |
অলীক |
সত্য |
অশন |
অনশন |
অস্তগামী |
উদীয়মান |
অল্পপ্রাণ |
মহাপ্রাণ |
অসীম |
সসীম |
অস্তি |
নাস্তি/নেতি |
অহিংস |
সহিংস |
|
|
|
|
আ
আকর্ষণ |
বিকর্ষণ |
আধার |
আধেয় |
আরোহণ |
অবরোহণ |
আকুঞ্চন |
প্রসারণ |
আপদ |
সম্পদ |
আর্দ্র |
শুষ্ক |
আগত |
অনাগত |
আবশ্যক |
অনাবশ্যক |
আর্য |
অনার্য |
আগমন |
প্রস্থান |
আবশ্যিক |
ঐচ্ছিক |
আলস্য |
শ্রম |
আজ |
কাল |
আবাদি |
অনাবাদি |
আলো |
আঁধার |
আত্ম |
পর |
আবাহন |
বিসর্জন |
আশীর্বাদ |
অভিশাপ |
আত্মীয় |
অনাত্মীয় |
আবির্ভাব |
তিরোভাব |
আসক্ত |
নিরাসক্ত |
আদি |
অন্ত |
আবির্ভূত |
তিরোহিত |
আসামি |
ফরিয়াদী |
আদিম |
অন্তিম |
আবিল |
অনাবিল |
আস্তিক |
নাস্তিক |
আদ্য |
অন্ত্য |
আবৃত |
উন্মুক্ত |
আস্থা |
অনাস্থা |
ই
ইচ্ছুক |
অনিচ্ছুক |
ইদানীন্তন |
তদানীন্তন |
ইহকাল |
পরকাল |
ইতর |
ভদ্র |
ইষ্ট |
অনিষ্ট |
ইহলোক |
পরলোক |
ইতিবাচক |
নেতিবাচক |
|
|
ইহলৌকিক |
পারলৌকিক |
ঈ
ঈদৃশ |
তাদৃশ |
ঈষৎ |
অধিক |
|
|
উ
উক্ত |
অনুক্ত |
উত্তরায়ণ |
দক্ষিণায়ন |
উন্নত |
অবনত |
উগ্র |
সৌম্য |
উত্তাপ |
শৈত্য |
উন্নতি |
অবনতি |
উচ্চ |
নীচ |
উত্তীর্ণ |
অনুত্তীর্ণ |
উন্নীত |
অবনমিত |
উজান |
ভাটি |
উত্থান |
পতন |
উন্নয়ন |
অবনমন |
উঠতি |
পড়তি |
উত্থিত |
পতিত |
উন্মুখ |
বিমুখ |
উঠন্ত |
পড়ন্ত |
উদয় |
অস্ত |
উন্মীলন |
নিমীলন |
উৎকৃষ্ট |
নিকৃষ্ট |
উদ্ধত |
বিনীত/ নম্র |
উপকর্ষ |
অপকর্ষ |
উৎকর্ষ |
অপকর্ষ |
উদ্বৃত্ত |
ঘাটতি |
উপচয় |
অপচয় |
উৎরাই |
চড়াই |
উদ্যত |
বিরত |
উপকারী |
অপকারী |
উত্তম |
অধম |
উদ্যম |
বিরাম |
উপকারিতা |
অপকারিতা |
উত্তমর্ণ |
অধমর্ণ |
উর্বর |
ঊষর |
উপচিকীর্ষা |
অপচিকীর্ষা |
উত্তর |
দক্ষিণ |
উষ্ণ |
শীতল |
|
|
ঊ
ঊর্ধ্ব |
অধঃ |
ঊর্ধ্বগতি |
অধোগতি |
ঊষা |
সন্ধ্যা |
ঊর্ধ্বতন |
অধস্তন |
ঊর্ধ্বগামী |
অধোগামী |
ঊষর |
উর্বর |
ঋ
ঋজু |
বক্র |
|
|
|
|
এ
একান্ন |
পৃথগান্ন |
একাল |
সেকাল |
একূল |
ওকূল |
|
|
এখন |
তখন |
|
|
ঐ
ঐকমত্য |
মতভেদ |
ঐশ্বর্য |
দারিদ্র্য |
ঐহিক |
পারত্রিক |
ঐক্য |
অনৈক্য |
|
|
|
|
ও
ওস্তাদ |
সাকরেদ |
|
|
|
|
ঔ
ঔদার্য |
কার্পণ্য |
ঔচিত্য |
অনৌচিত্য |
ঔজ্জ্বল্য |
ম্লানিমা |
ঔদ্ধত্য |
বিনয় |
|
|
|
|
ক
কচি |
ঝুনা |
কুৎসিত |
সুন্দর |
কৃশাঙ্গী |
স্থূলাঙ্গী |
কদাচার |
সদাচার |
কুফল |
সুফল |
কৃষ্ণ |
শুভ্র/গৌর |
কনিষ্ঠ |
জ্যেষ্ঠ |
কুবুদ্ধি |
সুবুদ্ধি |
কৃষ্ণাঙ্গ |
শ্বেতাঙ্গ |
কপট |
সরল/অকপট |
কুমেরু |
সুমেরু |
কোমল |
কঠিন |
কপটতা |
সরলতা |
কুরুচি |
সুরুচি |
ক্রন্দন |
হাস্য |
কর্মঠ |
অকর্মণ্য |
কুলীন |
অন্ত্যজ |
ক্রোধ |
প্রীতি |
কল্পনা |
বাস্তব |
কুশাসন |
সুশাসন |
ক্ষণস্থায়ী |
দীর্ঘস্থায়ী |
কাপুরুষ |
বীরপুরুষ |
কুশিক্ষা |
সুশিক্ষা |
ক্ষীপ্র |
মন্থর |
কুঞ্চন |
প্রসারণ |
কৃতজ্ঞ |
অকৃতজ্ঞ/ কৃতঘ্ন |
ক্ষীয়মান |
বর্ধমান |
কুটিল |
সরল |
কৃপণ |
বদান্য |
|
|
কুৎসা |
প্রশংসা |
কৃশ |
স্থূল |
|
|
খ
খ্যাত |
অখ্যাত |
খুচরা |
পাইকারি |
খেদ |
হর্ষ |
খ্যাতি |
অখ্যাতি |
|
|
|
|
গ
গঞ্জনা |
প্রশংসা |
গূঢ় |
ব্যক্ত |
গৌণ |
মুখ্য |
গতি |
স্থিতি |
গুপ্ত |
প্রকাশিত |
গৌরব |
অগৌরব |
গদ্য |
পদ্য |
গৃহী |
সন্ন্যাসী |
গ্রামীণ |
নাগরিক |
গণ্য |
নগণ্য |
গ্রহণ |
বর্জন |
গ্রাম্য |
শহুরে |
গরল |
অমৃত |
গৃহীত |
বর্জিত |
গ্রাহ্য |
অগ্রাহ্য |
গরিমা |
লঘিমা |
গেঁয়ো |
শহুরে |
|
|
গরিষ্ঠ |
লঘিষ্ঠ |
গোপন |
প্রকাশ |
|
|
ঘ
ঘাটতি |
বাড়তি |
ঘাত |
প্রতিঘাত |
ঘৃণা |
শ্রদ্ধা |
চ
চক্ষুষ্মান |
অন্ধ |
চল |
অচল |
চিরায়ত |
সাময়িক |
চঞ্চল |
স্থির |
চলিত |
অচলিত/সাধু |
চ্যূত |
অচ্যূত |
চড়াই |
উৎরাই |
চিন্তনীয় |
অচিন্ত্য/অচিন্তনীয় |
|
|
চতুর |
নির্বোধ |
চুনোপুটি |
রুই-কাতলা |
|
|
ছ
ছটফটে |
শান্ত |
|
|
|
|
জ
জঙ্গম |
স্থাবর |
জল |
স্থল |
জোড় |
বিজোড় |
জড় |
চেতন |
জলে |
স্থলে |
জোয়ার |
ভাটা |
জটিল |
সরল |
জলচর |
স্থলচর |
জ্যোৎস্না |
অমাবস্যা |
জনাকীর্ণ |
জনবিরল |
জাতীয় |
বিজাতীয় |
জ্ঞাত |
অজ্ঞাত |
জন্ম |
মৃত্যু |
জাল |
আসল |
জ্ঞানী |
মূর্খ |
জমা |
খরচ |
জিন্দা |
মুর্দা |
জ্ঞেয় |
অজ্ঞেয় |
জরিমানা |
বকশিশ |
জীবন |
মরণ |
জ্যেষ্ঠা |
কনিষ্ঠা |
জাগ্রত |
ঘুমন্ত/সুপ্ত |
জীবিত |
মৃত |
|
|
জাগরণ |
ঘুম/সুপ্ত |
জৈব |
অজৈব |
|
|
ঠ
ঠুনকো |
মজবুত |
|
|
|
|
ড
ডুবন্ত |
ভাসন্ত |
|
|
|
|
ত
তদীয় |
মদীয় |
তারুণ্য |
বার্ধক্য |
তীক্ষ্ণ |
স্থূল |
তন্ময় |
মন্ময় |
তিমির |
আলোক |
তীব্র |
মৃদু |
তস্কর |
সাধু |
তিরস্কার |
পুরস্কার |
তুষ্ট |
রুষ্ট |
তাপ |
শৈত্য |
তীর্যক |
ঋজু |
ত্বরিত |
শ্লথ |
দ
দক্ষিণ |
বাম |
দুর্জন |
সুজন |
দৃঢ় |
শিথিল |
দণ্ড |
পুরস্কার |
দুর্দিন |
সুদিন |
দৃশ্য |
অদৃশ্য |
দাতা |
গ্রহীতা |
দুর্নাম |
সুনাম |
দেনা |
পাওনা |
দিবস |
রজনী |
দুর্বুদ্ধি |
সুবুদ্ধি |
দেশী |
বিদেশী |
দিবা |
নিশি/রাত্রি |
দুর্ভাগ্য |
সৌভাগ্য |
দোষ |
গুণ |
দিবাকর |
নিশাকর |
দুর্মতি |
সুমতি |
দোষী |
নির্দোষ |
দীর্ঘ |
হ্রস্ব |
দুর্লভ |
সুলভ |
দোস্ত |
দুশমন |
দীর্ঘায়ু |
স্বল্পায়ু |
দুষ্কৃতি |
সুকৃতি |
দ্বিধা |
নির্দ্বিধা/ দ্বিধাহীন |
দুঃশীল |
সুশীল |
দুষ্ট |
শিষ্ট |
দ্বৈত |
অদ্বৈত |
দুরন্ত |
শান্ত |
দূর |
নিকট |
দ্যুলোক |
ভূলোক |
দুর্গম |
সুগম |
দ্রুত |
মন্থর |
|
|
ধ
ধনাত্মক |
ঋণাত্মক |
ধারালো |
ভোঁতা |
ধূর্ত |
বোকা |
ধনী |
নির্ধন/দরিদ্র |
ধামির্ক |
অধার্মিক |
ধৃত |
মুক্ত |
ধবল |
শ্যামল |
|
|
|
|
ন
নতুন |
পুরাতন |
নিন্দা |
জাগরণ |
নির্মল |
মলিন |
নবীন |
নিন্দিত |
নিয়োগ |
বরখাস্ত |
নির্লজ্জ |
সলজ্জ |
নবীন |
প্রবীণ |
নিরক্ষর |
সাক্ষর |
নিশ্চয়তা |
অনিশ্চয়তা |
নর |
নারী |
নিরবলম্ব |
স্বাবলম্ব |
নীরস |
সরস |
নশ্বর |
অবিনশ্বর |
নিরস্ত্র |
সশস্ত্র |
নিশ্চেষ্ট |
সচেষ্ট |
নাবালক |
সাবালক |
নিরাকার |
সাকার |
নৈঃশব্দ্য |
সশব্দ |
নিঃশ্বাস |
প্রশ্বাস |
নির্দয় |
সদয় |
নৈতিকতা |
অনৈতিকতা |
নিকৃষ্ট |
উৎকৃষ্ট |
নির্দিষ্ট |
অনির্দিষ্ট |
নৈসর্গিক |
কৃত্তিম |
নিত্য |
অনিত্য |
নির্দেশক |
অনির্দেশক |
ন্যায় |
অন্যায় |
|
|
|
|
ন্যূন |
অধিক |
প
পক্ষ |
বিপক্ষ |
পূণ্যবান |
পূণ্যহীন |
প্রফুল্ল |
ম্লান |
পটু |
অপটু |
পুরস্কার |
তিরস্কার |
প্রবীণ |
নবীন |
পণ্ডিত |
মূর্খ |
পুষ্ট |
ক্ষীণ |
প্রবেশ |
প্রস্থান |
পতন |
উত্থান |
পূর্ণিমা |
অমাবস্যা |
প্রভু |
ভৃত্য |
পথ |
বিপথ |
পূর্ব |
পশ্চিম |
প্রশ্বাস |
নিঃশ্বাস |
পবিত্র |
অপবিত্র |
পূর্ববর্তী |
পরবর্তী |
প্রসন্ন |
বিষণ্ণ |
পরকীয় |
স্বকীয় |
পূর্বসূরী |
উত্তরসূরী |
প্রসারণ |
সংকোচন/আকুঞ্চন |
পরার্থ |
স্বার্থ |
পূর্বাহ্ণ |
অপরাহ্ণ |
প্রাচ্য |
প্রতীচ্য |
পরিকল্পিত |
অপরিকল্পিত |
প্রকাশিত |
অপ্রকাশিত |
প্রাচীন |
অর্বাচীন |
পরিশোধিত |
অপরিশোধিত |
প্রকাশ |
গোপন |
প্রতিকূল |
অনুকূল |
পরিশ্রমী |
অলস |
প্রকাশ্যে |
নেপথ্যে |
প্রায়শ |
কদাচিৎ |
পাপ |
পূণ্য |
প্রজ্জ্বলন |
নির্বাপণ |
প্রারম্ভ |
শেষ |
পাপী |
নিষ্পাপ |
প্রত্যক্ষ |
পরোক্ষ |
প্রীতিকর |
অপ্রীতিকর |
পার্থিব |
অপার্থিব |
প্রধান |
অপ্রধান |
|
|
ফ
ফলন্ত/ফলনশীল |
নিস্ফলা |
ফলবান |
নিস্ফল |
ফাঁপা |
নিরেট |
ব
বক্তা |
শ্রোতা |
বাধ্য |
অবাধ্য |
বিফল |
সফল |
বন্দনা |
গঞ্জনা |
বামপন্থী |
ডানপন্থী |
বিফলতা |
সফলতা |
বন্দী |
মুক্ত |
বাস্তব |
কল্পনা |
বিবাদ |
সুবাদ |
বদ্ধ |
মুক্ত |
বাল্য |
বার্ধক্য |
বিয়োগান্ত |
মিলনান্ত |
বন্ধন |
মুক্তি |
বাহুল্য |
স্বল্পতা |
বিয়োগান্তক |
মিলনান্তক |
বন্ধুর |
মসৃণ |
বাহ্য |
আভ্যন্তর |
বিরহ |
মিলন |
বন্য |
পোষা |
বিজেতা |
বিজিত |
বিলম্বিত |
দ্রুত |
বয়োজ্যেষ্ঠ |
বয়োকনিষ্ঠ |
বিদ্বান |
মূর্খ |
বিষাদ |
আনন্দ/ হর্ষ |
বরখাস্ত |
বহাল |
বিধর্মী |
স্বধর্মী |
বিস্তৃত |
সংক্ষিপ্ত |
বর্ধমান |
ক্ষীয়মান |
বিনয় |
ঔদ্ধত্য |
ব্যক্ত |
গুপ্ত |
বর্ধিষ্ণু |
ক্ষয়িষ্ণু |
বিনীত |
উদ্ধত |
ব্যর্থ |
সার্থক |
বহির্ভূত |
অন্তর্ভূক্ত |
বিপন্ন |
নিরাপদ |
ব্যর্থতা |
সার্থকতা |
বাদি |
বিবাদি |
বিপন্নতা |
নিরাপত্তা |
ব্যষ্টি |
সমষ্টি |
ভ
ভক্তি |
অভক্তি |
ভাটা |
জোয়ার |
ভূত |
ভবিষ্যত |
ভদ্র |
ইতর |
ভাসা |
ডোবা |
ভূমিকা |
উপসংহার |
ভীরু |
নির্ভীক |
ভোগ |
ত্যাগ |
ভেদ |
অভেদ |
ম
মঙ্গল |
অমঙ্গল |
মহাত্মা |
দুরাত্মা |
মুক্ত |
বন্দী |
মঞ্জুর |
নামঞ্জুর |
মানানসই |
বেমানান |
মুখ্য |
গৌণ |
মতৈক্য |
মতানৈক্য |
মান্য |
অমান্য |
মূর্খ |
জ্ঞানী |
মসৃণ |
খসখসে |
মিতব্যয়ী |
অমিতব্যয়ী |
মূর্ত |
বিমূর্ত |
মহৎ |
নীচ |
মিথ্যা |
সত্য |
মৌখিক |
লিখিত |
মহাজন |
খাতক |
মিলন |
বিরহ |
মৌলিক |
যৌগিক |
য
যত্ন |
অযত্ন |
যুদ্ধ |
শান্তি |
যৌথ |
একক |
যশ |
অপযশ |
যোগ |
বিয়োগ |
যৌবন |
বার্ধক্য |
যুক্ত |
বিযুক্ত |
যোগ্য |
অযোগ্য |
|
|
যুগল |
একক |
যোজন |
বিয়োজন |
|
|
র
রক্ষক |
ভক্ষক |
রাজি |
নারাজ |
রোদ |
বৃষ্টি |
রমণীয় |
কুৎসিত |
রুগ্ন |
সুস্থ |
রোগী |
নিরোগ |
রসিক |
বেরসিক |
রুদ্ধ |
মুক্ত |
|
|
রাজা |
প্রজা |
রুষ্ট |
তুষ্ট |
|
|
ল
লঘিষ্ঠ |
গরিষ্ঠ |
লাজুক |
নির্লজ্জ |
লেন |
দেন |
লঘু |
গুরু |
লেজ |
মাথা |
লেনা |
দেনা |
লব |
হর |
লৌকিক |
অলৌকিক |
|
|
শ
শঠ |
সাধু |
শিষ্ট |
অশিষ্ট |
শুষ্ক |
সিক্ত |
শঠতা |
সাধুতা |
শিষ্য |
গুরু |
শূণ্য |
পূর্ণ |
শায়িত |
উত্থিত |
শীত |
গ্রীষ্ম |
শোভন |
অশোভন |
শয়ন |
উত্থান |
শীতল |
উষ্ণ |
শ্বাস |
প্রশ্বাস |
শারীরিক |
মানসিক |
শুক্লপক্ষ |
কৃষ্ণপক্ষ |
শ্রী |
বিশ্রী |
শালীন |
অশালীন |
শুচি |
অশুচি |
শ্লীল |
অশ্লীল |
শাসক |
শাসিত |
শুদ্ধ |
অশুদ্ধ |
|
|
শিক্ষক |
ছাত্র |
শুভ্র |
কৃষ্ণ |
|
|
স
সংকীর্ণ |
প্রশস্ত |
সদৃশ |
বিসদৃশ |
সাহসিকতা |
ভীরুতা |
সংকোচন |
প্রসারণ |
সধবা |
বিধবা |
সিক্ত |
শুষ্ক |
সংকুচিত |
প্রসারিত |
সন্ধি |
বিগ্রহ |
সুকৃতি |
দুষ্কৃতি |
সংক্ষিপ্ত |
বিস্তৃত |
সন্নিধান |
ব্যবধান |
সুগম |
দুর্গম |
সংক্ষেপ |
বিস্তার |
সফল |
বিফল |
সুন্দর |
কুৎসিত |
সংক্ষেপিত |
বিস্তারিত |
সবল |
দুর্বল |
সুদর্শন |
কুদর্শন |
সংগত |
অসংগত |
সবাক |
নির্বাক |
সুধা |
জাগ্রত |
সংযত |
অসংযত |
সমতল |
অসমতল |
সুপ্ত |
জাগ্রত |
সংযুক্ত |
বিযুক্ত |
সমষ্টি |
ব্যষ্টি |
সুয়ো |
দুয়ো |
সংযোগ |
বিয়োগ |
সমাপিকা |
অসমাপিকা |
সুশীল |
দুঃশীল |
সংযোজন |
বিয়োজন |
সমাপ্ত |
আরম্ভ |
সুশ্রী |
কুশ্রী |
সংশ্লিষ্ট |
বিশ্লিষ্ট |
সম্পদ |
বিপদ |
সুষম |
অসম |
সংশ্লেষণ |
বিশ্লেষণ |
সম্প্রসারণ |
সংকোচন |
সুসহ |
দুঃসহ |
সংহত |
বিভক্ত |
সম্মুখ |
পশ্চাত |
সুস্থ |
দুস্থ |
সংহতি |
বিভক্তি |
সরব |
নিরব |
সূক্ষ্ম |
স্থূল |
সকর্মক |
অকর্মক |
সরল |
কুটিল/জটিল |
সৃষ্টি |
ধ্বংস |
সকাল |
বিকাল |
সশস্ত্র |
নিরস্ত্র |
সৌখিন |
পেশাদার |
সক্রিয় |
নিষ্ক্রিয় |
সস্তা |
আক্রা |
সৌভাগ্যবান |
দুর্ভাগ্যবান/ভাগ্যহত |
সক্ষম |
অক্ষম |
সসীম |
অসীম |
স্তুতি |
নিন্দা |
সচল |
নিশ্চল |
সহযোগ |
অসহযোগ |
স্তাবক |
নিন্দুক |
সচেতন |
অচেতন |
সহিষ্ণু |
অসহিষ্ণু |
স্থাবর |
জঙ্গম |
সচেষ্ট |
নিশ্চেষ্ট |
সাঁঝ |
সকাল |
স্থলভাগ |
জলভাগ |
সচ্চরিত্র |
দুশ্চরিত্র |
সাকার |
নিরাকার |
স্নিগ্ধ |
রুক্ষ |
সজাগ |
নিদ্রিত |
সাক্ষর |
নিরক্ষর |
স্বনামী |
বেনামী |
সজ্জন |
দুর্জন |
সাদৃশ্য |
বৈসাদৃশ্য |
স্বর্গ |
নরক |
সজ্ঞান |
অজ্ঞান |
সাফল্য |
ব্যর্থতা |
স্বাতন্ত্র্য |
সাধারণত্ব |
সঞ্চয় |
অপচয় |
সাবালক |
নাবালক |
স্বাধীন |
পরাধীন |
সতী |
অসতী |
সাবালিকা |
নাবালিকা |
স্বার্থপর |
পরার্থপর |
সত্বর |
ধীর |
সাম্য |
বৈষম্য |
স্মৃতি |
বিস্মৃতি |
সদয় |
নির্দয় |
সার |
অসার |
স্থির |
অস্থির |
সদর |
অন্দর |
সার্থক |
নিরর্থক |
|
|
সদাচার |
কদাচার |
সাহসী |
ভীরু |
|
|
হ
হরণ |
পূরণ |
হাল |
সাবেক |
হৃদ্যতা |
শত্রুতা |
হর্ষ |
বিষাদ |
হালকা |
ভারি |
হ্রস্ব |
দীর্ঘ |
হাজির |
গরহাজির |
হিত |
অহিত |
হ্রাস |
বৃদ্ধি |
হার |
জিত |
হিসেবি |
বেহিসেবি |
|
|
প্রশ্নঃ নিচের কোন শব্দটি ' চিকুর' শব্দের সমার্থক নয়?
Best One ব্যাখ্যা যোগ করুন।বর্ণনাঃ
কর শব্দটি ' চিকুর' শব্দের সমার্থক নয়।
চিকুর এর সমার্থক শব্দ- চুল, কুন্তল, কেশ, অলক ।
সমার্থক বলতে সমান অর্থকে বুঝায়। অর্থাৎ সমার্থক শব্দ বা প্রতিশব্দ হলো অনুরূপ বা সম অর্থবোধক শব্দ। যে শব্দ অন্য কোন শব্দের একই অর্থ কিংবা প্রায় সমান অর্থ প্রকাশ করে, তাকে সমার্থক শব্দ বলা হয়। সমার্থক শব্দের একটিকে অন্যটির প্রতিশব্দ বলা হয়। ইংরেজিতে যাকে বলা হয় Synonym.
উদাহরণ:
অশ্রু: চোখের জল, নেত্রবারি, ধারাপাত, বর্ষণ।
অপচয়: অপব্যয়, বৃথাব্যয়, ক্ষতি, ক্ষয়, হ্রাস।
অগ্নি: আগুন, বহ্নি, পাবক, হুতাশন, অনল, দহন, শিখা, সর্বভুক, কৃশানু, বৈশ্বানর।
মনের ভাব যথাযথভাবে প্রকাশ করতে হলে আমাদের অবশই সমার্থক শব্দ ব্যবহার করতে হবে। তাই সমার্থক বা প্রতিশব্দের ব্যবহারের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা রয়েছে:
প্রশ্নঃ 'যে জমিতে ফসাল জন্মায় না' এক কথায়-
Best One ব্যাখ্যা যোগ করুন।বর্ণনাঃ
যে নারীর কোনাে সন্তান হয় না - বন্ধ্যা
যাতে (যে জমিতে) শস্যের ফলন ভালো হয় না - অনুর্বর
৯ম-১০ম শ্রেণির বাংলা ব্যাকরণ ও সৌমিত্র শেখর এর বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা থেকে প্রাপ্ত কমন এক কথায় প্রকাশ:
বর্ধিত রূপ | এক কথায় প্রকাশ |
অকালে পক্ক হয়েছে যা | অকালপক্ব। |
অনুতে (পশ্চাতে) জন্মেছে যে | অনুজ |
অভিজ্ঞতার অভাব আছে যার | অনভিজ্ঞ। |
অহংকার নেই যার | নিরহংকার। |
আচারে নিষ্ঠা আছে যার | আচারনিষ্ঠ। |
আদি থেকে অন্ত পর্যন্ত | আদ্যন্ত, আদ্যোপান্ত । |
আপনাকে কেন্দ্র করে চিন্তা | আত্মকেন্দ্রিক |
ইতিহাস বিষয়ে অভিজ্ঞ যিনি | ইতিহাসবেত্তা। |
ইতিহাস রচনা করেন যিনি | ঐতিহাসিক। |
ইন্দ্রিয়কে জয় করেন যিনি | জিতেন্দ্রিয়। |
ঈষৎ আমিষ (আঁষ) গন্ধ যার | আঁষটে। |
উপকারীর অপকার করে যে | কৃতঘ্ন। |
উপকারীর উপকার স্বীকার করে না যে | অকৃতজ্ঞ |
উপকারীর উপকার স্বীকার করে যে | কৃতজ্ঞ। |
এক থেকে শুরু করে ক্রমাগত | একাদিক্রমে। |
কর্ম সম্পাদনে পরিশ্রমী | কর্মঠ। |
কোনাে ভাবেই যা নিবারণ করা যায় না | অনিবার্য। |
চক্ষুর সম্মুখে সংঘটিত | চাক্ষুষ |
জীবিত থেকেও যে মৃত | জীবন্মৃত |
তল স্পর্শ করা যায় না যার | অতলস্পর্শী। |
পা থেকে মাথা পর্যন্ত | আপাদমস্তক। |
ফল পাকলে যে গাছ মরে যায় | ওষধি। |
যা অতি দীর্ঘ নয় | নাতিদীর্ঘ। |
যা কষ্টে জয় করা যায় | দুর্জয়। |
যা কষ্টে লাভ করা যায় | দুর্লভ। |
যা কোথাও উঁচু কোথাও নিচু | বন্ধুর। |
যা ক্রমশ বর্ধিত হচ্ছে | বর্ধিষ্ণু। |
যা খুব শীতল বা উষ্ণ নয় | নাতিশীতােষ্ণ। |
যা দীপ্তি পাচ্ছে | দেদীপ্যমান। |
যা পূর্বে ছিল এখন নেই | ভূতপূর্ব। |
যা পূর্বে দেখা যায় নি | অদৃষ্টপূর্ব |
যা পূর্বে শােনা যায় নি | অশ্রুতপূর্ব |
যা বলা হয় নি | অনুক্ত |
যা বলার যােগ্য নয় | অকথ্য |
যার অন্য উপায় নেই | অনন্যোপায়। |
যার উপস্থিত বুদ্ধি আছে | প্রত্যুৎপন্নমতি |
যার বংশ পরিচয় এবং স্বভাব কেউই জানে না | অজ্ঞাতকুলশীল |
যার সর্বস্ব হারিয়ে গেছে | সর্বহারা, হৃতসর্বস্ব। |
যিনি বক্তৃতা দানে পটু | বাগ্মী।। |
যে ক্রমাগত রােদন করছে | রােরুদ্যমান। |
যে নারী বীর সন্তান প্রসব করে | বীরপ্রসূ |
যে নারীর সন্তান বাঁচে না | মৃতবৎসা। |
যে বন হিংস্র জন্তুতে পরিপূর্ণ | শ্বাপদসংকুল |
যে বিষয়ে কোনাে বিতর্ক (বা বিসংবাদ) নেই | অবিসংবাদিত। |
যে রব শুনে এসেছে | রবাহুত |
যে রােগ নির্ণয় করতে হাতড়িয়ে ক্লান্ত | হাতুড়ে |
লাভ করার ইচ্ছা | লিপ্সা। |
সকলের জন্য প্রযােজ্য | সর্বজনীন। |
হনন করার ইচ্ছা | জিঘাংসা |
বর্ধিত রূপ | এক কথায় প্রকাশ |
অক্ষির সমক্ষে বর্তমান | প্রত্যক্ষ। |
অনেকের মধ্যে একজন | অন্যতম। |
আকাশে বেড়ায় যে | আকাশচারী, খেচর। |
আপনাকে যে পণ্ডিত মনে করে | পণ্ডিতম্মন্য। |
আল্লাহর অস্তিত্বে বিশ্বাস আছে যার | আস্তিক। |
আল্লাহর অস্তিত্বে বিশ্বাস নেই যার | নাস্তিক। |
একই মাতার উদরে জাত যে | সহােদর। |
দিনে যে একবার আহার করে | একাহারী। |
নদী মেখলা যে দেশের | নদীমেখলা। |
নষ্ট হওয়াই স্বভাব যার | নশ্বর। |
নৌকা দ্বারা জীবিকা নির্বাহ করে যে | নাবিক। |
বিদেশে থাকে যে | প্রবাসী।। |
বিশ্বজনের হিতকর | বিশ্বজনীন। |
মৃতের মতাে অবস্থা যার | মুমূর্ষ। |
যা অধ্যয়ন করা হয়েছে | অধীত। |
যা আঘাত পায়নি | অনাহত। |
যা উদিত হচ্ছে | উদীয়মান। |
যা কখনাে নষ্ট হয় না | অবিনশ্বর। |
যা চিন্তা করা যায় না | অচিন্তনীয়, অচিন্ত্য। |
যা জলে ও স্থলে চরে | উভচর। |
যা জলে চরে | জলচর। |
যা থলে চরে | থলচর। |
যা দমন করা কষ্টকর | দুর্দমনীয়। |
যা দমন করা যায় না | অদম্য। |
যা নিবারণ করা কষ্টকর | দুর্নিবার। |
যা বার বার দুলছে | দোদুল্যমান। |
যা বিনা যত্নে লাভ করা গিয়েছে | অযত্বলন্ধ। |
যা মর্ম স্পর্শ করে | মর্মস্পর্শী। |
যা সম্পন্ন করতে বহু ব্যয় হয় | ব্যয়বহুল। |
যা সাধারণের মধ্যে দেখা যায় না এমন | অনন্যসাধারণ। |
যার আকার কুৎসিত | কদাকার। |
যার কোনাে উপায় নেই | নিরুপায়। |
যার কোনাে কিছু থেকেই ভয় নেই | অকুতােভয়। |
যার প্রকৃত বর্ণ ধরা যায় না | বর্ণচোরা। |
যার বিশেষ খ্যাতি আছে | বিখ্যাত। |
যে গাছ অন্য গাছকে আশ্রয় করে বাঁচে | পরগাছা। |
যে গাছ কোনাে কাজে লাগে না | আগাছা। |
যে গাছে ফল ধরে, কিন্তু ফুল ধরে না | বনস্পতি। |
যে নারী জীবনে একমাত্র সন্তান প্রসব করেছে | কাককন্ধ্যা। |
যে নারী নিজে বর বরণ করে নেয় | স্বয়ংবরা। |
যে নারীর কোনাে সন্তান হয় না | বন্ধ্যা। |
যে পুরুষ বিয়ে করেছে | কৃতদার। |
যে পুরুষের চেহারা দেখতে সুন্দর | সুদর্শন। |
যে বাতু থেকে উৎখাত হয়েছে | উদ্বাস্তু। |
যে ভবিষ্যৎ না ভেবেই কাজ করে | অবিমৃষ্যকারী। |
যে ভবিষ্যতের চিন্তা করে না বা দেখে না | অপরিণামদর্শী। |
যে মেয়ের বিয়ে হয়নি | অনুঢ়া। |
যে শুনেই মনে রাখতে পারে | শ্রুতিধর। |
যে সকল অত্যাচারই সয়ে যায় | সর্বংসহা। |
শুভ ক্ষণে জন্ম যার | ক্ষণজন্মা। |
সম্মুখে অগ্রসর হয়ে অভ্যর্থনা | প্রত্যুদৃগমন। |
(যে পুরুষ) পত্নী সহ বর্তমান | সপত্নীক |
(যে পুরুষ) স্ত্রীর বশীভূত | স্ত্রৈণ |
অকর্মণ্য গবাদি পশু রাখার স্থান | পিজরাপোল |
অকালে উৎপন্ন কুমড়া | অকালকুষ্মাণ্ড |
অক্ষি পত্রের (চোখের পাতা) লােম | অক্ষিপক্ষ্ম |
অক্ষিতে কাম যার (যে নারীর) | কামাক্ষী |
অক্ষির অগােচরে | পরোক্ষ |
অক্ষির অভিমুখে | প্রত্যক্ষ |
অক্ষির সমীপে | সমক্ষ |
অগ্রহায়ণ মাসে সন্ধ্যাকালীন ব্রত (কুমারীদের) | সেঁজুতি |
অজ (ছাগল)কে গ্রাস করে যা | অজগর |
অতিশয় ঘটা বা জাকজমক | বড়ম্বর |
অধর-প্রান্তের হাসি | বক্রোষ্ঠিকামর |
অনশনে মৃত্যু | প্রায় |
অনুকরণ করার ইচ্ছা | অনুচিকীর্ষা |
অনুসন্ধান করার ইচ্ছা | অনুসন্ধিৎসা |
অন্তরে জল আছে এমন যে (নদী) | অন্তঃসলিলা |
অন্তরে যা ঈক্ষণ (দেখার) যােগ্য | অন্তরিক্ষ |
অন্ন-ব্যঞ্জন ছাড়া অন্য আহার্য | জলপান |
অন্য গতি নাই যার | অগত্যা |
অন্যের অপেক্ষা করতে হয় না যাকে | অনপেক্ষ |
অন্যের মনােরঞ্জনের জন্য অসত্য ভাষণ | উপচার |
অপকার করার ইচ্ছা | অপচিকীর্ষা |
অবজ্ঞায় নাক উঁচু করেন যিনি | উন্নাসিক। |
অভ্র (মেঘ) লেহন / স্পর্শ করে যা | অভ্রংলিহ |
অরিকে দমন করে যে | অরিন্দম। |
অলঙ্কারের ধ্বনি | শিঞ্জন। |
অশ্বের ডাক | হ্রেষা। |
আকাশ ও পৃথিবী বা স্বর্গ ও মর্ত্য | ক্রন্দসী |
আকাশ ও পৃথিবীর অন্তরাল | রোদসী |
আকাশে (খ-তে) ওড়ে যে বাজি | খ-ধূপ |
আকাশে (খ-তে) চরে যে | খেচর / খচর |
আনন্দজনক ধ্বনি | নন্দিঘোষ |
আভিজাত্যপূর্ণ মনে হলেও আসলে অর্থহীন ও বিভ্রান্তিকর | হিংটিংছট |
আয়ুর পক্ষে হিতকর | আয়ুষ্য |
আশীর্বাদ ও অভয়দানসূচক হাতের মুদ্রা | বরাভয়। |
আশ্বিনমাসের পূর্ণিমা তিথি | কোজাগর |
ইতস্তত গমনশীল বা সঞ্চরণশীল | বিসর্পী। |
ইন্দ্রকে জয় করেন যিনি | ইন্দ্রজিৎ। |
ইন্দ্রজাল (জাদু) বিদ্যায় পারদর্শী | ঐন্দ্রজালিক |
ইন্দ্রের অশ্ব | উচ্চৈঃশ্রবা। |
ঈষৎ উষ্ণ | কবোষ্ণ |
উচচানে অবস্থিত ক্ষদ্র কটির | টঙ্গি |
উদক (জল) পানের ইচ্ছা | উদন্যা |
উপদেশ ছাড়া লব্ধ প্রথম জ্ঞান | উপজ্ঞা |
উরস (বক্ষ) দিয়ে হাঁটে যে | উরগ (সর্প) |
ঋণ শােধের জন্য যে ঋণ করা হয় | ঋণার্ণ |
ঋতুতে ঋতুতে যজ্ঞ করেন যিনি | ঋত্বিক |
এক বস্তুতে অন্য বস্তুর কল্পনা | অধ্যাস। |
একশত পঞ্চাশ বছর | সার্ধশতবর্ষ |
ঐতিহাসিককালেরও আগের | প্রাগৈতিহাসিক |
কথার মধ্যে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রসঙ্গ বা প্রবচনাদি প্রয়ােগ | বুনি |
করার ইচ্ছা | চিকীর্ষা। |
কাচের তৈরি বাড়ি | শিশমহল। |
কাজে যার অভিজ্ঞতা আছে | করিতকর্মা |
কি করতে হবে তা বুঝতে না পারা | কিংকর্তব্যবিমূঢ় |
কুকুরের ডাক | বুক্কন |
কুমারীর পুত্র | কানীনময় |
কোকিলের ডাক | কুহু |
কোনাে কিছু থেকেই যার ভয় নেই | অকুতোভয় |
ক্ষমা করার ইচ্ছা | চিক্ষমিষা |
ক্ষমার যােগ্য | ক্ষমার্হ। |
ক্ষুদ্র অঙ্গ | উপাঙ্গ |
ক্ষুদ্র কূপ | পাতকুয়া। |
ক্ষুদ্র গাছ | গাছড়া। |
ক্ষুদ্র গ্রাম | পল্লিগ্রাম |
ক্ষুদ্র চিহ্ন | বিন্দু। |
ক্ষুদ্র জাতীয় বক | বলাক। |
ক্ষুদ্র ঢাক বা ঢাক জাতীয় বাদ্যযন্ত্র | নাকাড়া |
ক্ষুদ্র তিীয় বকের শ্রেণি | বলাকা |
ক্ষুদ্র নদী | সারণি |
ক্ষুদ্র নাটক | নাটিকা। |
ক্ষুদ্র নালা | নালি। |
ক্ষুদ্র প্রলয় | খণ্ডপ্রলয় |
ক্ষুদ্র প্রস্তরখণ্ড | নুড়ি |
ক্ষুদ্র ফেঁড়া | ফুসকুড়ি |
ক্ষুদ্র বা নিচু কাঠের আসন | পিড়ি |
ক্ষুদ্র বাগান | বাগিচা |
ক্ষুদ্র বিন্দু | ফুটকি |
ক্ষুদ্র মৃৎপাত্র | ভঁড় |
ক্ষুদ্র রথ | রথার্ভক |
ক্ষুদ্র রাজা | রাজড়া |
ক্ষুদ্র লতা | লতিকারুকার |
ক্ষুদ্র লেবু | পাতিলেবু |
ক্ষুদ্র শিয়াল | খেকশিয়াল |
ক্ষুদ্র হাঁস | পাতিহাঁস |
ক্ষুদ্রকায় ঘােড়া | টাটু |
গদ্যপদ্যময় কাব্য | চম্পু |
গমন করার ইচ্ছা | জিগমিষা |
গম্ভীর ধ্বনি | মন্দ্র। |
গরুর খুরে চিহ্নিত স্থান | গোষ্পদ |
গুরু বাসগৃহ | গুরুকুল। |
ঘরের অভাব | হা-ঘর |
চতুরঙ্গ অষ্টপ্রহর (সারা দিন) ব্যবহার্য যা | আটপৌরে |
চার অভ্রান্ত জ্ঞান | প্রমা। |
চৈত্র মাসে উৎপন্ন ফসল | চৈতালি |
চোখের কোণ | অপাঙ্গ |
জয় করার ইচ্ছা | জিগীষা |
জয়ের জন্য যে উৎসব | জয়ন্তী |
জলপানের জন্য দেয় অর্থ | জলপানি (বৃত্তি) |
জলে ও স্থলে চরে যে | উভচর। |
জানবার ইচ্ছা | জিজ্ঞাসা |
জ্বল জ্বল করছে যা | জাজ্বল্যমান। |
জ্বলছে যে অর্চি (শিখা) | জ্বলদর্চি |
ঠেঙিয়ে ডাকাতি করে যারা | ঠ্যাঙারে। |
তুরিত গমন করতে পারে যে | তুরগ (ঘোড়া) |
তৃণাচ্ছাদিত ভূমি | শাল। |
ত্রাণ লাভ করার ইচ্ছা | তিতীর্ষা |
দমন করা কষ্টকর যাকে | দুর্দমনীয় |
দমন করা যায় না যাকে | অদম্য |
দান করার ইচ্ছা | দিৎসা |
দিনের অপর ভাগ | অপরাহু |
দিনের পূর্ব ভাগ | পূর্বাহ |
দিনের মধ্য ভাগ | মধ্যাহ্ন |
দিনের সায় (অবসান) ভাগ | সায়াহ্ন |
দুয়ের মধ্যে একটি | অন্যতর |
দেখবার ইচ্ছা | দিদৃক্ষা |
দেখে চোখের আশা মেটে না যাকে | অতৃপ্তদৃশ্য |
দ্বারে থাকে যে | দৌবারিক। |
ধনুকের ধ্বনি | টঙ্কার |
ধন্যবাদের যােগ্য | ধন্যবাদাহ |
ধর্মপুরুষ বা সন্ন্যাসীর পর্যটন | পরিব্রাজন |
ধর্মীয় কাজ করার জন্য তীর্থভ্রমণ | প্রব্রজ্যা |
ধুর (তীক্ষ্ণ বুদ্ধি) ধারণ করে যে | ধুরন্ধর |
নষ্ট হওয়া স্বভাব যার | নশ্বর। |
নারীর কটিভূষণ | রশনা। |
নারীর কোমরবেষ্টনিভূষণ | মেখলা |
নারীর লীলাময়ী নৃত্য | লাস্য |
নিতান্ত দগ্ধ হয় যে সময়ে (গ্রীষ্মকাল) | নিদাঘ |
নিন্দা করার ইচ্ছা | জুগুপ্সা |
নির্মাণ করার ইচ্ছা | নির্মিসা |
নীল বর্ণ পদ্ম | ইন্দির। |
নূপুরের ধ্বনি | নিকৃণ |
ন্যায় শাস্ত্র জানেন যিনি | নৈয়ায়িক |
পঁচিশ বছর পূর্ণ হওয়ার উৎসব | রজত জয়ন্তী |
পঙক্তিতে বসার অনুপযুক্ত | অপাঙতেয় |
পঞ্চাশ বছর পূর্ণ হওয়ার উৎসব | সুবর্ণ জয়ন্তী |
পত্নী বর্তমান থাকা সত্ত্বেও পুনর্বিবাহ | অধিবেদন |
পত্নীর সাথে বর্তমান | সপত্নীক |
পদ্মের উঁটা বা নাল | মৃণাল। |
পদ্মের ঝাড় বা মৃণালসমূহ | মৃণালিনী |
পদ্মের ন্যায় অক্ষি বা চোখ | পুণ্ডরীকাক্ষ |
পরকে (কোকিল শাবক) পালন করে যে | পরভৃৎ (কাক) |
পরের (কাকের) দ্বারা প্রতিপালিত যে | পরভৃত (কোকিল) |
পা দিয়ে যে চলে না | পন্নগ (সর্প)। |
পা ধােয়ার জল | পাদ্য |
পান করার ইচ্ছা | পিপাসা |
পিতৃগৃহবাসিনী | চিরন্টী |
পুণ্যকর্ম সম্পাদনের জন্য শুভ দিন | পুণ্যাহ। |
পুরুষের উদ্দাম নৃত্য | তাণ্ডব |
পুরুষের কটিবন্ধ | সরাসন |
পুরুষের কর্ণভূষণ | বীরবৌলি |
পূর্ব ও পরের অবস্থা | পৌর্বাপর্যয় |
পেঁচা বা উলুকের ডাক | হ্যাকার |
পৌষ মাসে উৎপন্ন ফসল | পৌষালি |
প্রতিকার করার ইচ্ছা | প্রতিচিকীর্ষা |
প্রতিবিধান করার ইচ্ছা | প্রতিবিধিৎসা |
প্রবেশ করার ইচ্ছা | বিবক্ষা |
প্রশংসার যােগ্য | প্রশংসাৰ্য |
প্রাণ ওষ্ঠাগত হবার মতাে অবস্থা | লবেজান |
প্রায় প্রভাত হয়েছে এমন | প্রভাতকল্পা |
প্রিয় কাজ করার ইচ্ছা | প্রিয়চিকীর্ষা। |
ফুল হতে জাত | ফুলেল |
ফেলে দেবার যােগ্য | ফেনায়ক |
বড় ভাই থাকতে ছােট ভাইয়ের বিয়ে | পরিবেদন। |
বন্দুক বা তির ছোড়ার অনুশীলনের জন্য স্থাপিত এ লক্ষ্য | চাঁদমারি |
বহু গৃহ থেকে ভিক্ষা সংগ্রহ করা | মাধুকরী/মধুকরী |
বাঘের চর্ম | কৃত্তি |
বাতাসে (ক-তে) চরে যে | কপােত |
বাদ্যযন্ত্রের ধ্বনি | ঝংকার |
বাস করার ইচ্ছা | বিবৎসা |
বিজয় লাভের ইচ্ছা | বিজিগীষা |
বিশেষ খ্যাতি আছে যার | বিখ্যাত |
বিহায়সে (আকাশ) বিচরণ করে যে | বিহগ/বিহঙ্গ |
বীরের গর্জন | হুঙ্কার |
বেঁচে থাকার ইচ্ছা | জিজীবিষা। |
ভােজন করার ইচ্ছা | বুভুক্ষা |
ভুজের সাহায্যে (এঁকে বেঁকে) চলে যে | ভুজগ/ভুজঙ্গ(স) |
ভুলহীন ঋষি বাক্য | আপ্তবাক্য |
ভ্রমরের শব্দ | গুঞ্জন। |
ময়ূরের ডাক | কেকা |
মশত বর্ণ পদ | পৰীক |
মাছিও প্রবেশ করে না যেখানে | নির্মক্ষিক |
মাটিতে গড়াগড়ি দিচ্ছে এমন | উপবৃত্ত |
মাণের যােগ্য | ঘেয়। |
মান্যব্যক্তি বিদায়কালে কিছুদূর এগিয়ে দেওয়া | অনুব্রজন |
মান্যব্যক্তিকে অভ্যর্থনার জন্য কিছুদূর এগিয়ে যাওয়া | প্রত্যুৎগমন |
মায়া (ছল) জানে না যে | অমায়িক |
মাসের শেষ দিন | সংক্রান্তি। |
মােরগের ডাক | শকুনিবাদ |
মিলনের ইচ্ছায় নায়ক বা নায়িকার সঙ্কেত স্থানে গমন | অভিসার |
মুক্তি পেতে ইচ্ছা | মুমুক্ষা |
মৃত্তিকার দ্বারা নির্মিত | মৃন্ময় |
যা অতিক্রম করা যায় না | অনতিক্রম্য |
যা অনুভব করা হচ্ছে | অনুভূয়মান |
যা অপনয়ন (দূর) করা কষ্টকর | দূরপনেয় |
যা অপনয়ন (দূর) করা যায় না | অনপনেয় |
যা অস্ত যাচ্ছে | অস্তায়মান |
যা আগুনে পােড়ে না | অগ্নিসহ। |
যা আঘাত পায় নি | অনাহত |
যা আহুত (ডাকা) হয় নি | অনাহুত |
যা উচ্চারণ করা কঠিন | দুরুচ্চার্য। |
যা উচ্চারণ করা যায় না | অনুচ্চার্য। |
যা উপলব্ধি করা যাচ্ছে | উপলভ্যমান |
যা ক্রমশ ক্ষয়প্রাপ্ত হচ্ছে | ক্ষীয়মাণ। |
যা ক্রমশ দূরে সরে যাচ্ছে | অপসৃয়মাণ |
যা ক্রমশ বিস্তীর্ণ হচ্ছে | ক্রমবিস্তাৰ্যমান |
যা ক্রয় করার যােগ্য | ক্রেয় |
যা চিবিয়ে খাবার যােগ্য | চর্ব |
যা চুষে খাবার যােগ্য | চোষ্য। |
যা চেটে খাবার যােগ্য | লেহ্য। |
যা জল দেয় | জলদ (মেঘ) |
যা ধারণ বা পােষণ করে | ধর্ম। |
যা নিজের দ্বারা অর্জিত | স্বােপার্জিত |
যা পান করার যােগ্য | পেয়। |
যা পুনঃ পুনঃ দীপ্তি পাচ্ছে | দেদীপ্যমান |
যা পুনঃ পুনঃ দুলছে | দোদুল্যমান |
যা পূর্বে কখনাে হয় নি | অভূতপূর্ব |
যা পূর্বে চিন্তা করা যায় নি | অচিন্তিতপূর্ব |
যা প্রকাশ করা হয় নি | অব্যক্ত |
যা প্রতিরােধ করা যায় না | অপ্রতিরােধ্য। |
যা প্রমাণ করা যায় না | অপ্রমেয় |
যা বচন / বাক্যে প্রকাশযােগ্য নয় | অনির্বচনীয় |
যা বলা হচ্ছে | বক্ষ্যমাণ |
যা বহন করা হচ্ছে | নীয়মান |
যা বিক্রয় করার যােগ্য | বিক্রেয় |
যা মাটি ভেদ করে ওঠে | উদ্ভিদ। |
যা মুছে ফেলা যায় না | দুর্মোচ্য |
যা শল্য-ব্যথা দূরীকৃত করে | বিশল্যকরণী |
যা সহজে জানা যায় না | দুয়ে । |
যার অর্থ নেই | অর্থহীন |
যার ঈহা (চেষ্টা) নেই | নিরীহ |
যার কোনাে তিথি নেই | অতিথি |
যার চারদিকে স্থল | হ্রদ |
যার দাড়ি গোঁফ উঠে নি | অজাতশত্রু |
যার দুই দিক বা চার দিকে জল | দ্বীপ |
যার দুটি মাত্র দাঁত | দ্বিরদ (হাতি) |
যার দুবার জন্ম হয় | দ্বিজ |
যার দুহাত সমান চলে | সব্যসাচী |
যার পুত্র নেই | অপুত্রক |
যার পূর্বজন্মের কথা স্মরণ আছে | জাতিস্মর |
যার বরাহের (শূকর) মতাে খুর | বরাখুরে |
যার বেশবাস সংবৃত নয় | অসংবৃত |
যার শুভ ক্ষণে জন্ম | ক্ষণজন্মা |
যিনি অতিশয় হিসাবি | পাটোয়ারি |
যুদ্ধ থেকে যে বীর পালায় না | সংশপ্তক |
যুদ্ধে স্থির থাকেন যিনি | যুধিষ্ঠির |
যে (পুরুষ) দ্বার পরিগ্রহ করে নি | অকৃতদার |
যে (পুরুষ) দ্বার পরিগ্রহ করেছে | কৃতদার |
যে (পুরুষ) প্রথম স্ত্রী জীবিত থাকতে দ্বিতীয় দার পরিগ্রহ করেছে | অধিবেত্তা |
যে অগ্র-পশ্চাৎ চিন্তা না-করে কাজ করে | অবিমৃশ্যকারী |
যে অন্য দিকে মন দেয় না | অনন্যমনা |
যে অপরের লেখা চুরি করে নিজনামে চালায় | কুম্ভীলক |
যে আকৃষ্ট হচ্ছে | কৃষ্যমাণ |
যে আপনাকে কৃতার্থ মনে করে | কৃতার্থম্মন্য |
যে আপনাকে পণ্ডিত মনে করে | পণ্ডিতম্মন্য |
যে আপনাকে হত্যা করে | আত্মঘাতী |
যে আলােতে কুমুদ ফোটে | কৌমুদী |
যে গমন করে না | নগ পাহাড়) |
যে গাঁজায় নেশা করে | গেঁজেল |
যে গাভি প্রসবও করে না, দুধও দেয় না | গােবশা। |
যে গৃহের বাইরে রাত্রিযাপন করতে ভালােবাসে | বারমুখাে । |
যে জমিতে দুবার ফসল হয় | দো-ফসলি |
যে জমিতে ফসল জন্মায় না | ঊষর |
যে তির নিক্ষেপে পটু | তিরন্দাজ |
যে দিন তিন তিথির মিলন ঘটে | ত্র্যহস্পর্শ |
যে নারী (বা গাভী) দুগ্ধবতী | পয়স্বিনী |
যে নারী অঘটন ঘটাতে পারদর্শী | অঘটনঘটনপটিয়সী |
যে নারী অতি উজ্জ্বল ও ফর্সা | মহাশ্বেতা |
যে নারী অপরের দ্বারা প্রতিপালিতা | পরভৃতা বা পরভৃতিকা |
যে নারী আনন্দ দান করে | বিনােদিনী |
যে নারী একবার সন্তান প্রসব করেছে | কাকবন্ধ্যা |
যে নারী কহলপ্রিয় | খাপ্তানী |
যে নারী চিত্রে অর্পিতা বা নিবদ্ধা | চিত্রার্পিতা |
যে নারী দেহ সৌষ্ঠব সম্পন্না | অঙ্গনা |
যে নারী পূর্বে অন্যের স্ত্রী ছিল | অন্যপূর্বা |
যে নারী প্রিয় বাক্য বলে | প্রিয়ংবদা |
যে নারী বার (সমূহ) গামিনী | বারাঙ্গনা। |
যে নারী বীর | বীরাঙ্গনা |
যে নারী শিশুসন্তানসহ বিধবা | বালপুত্রিকা |
যে নারী সাগরে বিচরণ করে | সাগরিকা |
যে নারী সুন্দরী | রামা |
যে নারী সূর্যকে দেখে না (অন্তঃপুরে থাকে) | অসূর্যম্পশ্যা |
যে নারী স্বয়ং পতি বরণ করে | স্বয়ংবরা |
যে নারীর (মেয়ের বিয়ে হয় নি | কুমারী |
যে নারীর অসূয়া (হিংসা) নেই | অনসূয়া |
যে নারীর দুটি মাত্র পুত্র | দ্বিপুত্রিকা। |
যে নারীর নখ শূৰ্পের (কুলা) মত | শূর্পণখা |
যে নারীর পঞ্চ স্বামী | পঞ্চভর্তকা |
যে নারীর বিয়ে হয় না | অনূঢ়া(আইবুড়াে অর্থে) |
যে নারীর বিয়ে হয়েছে | ঊঢ়া |
যে নারীর সতীন/শত্রু নেই | নিঃসপ্ত |
যে নারীর সন্তান হয় না | বন্ধ্যা |
যে নারীর সম্প্রতি বিয়ে হয়েছে | নবােঢ়া। |
যে নারীর সহবাসে মৃত্যু হয় | বিষকন্যকা |
যে নারীর স্বামী (ভর্তা) বিদেশে থাকে | প্রােষিতভর্তৃকা |
যে নারীর স্বামী ও পুত্র জীবিত | বীরা বা পুরন্ধ্রী |
যে নারীর স্বামী ও পুত্র মৃত | অবীরা |
যে নারীর স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করেছে | বা অধিবিন্না |
যে নারীর হাসি কুটিলতাবর্জিত | শুচিস্মিতা |
যে নারীর হাসি সুন্দর | সুস্মিতা |
যে পরের গুণেও দোষ ধরে | অসূয়ক |
যে পুত্রের মাতা কুমারী | কানীন |
যে পুরুষের স্ত্রী বিদেশে থাকে | প্রােষিতপত্নীক বা প্রােষিতভার্য |
যে বিদ্যা লাভ করেছে | কৃতবিদ্য |
যে বৃক্ষের ফল হয় কিন্তু ফুল হয় না | বনস্পতি |
যে মেঘে প্রচুর বৃষ্টি হয় | সংবর্ত |
যে মেয়ের বয়স দশ বৎসর | কন্যকা। |
যে রূপ ইচ্ছা | যদৃচ্ছা |
যে সন্তান পিতার মৃত্যুর পর জন্মে | মরণােত্তরজাতক |
যে সব গাছ থেকে ঔষধ প্রস্তুত হয় | ঔষধি। |
যে সমাজের (বর্ণের) অন্তদেশে জন্মে | অন্ত্যজ |
যে সর্বত্র গমন করে | সর্বগ |
যে সুপথ থেকে কুপথে যায় | উন্মার্গগামী |
যেখানে মৃতজন্তু ফেলা হয় | ভাগাড় / উপশল্য |
যে-শিশু আটমাসে জন্মগ্রহণ করেছে | আটাসে |
রক্ত বর্ণ পদ্ম | কোকনদ |
রমণের ইচ্ছা | রিরংসা |
রাজহাঁস (পক্ষীর) কর্কশ ডাক | ক্রেঙ্কার |
রাত্রিকালীন যুদ্ধ | সৌপ্তিক |
রাত্রির তিনভাগ একত্রে | ত্রিযামা |
রাত্রির প্রথম ভাগ | পূর্বরাত্র |
রাত্রির মধ্যভাগ | মহানিশা |
রাত্রির শেষভাগ | পররাত্র |
রাহ বা রাস্তায় ডাকাতি | রাহাজানি |
রােদে শুকোনাে আম | আমশি |
রেশম দিয়ে নির্মিত | রেশমি |
লবণ কম দেওয়া হয়েছে এমন | আলুনি |
লাফিয়ে চলে যে | প্লবগ (ব্যাঙ/বানর)। |
শত্রুকে জয় করেন যিনি | পরঞ্জয় বা শত্রুজিৎ |
শত্রুকে হত্যা করেন যিনি | শত্রুঘ্ন । |
শােনামাত্র যার মনে থাকে | শ্রুতিধর |
শুকনাে পাতার শব্দ | মর্মর। |
ষাট বছর পূর্ণ হওয়ার উৎসব | হীরক জয়ন্তী |
সকলের জন্য হিতকর বা মঙ্গলজনক | সর্বজনীন |
সদ্য দোহনকৃত উষ্ণ দুধ | ধাররাষ্ণ |
সব কিছু সহ্য করেন যিনি | সর্বংসহা |
সমুদ্র থেকে হিমালয় পর্যন্ত | আসমুদ্রহিমাচল |
সমুদ্রের ঢেউ | ঊর্মি। |
সমুদ্রের ঢেউয়ের শব্দ | কল্লোল |
সরােবরে জন্যে যা | সরােজ |
সর্বত্র গমন করেন যিনি | সর্বগ |
সাপের খােলস | নিমোক বা কধুক |
সিংহের নাদ (ডাক) | হুঙ্কার |
সূর্যের ভ্রমণপথের অংশ বা পরিমাণ | অয়নাংশ |
সূর্যোদয় থেকে পরবর্তী সূর্যোদয় পর্যন্ত | সাবন |
সূর্যোদয়ের অব্যবহিত পূর্ববর্তী দুই দণ্ডকাল | ব্রাহ্মমুহূর্ত |
সৃষ্টি করার ইচ্ছা | সিসৃক্ষা |
সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বে বিশ্বাস নাই যার | নাস্তিক |
সেবা করার ইচ্ছা | শুশ্রুষা |
সৈনিকদলের বিশ্রাম শিবির | স্কন্দাবার |
স্তন্য পান করে যে | স্তন্যপায়ী। |
স্বপ্নে (ঘুমে) শিশুর স্বগত হাসি-কান্না | দেয়ালা |
স্বমত অন্যের উপর চাপিয়ে দেয় যে | স্বৈরাচারী |
স্বাদ গ্রহণ করা হয়েছে এমন | স্বাদিত |
স্বামীর চিতায় পুড়ে মরা | সহমরণ |
স্বার্থের জন্য অন্যায় অর্থ প্রদান (ঘুষ) | উপদা |
স্মরণের যােগ্য | স্মরণাই |
হরিণের চর্ম | অজিন |
হরিণের চর্মের আসন | অজিনাসন |
হরেক রকম বলে যে | হরবােলা |
হস্ত, অশ্ব, রথ, পদাতিকের সমাহার | চতুরঙ্গ |
হাতির ডাক | বৃংহণ বা বৃংহিত |
হাতির পিঠে আরােহী বসার স্থান | হাওদা |
হাতির শাবক (বাচ্চা) | করভ |
হাতের কজি | মণিবন্ধ |
হাতের কজি থেকে আঙুলের ডগা পর্যন্ত | পাণি |
হাতের কনুই থেকে কজি পর্যন্ত অংশ | প্রকোষ্ঠ |
হাতের চতুর্থ আঙুল | অনামিকা। |
হাতের তৃতীয় আঙুল | মধ্যমা। |
হাতের তেলাে বা তালু | করতল। |
হাতের দ্বিতীয় আঙুল | তর্জনী। |
হাতের পঞ্চম আঙুল | কনিষ্ঠা । |
হাতের প্রথম আঙুল (বুড়াে আঙুল) | অঙ্গুষ্ঠ |
হিত ইচ্ছা করে যে | হিতৈষী |
হেমন্তকালে উৎপন্ন ফসল | হৈমন্তিক |
প্রশ্নঃ 'অপমান' শব্দের 'অপ' উপসর্গটি কোন অর্থে ব্যাবহৃত হয়?
Best One ব্যাখ্যা যোগ করুন।বর্ণনাঃ
'অপমান' শব্দের 'অপ' উপসর্গটি বিপরীত অর্থে ব্যাবহৃত হয়।
‘উপসর্গ’ কথাটির মূল অর্থ ‘উপসৃষ্ট’। এর কাজ হলো নতুন শব্দ গঠন করা। উপসর্গের নিজস্ব কোন অর্থ নেই, তবে এগুলো অন্য শব্দের সাথে যুক্ত হয়ে বিশেষ অর্থ প্রকাশ করে থাকে। মনে রাখতে হবে, উপসর্গ সব সময় মূল শব্দ বা ধাতুর পূর্বে যুক্ত হয়।
‘তাপ’ (বিশেষ্য পদ) তৎসম পদ। ‘তাপ’ অর্থ উষ্ণতা বা উত্তাপ। এর পূর্বে ‘প্র’ বা ‘অনু’ যুক্ত হয়ে যথাক্রমে প্রতাপ (প্র+তাপ) যার অর্থ পরাক্রান্ত বা বীরত্ব। অনুতাপ (অনু+ তাপ) যার অর্থ অনুশোচনা বা আফসোস ইত্যাদি নতুন শব্দ গঠিত হয়েছে এবং ‘তাপ’ শব্দের অর্থের পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। আবার ‘প্র’ বা ‘অনু’ এর নিজস্ব কোন অর্থ নেই বা এগুলো স্বাধীনভাবে কোন বাক্যেও ব্যবহৃত হতে পারে না। তাই ভাষাবিদগণ এরূপ অব্যয়সূচক শব্দ বা শব্দাংশের নাম দিয়েছেন 'উপসর্গ'। যেমন- ‘হার’ একটি শব্দ। এর সাথে উপ, আ, প্র, বি উপসর্গ যুক্ত হয়ে যথাক্রমে উপহার, আহার, প্রহার, বিহার শব্দ গঠিত হয়েছে। এভাবে উপসর্গের সাহায্যে নতুন নতুন শব্দ গঠন করে বাংলা ভাষার শব্দ সম্ভার সমৃদ্ধি লাভ করেছে। অতএব, কতকগুলো অব্যয় নামবাচক বা কৃদান্ত শব্দের পূর্বে যুক্ত হয়ে নতুন শব্দ গঠন করে এবং অর্থের পরির্বতন সাধন করে, এগুলোকে উপসর্গ বলে।
ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের মতে, “সংস্কৃতে কতগুলো অব্যয় শব্দ আছে, এগুলো ধাতুর পূর্বে বসে এবং ধাতুর মূল ক্রিয়ার গতি নির্দেশ করে এর অর্থের প্রসারণ, সঙ্কোচন বা অন্য পরিবর্তন আনয়ন করে দেয়। এরূপ অব্যয় শব্দকে উপসর্গ বলে।”
ড. মুহাম্মদ এনামুল হকের মতে, “যেসব অব্যয় শব্দ কৃদান্ত বা নামপদের পূর্বে বসে শব্দগুলোর অর্থের সংকোচন, সম্প্রসারণ বা অন্য কোন পরিবর্তন সাধন করে, ঐ সব অব্যয় শব্দকে বাংলা ভাষায় উপসর্গ বলে।”
অশোক মুখোপাধ্যায়ের মতে, “বাংলা ভাষায় কিছু অব্যয় আছে যারা ধাতু বা শব্দের আগে যুক্ত হয়ে তাদের অর্থ বদল করে দেয়। এদেরই বলা হয় উপসর্গ।”
উপসর্গ সাধারণত তিন প্রকার।
বাংলা উপনর্গ
সংস্কৃত উপসর্গ
বিদেশি উপসর্গ
বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত সংস্কৃত উপসর্গ বিশটি; যথা-
উপসর্গ | যে অর্থে ব্যবহৃত | উদাহরণ | ||
---|---|---|---|---|
১ | প্র | প্রকৃষ্ট/ সম্যক | অর্থে | প্রভাব, প্রচলন, প্রস্ফুটিত |
খ্যাতি | " | প্রসিদ্ধ, প্রতাপ, প্রভাব | ||
আধিক্য | " | প্রগাঢ়, প্রচার, প্রবল, প্রসার | ||
গতি | " | প্রবেশ, প্রস্থান | ||
ধারা-পরম্পরা বা অনুগামিত | " | প্রপৌত্র, প্রশাখা, প্রশিষ্য | ||
২ | পরা | আতিশয্য | " | পরাকাষ্ঠা, পরাক্রান্ত, পরায়ণ |
বিপরীত | " | পরাজয়, পরাভব | ||
৩ | অপ | বিপরীত | " | অপমান, অপকার, অপচয়, অপবাদ |
নিকৃষ্ট | " | অপসংস্কৃতি, অপকর্ম, অপসৃষ্টি, অপযশ, অপব্যয় | ||
স্থানান্তর | " | অপসারণ, অপহরণ, অপনোদন | ||
বিকৃতি | " | অপমৃত্যু | ||
৪ | সম্ | সম্যক রূপে | " | সম্পূর্ণ, সমৃদ্ধ, সমাদর |
সম্মুখে | " | সমাগত, সম্মুখ | ||
৫ | নি | নিষেধ | " | নিবৃত্তি |
নিশ্চয় | " | নিবারণ, নির্ণয় | ||
আতিশয্য | " | নিদাঘ, নিদারুণ, নিগূঢ় | ||
অভাব | " | নিষ্কলুষ, নিষ্কাম | ||
৬ | অব | হীনতা, প্রতিকূল | " | অবজ্ঞা, অবমাননা |
সম্যকভাবে | " | অবরোধ, অবগাহন, অবগত | ||
নিম্নে, অধোমুখিতা | " | অবতরণ, অবরোহণ, অবলম্বন | ||
অল্পতা | " | অবশেষে, অবসান, অবেলা | ||
৭ | অনু | পশ্চাৎ | " | অনুশোচনা, অনুগামী, অনুজ, অনুচর, অনুতাপ, অনুকরণ |
সাদৃশ্য | " | অনুবাদ, অনুরূপ, অনুকার | ||
পৌনঃপুন | " | অনুক্ষণ, অনুদিন, অনুশীলন | ||
সঙ্গে | " | অনুকূল, অনুকম্পা | ||
৮ | নির | অভাব | " | নিরক্ষর, নিরব, নির্জীব, নিরহঙ্কার, নিরাশ্রয়, নির্ধন |
নিশ্চয় | " | নির্ধারণ, নির্ণয়, নির্ভর | ||
বাহির, বহির্মুখিতা | " | নির্গত, নিঃসরণ, নির্বাসন | ||
৯ | দুর | মন্দ | " | দুর্ভাগ্য, দুর্দশা, দুর্নাম |
কষ্টসাধ্য | " | দুর্লভ, দুর্গম, দুরতিক্রম্য, দুর্মূল্য | ||
১০ | বি | বিশেষ রূপে | " | বিধৃত, বিশুদ্ধ, বিজ্ঞান, বিবস্ত্র, বিশুষ্ক |
অভাব | " | বিনিদ্র,বিবর্ণ, বিশৃঙ্খল, বিফল | ||
গতি | " | বিচরণ, বিক্ষেপ | ||
অপ্রকৃতস্থ | " | বিকার, বিপর্যয় | ||
১১ | সু | উত্তম | " | সুকণ্ঠ, সুকৃতি, সুচরিত্র, সুপ্রিয়, সুনীল |
সহজ | " | সুগম, সুসাধ্য, সুলভ | ||
আতিশয্য | " | সুচতুর, সুকঠিন, সুধীর, সুনিপুণ, সুতীক্ষ্ণ | ||
১২ | উৎ | ঊর্ধ্বমুখিতা | " | উদ্যম, উন্নতি, উৎক্ষিপ্ত, উদগ্রীব, উত্তোলন |
আতিশয্য | " | উচ্ছেদ, উত্তপ্ত, উৎফুল্ল, উৎসুক, উৎপীড়ন | ||
প্রস্তুতি | " | উৎপাদন, উচ্চারণ | ||
অপকর্ষ | " | উৎকোচ, উচ্ছৃঙ্খল, উৎকট | ||
১৩ | অধি | আধিপত্য | " | অধিকার, অধিপতি, অধিবাসী |
উপরি | " | অধিরোহণ, অধিষ্ঠান | ||
ব্যাপ্তি | " | অধিকার, অধিবাস, অধিগত | ||
১৪ | পরি | বিশেষ রূপে | " | পরিপক্ব, পরিপূর্ণ, পরিবর্তন |
শেষ | " | পরিশেষ, পরিসীমা | ||
সম্যক রূপে | " | পরিশ্রান্ত, পরীক্ষা, পরিমাণ | ||
চতুর্দিক | " | পরিভ্রমণ, পরিমণ্ডল, পরিক্রমণ | ||
১৫ | প্রতি | সদৃশ | " | প্রতিমূর্তি, প্রতিধ্বনি |
বিরোধ | " | প্রতিবাদ, প্রতিদ্বন্দ্বী | ||
পৌনঃপুন | " | প্রতিদিন, প্রতিমাস | ||
অনুরূপ কাজ | " | প্রতিঘাত, প্রতিদান, প্রত্যুপকার | ||
১৬ | উপ | সামীপ্য অর্থে | " | উপকূল, উপকণ্ঠ |
সদৃশ | " | উপদ্বীপ, উপবন | ||
ক্ষুদ্র | " | উপগ্রহ, উপসাগর, উপনেতা | ||
বিশেষ | " | উপনয়ন (পৈতা), উপভোগ | ||
১৭ | অভি | সম্যক | " | অভিব্যক্তি, অভিজ্ঞ, অভিভূত |
গমন | " | অভিযান, অভিসার | ||
সম্মুখ বা দিক | " | অভিমুখ, অভিবাদন | ||
১৮ | অতি | আতিশয্য | " | অতিকায়, অত্যাচার, অতিশয় |
অতিক্রম | " | অতিমানব, অতিপ্রাকৃত | ||
১৯ | আ | পর্যন্ত | " | আকণ্য, আমরণ, আসমুদ্র |
ঈষৎ | " | আরক্ত, আভাস | ||
বিপরীত | " | আদান, আগমন | ||
২০ | অপি | যদি | " | অপিচ (যদিও) (প্রাচীন বাংলা), অপিনিহিতি |
বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত খাঁটি বাংলা উপসর্গ একুশটি; যথা-
উপসর্গ | অর্থদ্যোতকতা | উদাহরণ | ||
---|---|---|---|---|
১ | অ | নিন্দিত | অর্থে | অকেজো, অচেনা, অপয়া |
অভাব | " | অচিন, অজানা, অথৈ | ||
ক্রমাগত | " | অঝোর, অঝোরে | ||
২ | অঘা | বোকা | " | অঘারাম, অঘাচণ্ডী |
৩ | অজ | নিতান্ত (মন্দ) | " | অজপাড়াগাঁ, অজমূর্খ, অজপুকুর |
৪ | অনা | অভাব | " | অনাবৃষ্টি, অনাদর |
ছাড়া | " | অনাছিষ্টি, অনাচার | ||
অশুভ | " | অনামুখো | ||
৫ | আ | অভাব | " | আকাঁড়া, আধোয়া, আলুনি |
বাজে, নিকৃষ্ট | " | আকাঠা, আগাছা | ||
৬ | আড় | বক্র | " | আড়চোখে, আড়নয়নে |
আধা, প্রায় | " | আড়ক্ষ্যাপা, আড়মোড়া, আড়পাগলা | ||
বিশিষ্ট | " | আড়কোলা (পাথালিকোলা), আড়গড়া (আস্তাবর), আড়কাঠি | ||
৭ | আন | না | " | আনকোরা |
বিক্ষিপ্ত | " | আনচান, আনমনা | ||
৮ | আব | অস্পষ্টতা | " | আবছায়া, আবডাল |
৯ | ইতি | এ বা এর | " | ইতিকর্তব্য, ইতিপূর্বে |
পুরনো | " | ইতিকথা, ইতিহাস | ||
১০ | ঊন (ঊনু, ঊনা) | কম | " | ঊনপাঁজুরে, উনিশ (উন+বিশ), ঊনাভাত |
১১ | কদ্ | নিন্দিত | " | কদবেল, কদর্য, কদাকার |
১২ | কু | কুৎসিত, অপকর্ষ | " | কুঅভ্যাস, কুকথা, কুনজর, কুসঙ্গ |
১৩ | নি | নাই, নেতি | " | নিখুঁত, নিখোঁজ, নিলাজ, নিভাঁজ, নিরেট, নিনাইয়া |
১৪ | পাতি | ক্ষুদ্র | " | পাতিহাঁস, পাতিশিয়াল, পাতিলেবু, পাতকুয়ো |
১৫ | বি | ভিন্নতা, নাই বা নিন্দনীয় | " | বিভূঁই, বিফল, বিপথ |
১৬ | ভর | পূর্ণতা | " | ভরপেট, ভরসাঁঝ, ভরপুর, ভরদুপুর, ভরসন্ধ্যে |
১৭ | রাম | বড় বা উৎকৃষ্ট | " | রামছাগল, রামদা, রামশিঙ্গা, রামবোকা |
১৮ | স | সঙ্গে | " | সরাজ, সরব, সঠিক, সজোর, সপাট |
১৯ | সা | উৎকৃষ্ট | " | সাজিরা, সাজোয়ান |
২০ | সু | উত্তম | " | সুনজর, সুখবর, সুদিন, সুনাম, সুকাজ |
২১ | হা | অভাব | " | হাপিত্যেশ, হাভাতে, হাঘরে |
আ, সু, বি, নি— এই চারটি উপসর্গ সংস্কৃত ভাষায়ও পাওয়া যায়। ব্যবহারের ওপর নির্ভর করে এই চারটি উপসর্গ বাংলা না সংস্কৃত তা নির্ধারণ করা হয়। বাংলা উপসর্গ সর্বদাই বাংলা শব্দের আগে এবং সংস্কৃত উপসর্গ সর্বদাই সংস্কৃত শব্দের আগে বসে।
আরবি, ফারসি, ইংরেজি ও উর্দু- হিন্দি— এইসব ভাষার উপসর্গ বাংলা ভাষায় প্রচলিত রয়েছে। যেমন—
(ক) ফার্সি উপসর্গের উদাহরণ-
উপসর্গ | যে অর্থে প্রযুক্ত | উদাহরণ | |||
---|---|---|---|---|---|
১. | কার্ | کار | কাজ | অর্থে | কারখানা, কারসাজি, কারচুপি, কারবার, কারদানি |
২. | দর্ | در | মধ্যস্থ, অধীন | " | দরপত্তনী, দরপাট্টা, দরদালান, দরখাস্ত |
৩. | না | نا | না | " | নাচার, নারাজ, নামঞ্জুর, নাখোশ, নালায়েক |
৪. | নিম্ | نیم | আধা | " | নিমরাজি, নিমখুন, নিমমোল্লা |
৫. | ফি | فی | প্রতি | " | ফি-রোজ, ফি-হপ্তা, ফি-বছর, ফি-সন, ফি-মাস |
৬. | বদ্ | بد | মন্দ | " | বদমেজাজ, বদরাগী, বদমাশ, বদহজম, বদনাম, বজ্জাত, বদহাল, বদবখ্ত |
৭. | বে | بی | না | " | বেআদব, বেআক্কেল, বেকসুর, বেকায়দা, বেহায়া, বেনজির, বেগতিক, বেতার, বেকার, বেশরম, বেতমিজ |
৮. | বর্ | بر | বাইরে, মধ্যে | " | বরখাস্ত, বরদাস্ত, বরখেলাপ, বরবাদ |
৯. | ব্ | ب | সহিত | " | বমাল, বনাম, বকলম, বহাল |
১০. | কম্ | کم | স্বল্প | " | কমজোর, কমবখ্ত, কমআক্কেল, কমপোখ্ত |
১১. | দস্ত | دست | নিজ | " | দস্তখত |
১২. | সে | سه | তিন | " | সেতার, সেপায়া |
(খ) আরবি উপসর্গের উদাহরণ-
উপসর্গ | যে অর্থে প্রযুক্ত | উদাহরণ | |||
---|---|---|---|---|---|
১. | আম্ | عام | সাধারণ | অর্থে | আমদরবার, আমমোক্তার |
২. | খাস্ | خاص | বিশেষ | " | খাসমহল, খাসখবর, খাসখবর, খাসদরবার, খাসদখল |
৩. | লা | لا | না | " | লাজওয়াব, লাখেরাজ, লাওয়ারিশ, লাপাত্তা |
৪. | গর্ | غير | অভাব | " | গরমিল, গরহাজির, গররাজি |
৫. | বাজে | بعض | বিবিধ অপ্রয়োজনীয় | " | বাজে খরচ, বাজে কথা, বাজে জমা |
৬. | খয়ের | خير | ভালো | " | খয়ের খাঁ (মঙ্গলাকাঙ্ক্ষী; বাগধারায়: তোষামোদকারী) |
(গ) ইংরেজি উপসর্গের উদাহরণ-
উপসর্গ | যে অর্থে প্রযুক্ত | উদাহরণ | |||
---|---|---|---|---|---|
১. | ফুল | Full | পূর্ণ | অর্থে | ফুল-হাতা, ফুল-শার্ট, ফুল-বাবু, ফুল-প্যান্ট, ফুল-মোজা |
২. | হাফ | Half | আধা | " | হাফ-হাতা, হাফ-টিকেট, হাফ-স্কুল, হাফ-প্যান্ট, হাফ-নেতা |
৩. | হেড | Head | প্রধান | " | হেড-মাস্টার, হেড-অফিস, হেড-পণ্ডিত, হেড-মৌলভি |
৪. | সাব | Sub | অধীন | " | সাব-অফিস, সাব-জজ, সাব-ইন্সপেক্টর |
(ঘ) উর্দু - হিন্দি উপসর্গ
উপসর্গ | যে অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে | উদাহরণ | ||
---|---|---|---|---|
হর | حر हर |
প্রত্যেক | অর্থে | হররোজ, হরমাহিনা, হরকিসিম, হরহামেশা, হরেক রকম (বিভিন্ন), হরেক আদমি (প্রত্যেক) |
প্রশ্নঃ 'চর্যাপদ' প্রথম কোথা থেকে প্রকাশিত হয়?
Best One ব্যাখ্যা যোগ করুন।বর্ণনাঃ
'চর্যাপদ' প্রথম বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ থেকে প্রকাশিত হয় ।
চর্যাপদ বাংলা ভাষার প্রাচীনতম পদ সংকলন তথা সাহিত্য নিদর্শন। নব্য ভারতীয় আর্যভাষারও প্রাচীনতর রচনা এটি। খ্রিষ্টীয় অষ্টম থেকে দ্বাদশ শতাব্দীর মধ্যবর্তী সময়ে রচিত এই গীতিপদাবলির রচয়িতারা ছিলেন সহজিয়া বৌদ্ধ সিদ্ধাচার্যগণ। বৌদ্ধ ধর্মের গূঢ় অর্থ সাংকেতিক রূপের আশ্রয়ে ব্যাখ্যার উদ্দেশ্যেই তাঁরা পদগুলো রচনা করেছিলেন। বাংলা সাধন সংগীত শাখাটির সূত্রপাতও হয়েছিলো এই চর্যাপদ থেকেই। সে বিবেচনায় এটি একটি ধর্মগ্রন্থজাতীয় রচনা। একই সঙ্গে সমকালীন বাংলার সামাজিক ও প্রাকৃতিক চিত্রাবলি এই পদগুলোতে উজ্জ্বল। এর সাহিত্যগুণ এখনও চিত্তাকর্ষক। ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দে মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী, নেপালের রাজদরবারের গ্রন্থশালা থেকে চর্যার একটি খণ্ডিত পুঁথি উদ্ধার করেন। পরবর্তীতে আচার্য সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় ভাষাতাত্ত্বিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে চর্যাপদের সঙ্গে বাংলা ভাষার অনস্বীকার্য যোগসূত্র বৈজ্ঞানিক যুক্তিসহ প্রতিষ্ঠিত করেন। চর্যাপদের প্রধান কবিগণ হলেন লুইপাদ, কাহ্নপাদ, ভুসুকুপাদ, শবরপাদ প্রমুখ।
বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগে বাংলা সাহিত্যের উন্নতি এবং প্রসারের উদ্দেশ্যে স্থাপিত একটি প্রতিষ্ঠান। বাংলা ভাষার বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণা, অন্যান্য ভাষায় রচিত গ্রন্থের অনুবাদ, দুর্লভ বাংলা রচনা সংরক্ষণ, গবেষণাগ্রন্থ প্রকাশ প্রভৃতি ক্ষেত্রে এই পরিষদ উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে।
১৮৯৩ সালের ২৩ জুলাই এল. লিউটার্ড ও ক্ষেত্রপাল চক্রবর্তী'র উদ্যোগে বেঙ্গল একাডেমি অব লিটারেচার স্থাপিত হয়। প্রথমদিকে একাডেমির কার্যাবলি, সভা, মুখপত্র শুধুমাত্র ইংরেজি ভাষায় প্রকাশিত হতো। পরে এই ব্যাপারে কোনো কোনো সদস্য আপত্তি প্রকাশ করলে উমেশচন্দ্র বটব্যালের প্রস্তাবানুসারে একাডেমির নাম পরিবর্তন করে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ করা হয়। এর যাত্রা শুরু হয় কলকাতার শোভাবাজারে বিনয়কৃষ্ণ দেব-এর বাসভবনে।
বাংলা সাহিত্যের উন্নতি সাধন ছিল পরিষদের মূল উদ্দেশ্য। কিন্তু প্রথমদিকে এর প্রায় সব কাজই ইংরেজিতে সম্পন্ন হতো। এমনকি সভার মুখপত্র হিসেবে প্রকাশিত মাসিক পত্রিকা দি বেঙ্গল একাডেমি অব লিটারেচার-এর অধিকাংশই লিপিবদ্ধ হতো ইংরেজিতে। এই অসঙ্গতি দূর করার উদ্দেশ্যে উমেশচন্দ্র বটব্যালের প্রস্তাবানুসারে ১৮৯৪ সালের ১৮ ফেব্রয়ারি পরিষদের সভায় মুখপত্রটি দি বেঙ্গল একাডেমি অব লিটারেচার ও বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ - এ উভয় নামেই প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ১৮৯৪ সালের ২৯ এপ্রিলের সভায় পরিষদের নামটি বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ হিসেবে সর্বসম্মতক্রমে গৃহীত হয়। এরপর থেকে পরিষদের মুখপত্রটি সাহিত্য পরিষদ পত্রিকা নামে ত্রৈমাসিক পত্রিকা হিসেবে বাংলায় প্রকাশিত হতে থাকে।
১৮৯৪ সালে পরিষদের সভাপতি ছিলেন রমেশচন্দ্র দত্ত, সহসভাপতি ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও নবীনচন্দ্র সেন এবং সম্পাদক ছিলেন এল লিওটার্ড, দেবেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় ও রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদী।
পরিষদের নিজস্ব একটি কার্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য ১৮৯৯ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুরের সভাপতিত্বে পরিষদের এক বিশেষ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরিষদের কার্যালয় ১৩৭/১ কর্নওয়ালিস স্ট্রিটে একটি ভাড়া বাড়িতে সরিয়ে নেওয়া হয়।
বিশ শতকের প্রথম দশকে পরিষদের কলেবর যথেষ্ট বৃদ্ধি পায়। এ সময়ে এর সদস্য সংখ্যা ৫২৩ তে উন্নীত হয়। প্রখ্যাত সদস্যদের মধ্যে ছিলেন রমেশচন্দ্র দত্ত, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, নবীনচন্দ্র সেন, দেবেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়, রায় যতীন্দ্রনাথ চৌধুরী, সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর, জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর, গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর, রজনীকান্ত গুপ্ত, রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদী, দেবেন্দ্রপ্রসাদ ঘোষ, নরেন্দ্রনাথ মিত্র, অমৃতকৃষ্ণ মল্লিক, সুরেশচন্দ্র সমাজপতি ও দ্বিজেন্দ্রনাথ বসু। ১৯০৬ সালে পরিষদের এক বিশেষ অধিবেশনে কলকাতার বাইরে পরিষদের শাখা স্থাপনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এর পরপরই রংপুরে একটি শাখা প্রতিষ্ঠিত হয়। কালক্রমে বাংলার বিভিন্ন জেলা শহরে এবং বাংলার বাইরেও ৩০টি শাখা প্রতিষ্ঠিত হয়। চারুচন্দ্র ঘোষ, রজনীকান্ত গুপ্ত, হীরেন্দ্রনাথ দত্ত, সুরেশচন্দ্র সমাজপতি ও নগেন্দ্রনাথ বসু পরিষদের নিজ বাসগৃহ নির্মাণের জন্য কাসিমবাজারের মহারাজা মণীন্দ্রচন্দ্র নন্দীর স্মরণাপন্ন হন। তিনি হালশীবাগানে সাত কাঠা জায়গা পরিষদকে দান করেন। ১৯০৯ সালের শেষদিকে পরিষদ স্থায়ী কার্যালয়ে স্থানান্তরিত হয়।
বান্ধব, বিশিষ্ট, আজীবন, সহায়ক ও সাধারণ পরিষদে এই পাঁচ ধরনের সদস্যপদ রয়েছে। যে কোনো ব্যক্তি পরিষদের সাধারণ সদস্য নির্বাচিত হতে পারেন।
বাংলা ভাষায় নানা বিষয়ের গবেষণায় পৃষ্ঠপোষকতা করে পরিষদ বিদ্বৎসমাজে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। সংস্কৃত, আরবি ও ইংরেজি ভাষা হতে বহু গ্রন্থ অনুবাদ ও প্রকাশ করা এবং দুষ্পাপ্য বাংলা গ্রন্থ, সাহিত্য ও গবেষণা নিয়মিত পুস্তকাকারে প্রকাশ করা পরিষদের অন্যতম প্রধান কাজ। পরিষদের প্রকাশিত গ্রন্থগুলির মধ্যে যোগেশচন্দ্র রায় বিদ্যানিধির বাংলা শব্দকোষ, শ্রীকৃষ্ণকীর্তন, সংবাদপত্রে সেকালের কথা ও সাহিত্যসাধক চরিতমালা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। যতীন্দ্রনাথ চৌধুরী ও রজনীকান্ত গুপ্তের বিশেষ আগ্রহে প্রাচীন বাংলা ও সংস্কৃত পুথি সংগ্রহের যে চেষ্টা নেওয়া হয়েছিল, তারই ফল হিসেবে পরিষদ গ্রন্থাগারে বর্তমানে পুথির সংখ্যা প্রায় সাত হাজার। শ্রীকৃষ্ণকীর্তনের একমাত্র পুথি পরিষদে সংরক্ষিত।
গবেষণা কাজ ছাড়াও পরিষদ আরও কিছু বিষয়ে আগ্রহ দেখিয়েছিল। প্রাচীন মুদ্রা, প্রস্তরমূর্তি, ধাতুমূর্তি, তাম্রশাসন, প্রাচীন চিত্র, সাহিত্যিক ও বিশিষ্ট ব্যক্তিগণের ব্যবহৃত দ্রব্যাদি, হস্তলিপি পত্র ও দানপত্রাদি, প্রাচীন অস্ত্রশস্ত্র, পাণ্ডুলিপি (বিখ্যাত লেখকের রচনা) ও প্রাচীন দলিল প্রভৃতি বিভাগসমৃদ্ধ একটি চিত্রশালাও গঠন করা হয়েছে। বহু বছরের চেষ্টার ফলে পরিষদ একটি সমৃদ্ধ গ্রন্থাগার গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে, যেখানে রয়েছে বেশ কিছু দুর্লভ প্রাচীন পুস্তক। পরিষদের নিজস্ব সঞ্চয়, উপহার প্রাপ্ত ও দানলব্ধ পুস্তকাদি ছাড়া ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, রমেশচন্দ্র দত্ত, সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত, বিনয়কৃষ্ণ দেব, ঋতেন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রেমসুন্দর বসু ও যতীন্দ্রনাথ পালের সাতটি মূল্যবান গ্রন্থ সংগ্রহ পরিষদ গ্রন্থাগারের অঙ্গীভূত হওয়ায় এটি হয়ে উঠেছে আরও সমৃদ্ধ। গ্রন্থাগারে পুস্তকের সংখ্যা প্রায় দেড় লক্ষ। গ্রন্থ প্রকাশ, পদক ও পুরস্কার দান, দুঃস্থ সাহিত্যিক ভাণ্ডার গঠন প্রভৃতি সদনুষ্ঠানে সহায়তা করার জন্য অনেক মহানুভব ব্যক্তি বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদে গচ্ছিত তহবিল স্থাপন করেছেন। পুলিনবিহারী দত্ত কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত দুস্থ সাহিত্যিক ভাণ্ডারের আয় হতে বহু দুঃস্থ সাহিত্যিক পরিবারকে অর্থ সাহায্য করা হয়েছে।
প্রশ্নঃ 'খনার বচন' বেশির ভাগ কী নিয়ে?
Best One ব্যাখ্যা যোগ করুন।বর্ণনাঃ
'খনার বচন' বেশির ভাগ কৃষি নিয়ে।
খনার বচন মূলত কৃষিতত্ত্বভিত্তিক ছড়া। আনুমানিক ৮ম থেকে ১২শ শতাব্দীর মধ্যে রচিত। অনেকের মতে, খনা নাম্নী জ্যোতির্বিদ্যায় পারদর্শী এক বিদুষী বাঙালি নারীর রচনা এই ছড়াগুলো। তবে এ নিয়ে মতভেদ আছে। অজস্র খনার বচন যুগ-যুগান্তর ধরে গ্রাম বাংলার জন-জীবনের সাথে মিশে আছে। জনশ্রুতি আছে যে, খনার নিবাস ছিল অধুনা পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগণা জেলার বারাসত সদর মহকুমার দেউলিয়া গ্রামে (বর্তমানে চন্দ্রকেতুগড় প্রত্নস্থল, যেটি খনামিহিরের ঢিবি নামে পরিচিত)। এমনকি, তিনি রাজা বিক্রমাদিত্যের সভার নবরত্নের একজন বলে কথিত। বরাহমিহির বা বররুচি-এর পুত্র মিহির তার স্বামী ছিল বলেও কিংবদন্তী আছে। এই রচনা গুলো চার ভাগে বিভক্ত।
তবে পাবে পোয়ে।
তাতেই কাপড়, তাতেই ভাত।
(কলাগাছের ফলন শেষে গাছের গোড়া যেন না কাটে কৃষক, কেননা তাতেই সারা বছর ভাত-কাপড় জুটবে তাদের।)
রাজা যায় মাগনে।
(আগুনে অর্থাৎ অগ্রাণে, আর, মাগুনে মানে ভিক্ষাবৃত্তির কথা বোঝাতে ব্যবহৃত, অর্থাৎ যদি অঘ্রাণে বৃষ্টিপাত হয়, তো, রাজারও ভিক্ষাবৃত্তির দশা, আকাল অবস্থায় পতিত হওয়াকে বোঝায়।)
কড়ি হয় তুষে।
(অর্থাৎ,পৌষে বৃষ্টিপাতের ফলে কৃষক তুষ বিক্রি করেও অঢেল টাকাকড়ির বন্দোবস্ত করবে।)
তিন না জানেন বরাহ।
মেঘের মধ্যেই জলের রেখা,
আগে হতে পিছে ভালো যদি ডাকে মায়।।
(খালি কলসি দেখে যাত্রা করলে টা শুভ হয় না কিন্তু যদি সেই কলসিতে জল/পানি ভরতে যাওয়ার দৃশ্য দেখে কেউ যাত্রা করে তা শুভ সূচনা হয়। যাত্রা করার আগে মায়ের ডাক ভাল, কিন্তু যাত্রা করে বেরিয়ে যাওয়ার পর মা যদি পেছন থেকে ডাকে তা আরও মঙ্গলের সূচনা করে।)
তার বলদের হয় বাত, ঘরে তার থাকে না ভাত।
(পূর্ণিমা বা অমাবস্যায় হাল ধরা উচিত নয়, ধরলে চিরকাল দুঃখ পেতে হয়। বলদ বাত রোগে পঙ্গু হয়ে যায়, চাষ না করার ফলে ঘরে তার ভাত জোটে না।)
(যার বলদ থাকতেও যে মায়া করে খাটায় না, তার বলদ শুধু বসে খায়। ফলে বলদের পেছনে শুধু শুধু খরচ হয় এবং জমিতে কোন চাষ হয় না। ফলে খাবারের অভাব দেখা দেয়। মানুষ বসে খেলেও একই ফল হয়।)
(বাড়ির কাছে ধানের জমি থাকলে এবং তাতে চাষ করলে লাভবান হওয়া যায় বেশি। কারণ চুরি যাবার ভয় থাকে না এবং পাহারা দেওয়ার জন্য পয়সা দিয়ে লোক রাখার দরকার হয় না। সুযোগ বুঝে খুঁজে দেখে যদি গরু কেনা যায় তাতে না চিনলেও বেশি লাভবান হাওয়া যায়।)
লক্ষ্মী বলেন ঐখানে আছি।
(ফাঁক ফাঁক করে ধান বুনলে ধানের গুছি মোটা হয় এবং অনেক বেশি ফলন হয়।)
(যে দিন ধানের শীষ বের হবে তার থেকে ঠিক কুড়ি দিন পর ধান কাটতে হবে। ধান মাড়াই ও ঝাড়াই করতে হবে দশ দিনের মধ্যে এবং তারপর নিয়ে গোলায় তুলবে।)
(যে কৃষক পরের সাহায্যে চাষ করে তার আশা বৃথা। বাপ-ছেলে কাজ করলে সবচেয়ে ভাল ফসল ফলানো যায় তা না হলে সহোদর ভাইকে নিলেও ঠিকমত কাজ করবে। অন্যরা ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা করবে।)
(একই জমিতে যদি সরিষা ও মুগ বা সরিষা ও কলাই একসাথে বোনা যায় তাহলে দুটি ফসলই একসাথে পাওয়া যায়।)
(দিনের বেলা প্রখর রোদ আর রাত্রে বৃষ্টি হলে ধানের জমি উর্বর হয় ও ধানের ফলন ভাল হয়।)
(বেলে মাটিতে আউশ ধান এবং এঁটেল মাটিযুক্ত জমিতে পাট ভাল হয়।)
প্রশ্নঃ মধ্যযুগের অনুবাদ সাহিত্য রচনায় কোন মুসলিম শাসকের গুরুত্বপুর্ন ভূমিকা রয়েছে?
Best One ব্যাখ্যা যোগ করুন।বর্ণনাঃ
মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের বিস্তৃত অঙ্গন জুড়ে অনুবাদ সাহিত্যের চর্চা হয়েছিল এবং পরিণামেএ সাহিত্যের শ্রীবৃদ্ধিসাধনে অনুবাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা অপরিসীম।সকল সাহিত্যের পরিপুষ্টিসাধনে অনুবাদমূলক সাহিত্যকর্মের বিশিষ্ট ভূমিকা আছে।বাংলা সাহিত্যের ক্ষেত্রেও এর ব্যতীক্রম পরিলক্ষিত হয় না।"সমৃদ্ধতর নানা ভাষা থেকে বিচিত্র নতুন ভাব ও তথ্য সঞ্চয় করে নিজ নিজ ভাষার বহন ও সহন ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলাই অনুবাদ সাহিত্যের প্রাথমিক প্রবণতা।"ভাষার মান বাড়ানোর জন্য ভাষার ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হয়,আর তাতে সহায়তা করে অনুবাদকর্ম।উন্নত সাহিত্য থেকে ঋণ গ্রহণ করা কখনো অযৌক্তিক বিবেচিত হয়নি।উন্নত ও সমৃদ্ধ ভাষা-সাহিত্যের সান্নিধ্যে এলে বিভিন্ন বিষয়ের প্রতিশব্দ তৈরি করা সম্ভব হয়,অন্য ভাষা থেকে প্রয়োজনীয় শব্দও গ্রহণ করা যায়।অনুবাদের মাধ্যমে বিশ্বসাহিত্যের শ্রেষ্ঠ বক্তব্য আয়ত্তে আসে।ভাষা ও সাহিত্যের যথার্থ সমৃদ্ধির লক্ষ্যে শ্রেষ্ঠ ও সম্পদশালী ভাষায় উৎকর্ষপূর্ণ সাহিত্যসৃষ্টির অনুবাদ একটি আবশ্যিক উপাদান।
জ্ঞানবিজ্ঞানের বিষয়ের বেলায় শুদ্ধ অনুবাদ অভিপ্রেত।কিন্তু সাহিত্যের অনুবাদ শিল্পসম্মত হওয়া আবশ্যিক বলেই তা আক্ষরিক হলে চলে না।ভিন্ন ভাষার শব্দ সম্পদের পরিমাণ, প্রকাশক্ষমতা ও বাগভঙ্গি অনুযায়ী ভিন্ন ভাষায় ব্যক্ত কথায় সংকোচন, প্রসারণ, বর্জন ও সংযোজন আবশ্যিক হয়।মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যে যে অনুবাদের ধারাটি সমৃদ্ধি লাভ করে তাতে সৃজনশীল লেখকের প্রতিভা কাজ করেছিল।সে কারণে মধ্যযুগের এই অনুবাদকর্ম সাহিত্য হিসেবে মর্যাদা লাভ করেছে।
বুলিকে লেখ্য ভাষার তথা সাহিত্যের ভাষায় উন্নীত করার সহজ উপায় হচ্ছে অনুবাদ।অন্যভাষা থেকে সাহিত্য, দর্শন, বিজ্ঞান প্রভৃতি জ্ঞান-মননের বিভিন্ন বিসয় অনুবাদ করতে হলে সে বিষয়ক ভাব-চিন্তা-বস্তুর প্রতিশব্দ তৈরী করা অনেক সময় সহজ হয়,তৈরী সম্ভব না হলে মূল ভাষা থেকে শব্দ গ্রহণ করতে হয়।এভাবেই সভ্য জাতির ভাষা-সাহিত্য মাত্রই গ্রহণে-সৃজনে ঋদ্ধ হয়েছে।এ ঋণে লজ্জা নেই।যে জ্ঞান বা অনুভব আমাদের দেশে পাঁচশ বছরেও লভ্য হত না,তা আমরা অনুবাদের মাধ্যমে এখনই পেতে পারি।যেমনঃ বিশ্বসাহিত্যের শ্রেষ্ঠ গ্রন্থগুলো,শ্রেষ্ঠ দার্শনিক চিন্তাগুলো,বৈজ্ঞানিক তথ্যগুলো,সমাজতত্ত্বগুলো-মানবচিন্তার শ্রেষ্ঠ সম্পদগুলো এভাবে আয়ত্তে আসে।
চৌদ্দ পনেরো শতকে আমাদের লেখ্য সাহিত্যও তেমনি সংস্কৃত-অবহটঠ থেকে ভাব-ভাষা-ছন্দ গ্রহণ করেছে,পুরাণাদি থেকে নিয়েছে বর্ণিত বিষয় ও বর্ণনাভঙ্গি এবং রামায়ণ-মহাভারত-ভাগবত-প্রণয়োপাখ্যান-ধর্মশাস্ত্র প্রভৃতি সংস্কৃত-ফারসী-আরবী-হিন্দি থেকে অনূদিত হয়েছে আমাদের ভাষায়।এভাবেই আমাদের লিখিত বা শিষ্ট বাংলা ভাষাসাহিত্যের বুনিয়াদ নির্মিত হয়েছিল।
আদর্শ অনুবাদকের একটা বিশেষ যোগ্যতা অপরিহার্য। ভাষান্তর করতে হলে উভয় ভাষার গতিপ্রকৃতি, বাকভঙ্গি ও বাকবিধির বিষয়ে অনুবাদকের বিশেষ ব্যুৎপত্তির দরকার।তাহলেই ভাষান্তর নিখুঁত ও শিল্পগুণান্বিত হয়।তাই ভাষাবিদ কবি ছাড়া অন্য কেউ কাব্যের সুষ্ঠু অনুবাদে সমর্থ হয় না।মধ্যযুগে অ-কবিও অনুবাদ কর্মে উৎসাহী ছিলেন।তাই অনুবাদে নানা ত্রুটি দেখা যায়।এছাড়া এঁরা নিজেদের সামর্থ্য রুচিবুদ্ধি ও প্রয়োজন অনুসারে মূল পাঠের গ্রহণ-বর্জন ও সংক্ষেপ করেছেন।এজন্য মধ্যযুগের বাংলা ভাষায় কোন তথাকথিত অনুবাদই নির্ভরযোগ্য নয়।সবগুলোই কিছু কায়িক,কিছু ছায়িক,কিছু ভাবিক অনুবাদ এবং কিছু স্বাধীন রচনা।কাব্য সাহিত্যের অনুবাদ আক্ষরিক হতেই পারে না।
উৎস
-বাঙালী ও বাঙলা সাহিত্য- আহমদ শরীফ
জুয়েল হাসান
শাহজাদা সুজা(শাহ সুজা হিসেবেও পরিচিত) বাংলার সুবাদার মোগল সম্রাট শাহজাহানের দ্বিতীয় ছেলে। তিনি বাংলার সুবাদার ছিলেন ১৬৩৯ থেকে ১৬৬০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত। তিনি আপন ভাই শাহ জামানকে সরিয়ে সাত বছর ধরে মসনদে অধিষ্ঠিত থাকেন।
স্থাপত্যকর্মের প্রতি তার বিশেষ অনুরাগ ছিল। ঢাকা থেকে তিনি মুর্শিদাবাদে রাজধানী স্থানান্তর করলেও ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় বেশ কিছু স্থাপনা নির্মিত হয়েছিল তার সময়ে। তন্মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত স্থাপনাটি হলো বড় কাটরা, আরো আছে ধানমন্ডির শাহী ঈদগাহ এবং লালবাগ মসজিদ। এ ছাড়া কুমিল্লায় রয়েছে শাহ সুজা মসজিদ।
সুত্রঃ উইকিপিডিয়া
প্রশ্নঃ 'ইউসুফ জুলেখা' কাব্য কোন কবির রচনা?
Best One ব্যাখ্যা যোগ করুন।বর্ণনাঃ
'ইউসুফ জুলেখা' শাহ মুহম্মদ সগীর এর কাব্য রচনা ।
ইউসুফ-জোলেখা মধ্যযুগের পুঁথি লেখকদের রচিত বাংলা সাহিত্যের একটি প্রণয়-কাব্য। বাংলা সাহিত্যের প্রথম মুসলমান কবি শাহ মুহম্মদ সগীর, গৌড়ের সুলতান গিয়াসউদ্দিন আজম শাহের রাজত্বকালে(১৩৯৩-১৪০৯ খ্রিষ্টাব্দ) ইউসুফ-জোলেখা কাব্য রচনা করেন। শাহ মুহম্মদ সগীর ছাড়াও মধ্যযুগের আরো অনেক কবি ইউসুফ-জোলেখা নাম দিয়ে কাব্য রচনা করেন। তার মধ্যে আবদুল হাকিম, শাহ গরিবুল্লাহ, গোলাম সফাতুল্লাহ, সাদেক আলী এবং ফকির মোহাম্মদ উল্লেখযোগ্য।
শাহ মুহম্মদ সগীর এর ইউসুফ-জোলেখা কাব্যে সুপ্রাচীন প্রণয়কাহিনী উপজীব্য করা হয়েছে। বাইবেল ও কুরআন এ নৈতিক উপাখ্যান হিসেবে সংক্ষেপে এই কাহিনী বর্ণিত রয়েছে। ইরানের মহাকবি ফেরদৌসী (মৃত্যু ১০২৫ খ্রিষ্টাব্দ) এবং সূফীকবি জামী (মৃত্যু ১৪৯২ খ্রিষ্টাব্দ) মূল কাহিনী পল্লবিত করে ইউসুফ-জোলেখা নামে কাব্য রচনা করেছিলেন। তবে তাদের কাব্যের সাথে শাহ মুহম্মদ সগীরের কাহিনীর তেমন কোন মিল নেই। তবে ফেরদৌসীর কাব্যের রোমান্টিক বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে শাহ মুহম্মদ সগীরের কাব্যের যথেষ্ট সামঞ্জস্য বিদ্যমান। ডঃ মুহম্মদ এনামুল হক অনুমান করেন, 'কুরআন ও ফেরদৌসীর কাব্য ব্যতিত মুসলিম কিংবদন্তিতে স্বীয়-প্রতিভায় নির্ভর করিয়াই শাহ মুহম্মদ সগীর তাহার ইউসুফ-জোলেখা কাব্য রচনা করেছিলেন'।
ইউসুফ-জোলেখা কাব্যের বিষয়বস্তু ইউসুফ ও জোলেখার প্রণয়কাহিনী। কাব্যের আরম্ভে আল্লাহ ও রাসুলের বন্দনা, মাতাপিতা ও গুরুজনের প্রশংসা এবং রাজবন্দনা স্থান পেয়েছে। তৈমুস বাদশাহের কন্যা জোলেখা আজিজ মিশরের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলেও ক্রীতদাস ইউসুফের প্রতি গভীর ভাবে প্রেমাসক্ত হন। নানাভাবে আকৃষ্ট করেও তিনি ইউসুফকে বশীভূত করতে পারেন নি। বহু ঘটনার মধ্য দিয়ে ইউসুফ মিশরের অধিপতি হন। ঘটনাক্রমে জোলেখা তখনও তার আকাঙ্খা পরিত্যাগ করেন নি এবং পরে ইউসুফের মনেরও পরিবর্তন ঘটে। ফলে তাদের মিলন হয়। কাব্যের এই প্রধান কাহিনীর সাথে আরও অসংখ্য উপকাহিনী স্থান পেয়েছে।
শাহ মুহাম্মদ সগীর আনুমানিক ১৩-১৪ শতকের কবি। বাঙালি মুসলিম কবিদের মধ্যে তিনিই প্রাচীনতম। তিনি গৌড়ের সুলতান গিয়াসউদ্দিন আজম শাহ এর রাজত্বকালে (১৩৮৯-১৪১১ খ্রিষ্টাব্দে) ইউসুফ-জোলেখা কাব্য রচনা করেন। কবি ছিলেন গিয়াসউদ্দিন আজম শাহের রাজকর্মচারী। কাব্যরস পরিবেশন অপেক্ষা ধর্মীয় প্রেরণা সৃষ্টির প্রতিই কবির অধিক আগ্রহ লক্ষ করা যায়। সে যুগে দেশি ভাষার রসাশ্রয়ী ধর্মকাহিনী রচনা করার মধ্যে কবির সৎসাহসের পরিচয় মেলে। বাইবেল-কুরআন কিংবা ফিরদৌসী-জামীর অনুসরণে কাহিনী-কাব্যটি কল্পিত হলেও তাতে বাঙলাদেশ ও বাঙালি-জীবনের বৈশিষ্ট্য প্রকাশ পেয়েছে। কাব্যটি পঞ্চদশ শতাব্দীর প্রথম দশকে রচনা করা হয়েছিল বলে অনুমান করা হয়। তার কাব্যে চট্টগ্রাম অঞ্চলের কতিপয় শব্দের ব্যবহার লক্ষ করে ড. মুহম্মদ এনামুল হক তাকে চট্টগ্রামের অধিবাসী বলে বিবেচনা করেছেন। তিনি কাব্যচর্চায় সুলতান গিয়াসউদ্দিন আজম শাহের পৃষ্ঠপোষকতা লাভ করেছিলেন। তার কাব্যে ধর্মীয় পটভুমি থাকলেও তা হয়ে উঠেছে মানবিক প্রেমোপাখ্যান। তার কাব্যে শিল্পমূল্য অতুলনীয়।
প্রশ্নঃ বিদ্যাপতি কোন ভাষায় তার পদগুলো রচনা করেন?
Best One ব্যাখ্যা যোগ করুন।বর্ণনাঃ
বিদ্যাপতি পঞ্চদশ শতকের মৈথিলি কবি। বঙ্গদেশে তার প্রচলিত পদাবলীর ভাষা ব্রজবুলি। কথিত আছে যে পরমপুরুষ শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু প্রতিদিন তার রচিত পদ গাইতে ভালবাসতেন। বাঙালিরা চর্যাগীতির ভাষা থেকে এই ব্রজবুলীকে অনেক সহজে বুঝতে পারেন। এই কারণেই বিদ্যাপতিকে বাঙালি কবিদের অন্যতম হিসেবে গণ্য করা হয়। বিদ্যাপতিকে কোন কোন কবি দেহবাদি কবি বলে আখ্যায়িত করেছেন।
কবি বিদ্যাপতির জন্ম দ্বারভাঙা জেলার বিসফী গ্রামের এক বিদগ্ধ ব্রাহ্মণ পরিবারে। তার কৌলিক উপাধি ঠক্কুর বা ঠাকুর। বংশপরম্পরায় তারা মিথিলার উচ্চ রাজকর্মচারী ছিলেন। শস্ত্র, শাস্ত্র, রাজ্যশাসন ও সংস্কৃতি সাহিত্যে তাদের দান বিশেষরূপে উল্লেখযোগ্য। তিনি যে বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ছিলেন ছয়জন রাজা ও একজন রানীর পৃষ্ঠপোষকতা লাভ থেকেই তার স্বীকৃতি মেলে। কবি স্মৃতিকার রাজনীতিবিদ ব্যবহারবিদ ও আখ্যান লেখক হিসেবে তিনি সুপরিচিতি। তার রচনাবলির মধ্যে রয়েছে কীর্তিলতা ভূপরিক্রমা, কীর্তিপতাকা, পুরুষ পরীক্ষা, শৈবসর্বস্বসার, গঙ্গাবাক্যাবলি, বিভাগসার, দানবাক্যাবলি, লিখনাবলি, দুর্গাভক্তিতরঙ্গিনী। তিনি প্রায় আট শ’ পদ রচনা করেন। জীবৎকালে বিখ্যাত কবি ও পণ্ডিতরূপে তার প্রতিষ্ঠা ছিল।
মিথিলার কবি হলেও অমর পদাবলি অচিরেই সমগ্র বাংলাদেশে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। মিথিলার উপভাষা ব্রজবুলিই তার পদাবলির বাহন। এই ভাষার ধ্বনি-মাধুর্য ও সঙ্গীতময়তা বাংলা কাব্যকে, বিশেষ করে বৈষ্ণব পদাবলিকে সমৃদ্ধ করেছে। বিষয়ের লালনে, ধ্বনি, শব্দ, অলঙ্কার প্রভৃতির ব্যবহারে তার নাগরিক বৈদগ্ধ ও মননশীলতার পরিচয় পাওয়া যায়। তিনি চৈতন্য-পূর্ববর্তী কবি। তাই তার রাধা মানবীয় বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত। রাধার বয়:সন্ধির দৈহিক সুষমা ও লাস্যময়তা তার পদাবলিকে ঐশ্বর্যময় করেছে। ভাব-সম্মিলন ও ভাবোল্লাসের পদেও বিদ্যাপতি এক প্রকার প্রতিদ্বন্দ্বিহীন। তার ভাব সম্মিলনের একটি পদ এখানে সঙ্কলিত হয়েছে।
কবি বিদ্যাপতি ‘মৈথিল কোকিল’ ও অভিনব জয়দেব নামেখ্যাত এই বিস্ময়কর প্রতিভাশালী কবি একাধারে কবি, শিক্ষক, কাহিনীকার, ঐতিহাসিক, ভূবৃত্তান্ত লেখক ও নিবন্ধকার হিসেবে ধর্মকর্মের ব্যবস্থাদাতা ও আইনের প্রামাণ্য গ্রন্থের লেখক ছিলেন।
ড. বিমানবিহারী মজুমদারের মতে, বিদ্যাপতি সম্ভবত ১৩৮০-১৪৬০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত জীবিত ছিলেন। সংস্কৃতে তার পাণ্ডিত্য ছিল, অপভ্রংশে তিনি কীর্তিলতা নামে ঐতিহাসিক কাব্য লিখেছিলেন, বিভিন্ন বিষয়ে সৃষ্টিবৈচিত্র্য তাকে বিশিষ্ট করেছে; কিন্তু নিজ মাতৃভাষা মৈথিলীতে রাধাকৃষ্ণ প্রেমলীলা বিষয়ক যে অত্যুৎকৃষ্ট পদাবলি রচনা করেছিলেন তা-ই তাকে অমরতা দান করেছে। তার পদাবলি বাংলা আসাম উড়িষ্যা ও পূর্ববিহারে সমাদৃত। শ্রীচৈতন্যদেবের আগে তার আবির্ভাব হয়েছিল বলে বৈষ্ণবের বৈশিষ্ট্য তার মধ্যে প্রত্যক্ষ করা চলে না; তবে কবি হৃদয়ের নিবিড় আকুতি বৈষ্ণব পদাবলিতেই তিনি প্রতিফলিত করেছেন। রাজা শিবসিংহের আমলে রচিত কবিতায় যে পরিমাণে ‘বিলাস কলাকৌতূহল, নর্মলীলার উল্লাস এবং আনন্দোজ্জ্বল জীবনের প্রাচুর্য’ দেখা যায় তা পরবর্তীকালের রচনায় অনুপস্থিত।
কবি বিদ্যাপতির কাব্যে চৈতন্যোত্তর বৈষ্ণবতত্ত্ব প্রতিফলিত হয়নি, তিনি এই অলৌকিক প্রেমকাহিনীকে মানবিক প্রেমকাহিনী হিসেবে রূপ দিয়েছেন। নবোদ্ভিন্নযৌবনা কিশোরী রাধার বয়:সন্ধি থেকে কৃষ্ণবিরহের সুতীব্র আর্তি বর্ণনা বিদ্যাপতির কবিতায় উপজীব্য। রাধা চরিত্রের পরিকল্পনায় অপূর্ব কবিত্বের পরিচয় দিয়ে কবি কামকলায় অনভিক্ষা বালিকা রাধাকে শৃঙ্গার রসের পূর্ণাঙ্গ নায়িকায় রূপান্তরিত করেছেন, প্রগাঢ় প্রেমানুভূতি দেহমনকে আচ্ছন্ন করে রাধার মনে ভাবান্তর এনেছেন, কৃষ্ণবিরহের তন্ময়তায় রাধার বিশ্বভুবন বেদনার রঙে রাঙিয়ে দিয়েছেন। বিদ্যাপতির পদে শাশ্বত কালের কলাকুতূহপূর্ণা রহস্যময়ী নায়িকার নিখুঁত প্রতিচ্ছবি প্রত্যক্ষ করে রবীন্দ্রনাথ মন্তব্য করেছেন, ‘এই পদগুলি পড়িতে পড়িতে একটি সমীর চঞ্চল সমুদ্রের উপরিভাগ চক্ষে পড়ে। কিন্তু সমুদ্রের অন্তর্দেশে যে গভীরতা, নিস্তব্ধতা যে বিশ্ববিস্মৃত ধ্যানশীলতা আছে তা বিদ্যাপতির গীতি তরঙ্গের মধ্যে পাওয়া যায় না।’ বিদ্যাপতি যে বিপুল সংখ্যক পদে রাধাকৃষ্ণের প্রেমলীলা রূপায়িত করেছেন, তার মধ্যে রাধার বয়:সন্ধি অভিসার, প্রেমবৈচিত্র্য ও আপেক্ষপানুরাগ, বিরহ ও ভাবসম্মিলনের পদগুলি বিশেষ উৎকর্ষপূর্ণ। মিথিলার ঐশ্বর্যপূর্ণ রাজসভায় বিদ্যাপতি অসাধারণ পাণ্ডিত্যের সাথে সংস্কৃত ও প্রাকৃতের ভাষা ভাব শব্দ ছন্দ ও অলঙ্কারের খনি থেকে রত্নরাজি আহরণ করে রাধার প্রেম বর্ণনা করেছেন। ছন্দ অলঙ্কারে, শব্দবিন্যাসে ও বাগবৈদগ্ধে বিদ্যাপতির পদ ‘হীরক খণ্ডের মতো আলোক বিচ্ছুরণে সহস্রমুখী’, আবার ‘জীবনের আলো ও আঁধার, বিপুল পুলক ও অশান্ত বেদনা, রূপোল্লাস ও ভাবোন্মাদনা, মিলন ও বিরহ, মাথুর ও ভাব সম্মেলনে’ তার পদ আজো অতুলনীয়।
বিদ্যাপতির পদাবলি রচনায় যে বিস্ময়কর প্রতিভার পরিচয় দিয়েছেন তা তার অসংখ্য পদে লক্ষ করা যায়। রাধার প্রেমলীলার বিচিত্র পরিচয় তার পদে বিধৃত।
তার ভাব ভাষা চিত্ররূপ অলঙ্কার ও ছন্দে পরবর্তীকালের অনেক পদকর্তা বিদ্যাপতিকে অনুসরণ করেছেন।
প্রশ্নঃ মুকুন্দরাম চক্রবর্তী কোন মঙ্গলকাব্য ধারার কবি ?
Best One ব্যাখ্যা যোগ করুন।বর্ণনাঃ
মুকুন্দরাম চক্রবর্তী চণ্ডীমঙ্গল মঙ্গলকাব্য ধারার কবি।
মুকুন্দরাম চক্রবর্তী মধ্যযুগের বাঙালি কবি। ধারনা করা হয় তার জন্ম ষোড়শ শতাব্দীর প্রথম দিকে। তার বিখ্যাত কাব্য চণ্ডীমঙ্গলকাব্য প্রাচীন পাঁচালী রচনার মধ্যে শ্রেষ্ঠ । এর রচনাকাল ১৫৪৪ খ্রীস্টাব্দের কাছাকাছি সময় বলে বিবেচনা করা হয়।
মুকুন্দরাম চক্রবর্তীর (আনুমানিক ১৫৪০-১৬০০) পিতা হৃদয় মিশ্র এবং মাতা দৈবকী। তার পৈতৃক নিবাস বর্তমান ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার দামুন্যা গ্রামে। ডিহিদার মামুদ শরিফের অত্যচারে উৎখাত হয়ে আনুমানিক ১৫৫৭ খ্রিষ্ট্রাব্দে মুকুুন্দরাম পৈতৃক নিবাস ত্যাগ করে মেদিনীপুর জেলার আড়রা গ্রামে আশ্রয় নেন,সে খানে গ্রাম্য জমিদার বাঁঁকুড়া রায়ের দ্বারস্থ হন।
তিনি রাজা রঘুনাথের সমসাময়িক ছিলেন। মুকুন্দরাম তার চন্ডীমঙ্গল কাব্যের নামকরণ করেন অভয়ামঙ্গল ও অন্বিকামঙ্গল । গণজীবনের করুণ চিত্র তার কাব্যে তুলে ধরেন। কবির প্রতিভার স্বকৃতিস্বরূপ রাজা রঘুনাথ তাকে কবি কঙ্কন উপাধি প্রদান করেন। তার পূর্ণ নাম হচ্ছে কবি কঙ্কন মুকুন্দরাম চক্রবর্তী। তবে এই রচনাকে কেউ কেউ ' কবিকঙ্কণ চন্ডী'ও বলেছেন। 'কবিকঙ্কণ' কথার মানে যে কবি হাতে অথবা পায়ে ঘুঙুর পরে গান করতেন। অর্থাৎ মঙ্গলকাব্যের পেশাদার গায়ক।
তিনি তার কাব্যে উপন্যাসের বীজ বপন করেছেন। আধুনিক যুগের সাহিত্য সমালোচকগণ তার সম্পর্কে বলেছেন - ' মুকুন্দরাম চক্রবর্তী মধ্যযুগে জন্মগ্রহণ না করে আধুনিক যুগে জন্মগ্রহণ করলে কাব্য না লিখে উপন্যাস লিখতেন '।যদি এমন কোন গ্রন্থের নাম করতে হয় যাতে আধুনিক কালের, উপন্যাসের,রস কিছু পরিমাণে মেলে যেমন- নিপুণ পর্যবক্ষেণ, সহৃদয়তা, জীবনে আস্থা, ব্যাপক অভিজ্ঞতা সবই যথোচিত পরিমাণে বর্তমান। মুকুন্দরাম শুদ্ধাচারী বামুন-পন্ডিতঘরের ছেলে, আজন্ম দেববিগ্রহ সেবক।কিন্তু তার সহানুভূতি থেকে কেউই বঞ্চিত হয়নি - না বনের তুচ্ছতম পশু না জনপদের দুর্গততম মানুষ।সংস্কৃত অলঙ্কার প্রয়োগের পাশাপাশি লোক-ব্যবহার, ছেলেভোলানো, ছেলেখেলা, মেয়েলি ক্রিয়াকান্ড, ঘরকন্নার ব্যবস্থা, রান্নাবাড়া ইত্যাদি অনপেক্ষিত সামাজিক ও সাংসারিক ব্যাপারেও বিস্ময়কর জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার পরিচয় দিয়েছেন
কবিকঙ্কণ মুকুন্দ (রাম) চক্রবর্তী |
|
---|---|
ভাষা | বাংলা |
সময়কাল | ষোড়শ শতাব্দী |
ধরন | কাব্য/মঙ্গলকাব্য |
বিষয় | চণ্ডীমঙ্গল |
উল্লেখযোগ্য রচনাবলি | অভয়ামঙ্গল |
প্রশ্নঃ 'মর্সিয়া' কি?
Best One ব্যাখ্যা যোগ করুন।বর্ণনাঃ
নূরুল আনাম : মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যে ‘মর্সিয়া সাহিত্য' নামে এক ধরনের শোক কাব্য বিস্তৃত অঙ্গন জুড়ে আছে। এমনকি তার বিয়োগান্ত ভাবধারার প্রভাব আধুনিক যুগের পরিধিতেও তা ভিন্ন আংগিকে এসে উপনীত হয়েছে। শোক বিষয়ক ঘটনা অবলম্বনে সাহিত্য সৃষ্টি বিশ্ব সাহিত্যের প্রাচীন রীতি হিসাবে বিবেচিত। ‘মর্সিয়া' শব্দটি আরবী, এর অর্থ শোক প্রকাশ করা। আরবী সাহিত্যে মর্সিয়া উদ্ভব নানা ধরনের শোকাবহ ঘটনা থেকে হলেও পরে কারবালা প্রান্তরে নিহত ইমাম হোসেন ও অন্য শহীদদেরকে উপজীব্য করে লেখা সাহিত্য মর্সিয়া নামে আখ্যায়িত হয়। মূলত : ৭৫০ খৃস্টাব্দে উমাইয়া খিলাফতের পতনের পর থেকেই এই সাহিত্য সৃষ্টির সূচনা। কারবালার শোকাবহ ঘটনাসহ উমাইয়া দুঃশাসনজনিত কারণে সৃষ্ট মুসলিম জনমনে যে বিক্ষোভের সঞ্চার হয় তা যেমন এই ধারার সাহিত্য সৃষ্টিতে ইন্ধন যোগায় তেমনি বিজয়ী আববাসীয় শাসকরাও একে নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করতে সচেষ্ট হয়। এই উভয়বিধ কারণেই সমগ্র মুসলিম বিশ্বে মর্সিয়া সাহিত্য প্রসার লাভ করে। আরবী সাহিত্য থেকে মর্সিয়া কাব্য ফারসী সাহিত্যে স্থান পায়। উপমহাদেশে সুলতানী শাসন প্রতিষ্ঠিত হলে ফারসি ভাষায় মর্সিয়া প্রচলিত হয় এবং পরে উর্দু ভাষাতেও তার প্রসার ঘটে। মর্সিয়া সাহিত্যের উৎপত্তি কারবালার বিষাদময় কাহিনী ভিত্তি করে হলেও তার মধ্যে আরো শোক ও বীরত্বের কাহিনীর অনুপ্রবেশ ঘটেছে। মুসলিম সমাজের খলিফাদের বিজয় অভিযানের বীরত্বব্যঞ্জক কাহিনীও এই শ্রেণীর কাব্যে স্থান পেয়েছে। ‘জঙ্গনামা' নামে বাংলা সাহিত্যে এ ধরনের কাব্য রচিত হয়েছে। মূলত আরবী মাগাজী কাব্য ধারা থেকে উর্দু জঙ্গনামা কাব্যের উৎপত্তি। উর্দু থেকেই বাংলা জঙ্গনামা কাব্যের উৎপত্তি হয়। বাংলা মর্সিয়া কাব্যগুলো প্রধানত অনুবাদ সাহিত্য হিসাবেও গড়ে উঠে। বাঙালী কবিরা মূলতঃ ফারসী ও উর্দু কাব্যের ভাব কল্পনা ও ছায়া আশ্রয় করে তাদের কাব্য রচনা করেছিলেন তথাপি এর মধ্যেও তাদের মৌলিকতার যথেষ্ট পরিচয় বিদ্যমান। ফলে এই কাব্যগুলো এক প্রকার অভিনব সৃষ্টি হয়ে দাঁড়িয়েছে সুদূর আরব পারস্যের কাহিনী কাব্যকার লিপিবদ্ধ করতে গিয়ে কবিরা যে বাকভঙ্গি ও পরিকল্পনার আশ্রয় গ্রহণ করেছেন তা অনেক ক্ষেত্রে অবাস্তব। এতে প্রমাণিত হয়, বাঙালী কবিরা মাটির প্রভাব অতিক্রম করতে পারেননি। সামগ্রিক মর্সিয়া সাহিত্যকে পৃথক চারটি ধারায় বিন্যস্ত করা যায়। প্রথম ধারা মধ্যযুগের (১২০০-১৮০০) ঐতিহ্যবাহী মর্সিয়া সাহিত্য। হামিদুল্লাহ, মোহাম্মদ খান এই ধারার কবি। দ্বিতীয় ধারা মিশ্র ভাষায় রচিত মর্সিয়া সাহিত্য। শাহ গরীবুল্লাহ, রাধা রমন গোপ এই ধারার অনুসারী। তৃতীয় ধারা আধুনিক বাংলায় রচিত মর্সিয়া সাহিত্য এর গদ্যধারায় সাহিত্য সৃষ্টি করেছেন মীর মোশাররফ হোসেন, হামিদ আলী প্রমুখ এবং কাব্য ধারায় সাহিত্য সৃষ্টি করেছেন কায়কোবাদ প্রমুখ। চতুর্থ ধারা হচ্ছে লোক সাহিত্যের ধারা। বাংলা মর্সিয়া সাহিত্যের আদি কবি সম্পর্কে নিশ্চিত করে কিছু বলার উপায় নেই। তবে শেখ ফয়জুল্লাকে এ ধারার প্রথম কবি বলে মনে করা হয়। তিনি ‘জয়নবের চৌতিশা' নামে কাব্যের রচয়িতা। কাব্যটি আকারে ছোট এবং কারবালার কাহিনীর একটি ছোট অংশ অবলম্বনে রচিত। কবির জীবনকাল ষোড়শ শতাব্দীর শেষার্ধ বলে মনে করা হয়। তিনি একজন প্রতিভাশালী কবি ছিলেন। দৌলত উজীর বাহরাম খান ‘ইমাম বিজয়ের' নামে কাব্য রচনা করেছিলেন। তিনি চট্টগ্রামের অধিবাসী ছিলেন। মোহাম্মদ খান ‘মক্তুল হোসেন' নামে কাব্য রচনা করে যথেষ্ট খ্যাতি লাভ করেছিলেন। এই কাব্যটি ফারসি মক্তুল হোসেন কাব্যের ভাবানুবাদ। তিনিও চট্টগ্রামের অধিবাসী ছিলেন। ১৬৪৫ খৃস্টাব্দের দিকে এটি রচিত হয়। এতে কবি প্রতিভার উৎকর্ষতা প্রকাশ পেয়েছে। এখানে করুণ রসের উৎকর্ষতা প্রকাশ পেয়েছে।
‘‘মোহাম্মদ খান কহে শুনিতে মুরম দহে পাষাণ হইয়া যায় জল’’ অষ্টাদশ শতকের কবি শেরবাজ ‘কাশিমের লড়াই' কাব্য রচনা করেছিলেন। কবির নিবাস ছিল ত্রিপুরা জেলায়। মহররমের একটি ক্ষুদ্র বিবরণী এ কাব্যে স্থান পেয়েছে। বিষয়বস্তু গতানুগতিক এবং তাতে কোন নতুনত্ব নেই। এই কাব্য ছাড়া তিনি ‘মল্লিকার হাজার সওয়াল' ও ‘ফাতেমার সুরতনামা' কাব্য রচনা করেছিলেন। অষ্টাদশ শতকের একজন বিশিষ্ট কবি হায়াত মাহমুদ। কবি রংপুর জেলার ঝাড়বিশিলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ‘জঙ্গনামা' কাব্য কবির প্রথম রচনা। কাব্য রচনাকাল ১৭২৩ খৃস্টাব্দ। কবির উদ্দেশ্য ছিল ইতিহাসের অনুকরণে কারবালা কাহিনী রচনা করা। সে জন্য কবি বলেন :
যতেক শুনিনু মুঞ্চি পুস্তক বয়াতে
কত আছে কত নাহি কিতাবের মতে।
.......................................
তাহা শুনি মনে মোর দ্বিধা সর্বক্ষণ
রচিনু পুস্তক তবে জানিতে কারণ
জাফর নামে একজন অজ্ঞাতনামা কবি ‘শহীদে কারবালা ও সখিনার বিলাপ' নামে মর্সিয়া কাব্য রচনা করেছিলেন। এতে কবির স্বাভাবিক প্রতিভার বিকাশ ঘটেছে। সম্ভবত অষ্টাদশ শতকের কোন এক সময় এ কাব্য রচনা করেন। অষ্টাদশ শতকের আর একজন কবি ছিলেন হামিদ। ‘সংগ্রাম হুসেন' নামে তিনি বৈশিষ্ট্যপূর্ণ কাব্য রচনা করেছিলেন। ইংরেজ আমলে বিশেষত এর প্রথম অর্ধে বাংলা সাহিত্যে মর্সিয়া কাব্যের দ্বিতীয় ধারা অর্থাৎ মিশ্র ভাষায় রচিত কাব্য আত্মপ্রকাশ করে। ফকির গরীবুল্লাহ এই ধারার প্রধানতম কবি। মর্সিয়া বিষয়ক কাব্য ‘জঙ্গনামা' তার সমগ্র সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ রচনা। কবি ফারসী কাব্য অবলম্বনে জঙ্গনামা রচনা করেছিলেন। কবি এ কাব্যে যেমন একদিকে যুদ্ধের বর্ণনা দিয়েছেন তেমনি গভীর বেদনার সুর ফুটিয়ে তুলেছেন। কবি কল্পনা বাস্তব তার সীমা অতিক্রম করে নানা অলৌকিক বিষয়ের অবতারণা করেছেন। অলৌকিকতা কেবল নয় অসাধারণ ও অস্বাভাবিক বীর বিক্রম এ কাব্যে বড় হয়ে উঠেছে। এর পূর্বে মোহাম্মদ খান, হায়াত মাহমুদ মর্সিয়া কাব্য রচনা করলেও গরীবুল্লাহ এই ধারার সবচেয়ে জনপ্রিয় কবি। মর্সিয়া কাব্য বিষয়ে রাধাচরণ গোপ নামে একজন হিন্দু কবির নাম পাওয়া যায়। তিনি ‘ইমামগণের কেচ্ছা ও আফৎনামা' নামে দুটি কাব্য রচনা করেছিলেন। এগুলো অষ্টাদশ শতকে রচিত হয়েছিল বলে মনে করা হয়। মীর মোশাররফ হোসেনের ‘বিষাদ সিন্ধু' মর্সিয়া সাহিত্যের ধারায় উপন্যাস জাতীয় গ্রন্থ। আধুনিক উপন্যাসের সুবিন্যস্ত বন্ধন রীতি আলোচ্য গ্রন্থে অনুসরণ করা হয়নি। গ্রন্থটি ইতিহাস, উপন্যাস, সৃষ্টিধর্মী রচনা এবং নাটক ইত্যাদি সাহিত্যের বিবিধ সংমিশ্রণে রোমান্টিক আবেগ মাখানো এক সংকর সৃষ্টি। মীর মোশাররফ হোসেন অতীতের জঙ্গনামা, মক্তুল হোসেন, শহীদে কারবালা প্রভৃতি কাব্যের সঙ্গে পরিচিত ছিলেন। সে সব গ্রন্থের কল্পনা বহুল কাহিনী দ্বারা তিনি ছিলেন প্রভারিত। তার এই উপন্যাস রূপায়নে ও চরিত্র চিত্রণে এই বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। এর কিছু প্রধান চরিত্র ছাড়া অপরাপর চরিত্র ইতিহাস বহির্ভূত ও কল্পনাশ্রয়ী। ঘটনা বিন্যাসে প্রথমদিকে সামান্য ঐক্য পরিলক্ষিত হলেও পরের দিকে ব্যাপকভাবে কল্পনানির্ভর। অন্যদিকে মর্সিয়া সাহিত্যের ধারায় হামিদ আলী ঊনিশ শতকীয় মহাকাব্যের রীতিতে কাশেম বধ কাব্য রচনা করেন। চরিত্র সৃষ্টি, ঘটনা বিন্যাস এ কাব্য মহাশ্মশান তো বটেই এমনকি অনেক ক্ষেত্রে বৃত্রসংহারের চেয়ে শ্রেষ্ঠ\ এই কাব্যে কবির দুর্লভ সংযম, প্রদীপ্ত বুদ্ধি ও চমৎকার কবিত্ব শক্তির পরিচয় পাওয়া যায়। কবির পরবর্তী রচনা ‘জয়নালোঘারে কাব্য'। কাশেম বধ কাব্যে যা বর্ণিত হয়েছে তার পরবর্তী ঘটনাবলীই এ কাব্যের বর্ণিতব্য বিষয়। মাইকেলের ব্যাপক প্রভাব এতে লক্ষণীয়। এই ধারার সর্বশেষ সংযোজন হলো কায়কোবাদের ‘মহরম শরীফ' কাব্য। এই কাব্যে কবি তার সহজাত ইতিহাসপ্রীতি, স্বজাত্যবোধ ও নীতিজ্ঞানের পরিচয় দিয়েছেন। কিন্তু কাব্যকলার উৎকর্ষ সাধন তিনি করতে পারেননি। মর্সিয়া সাহিত্যের আলোচনায় যার কথা সবার শেষে আসে তা হচ্ছে লোকসাহিত্যের অন্তর্গত মর্সিয়া কাব্য। জারি গান এই সাহিত্যের পর্যায়ভুক্ত। অন্যান্য লোকসাহিত্যের মতো এর জন্ম ময়মনসিংহের পূর্বাঞ্চলে। বিষয়ের বৈচিত্র্য, সুরের মাধুর্যে এবং শোকের গভীরতায় এই মর্সিয়া গীতি প্রচলিত কাব্যের চেয়ে উৎকৃষ্টতর দাবি রাখে।
সুত্রঃ দৈনিক সংগ্রাম
প্রশ্নঃ 'চেষ্টায় সুসিদ্ধ করে জীবনের আশা' - বাক্যটি কার রচনা
Best One ব্যাখ্যা যোগ করুন।বর্ণনাঃ
'চেষ্টায় সুসিদ্ধ করে জীবনের আশা' - বাক্যটি ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত এর মানুষ কে কবিতার একটি চরণ।
নিয়ত মানসধামে একরূপ ভাব।
জগতের সুখ-দুখে সুখ দুখ লাভ।।
পরপীড়া পরিহার, পূর্ণ পরিতোষ।
সদানন্দে পরিপূর্ণ স্বভাবের কোষ।।
নাহি চায় আপনার পরিবার সুখ।
রাজ্যের কুশলকার্যে সদা হাস্যমুখ।।
কেবল পরের হিতে প্রেম লাভ যার।
মানুষ তারেই বলি মানুষ কে আর?
নাহি চায় রাজ্যপদ নাহি চায় ধন।
স্বর্গের সমান দেখে বন উপবন।।
পৃথিবীর সমুদয় নিজ পরিজন।
সন্তোষের সিংহাসনে বাস করে মন।।
আত্মার সহিত সব সমতুল্য গণে।
মাতাপিতা জ্ঞাতি ভাই ভেদ নাহি মনে।।
সকলে সমান মিত্র শত্রু নাহি যার।
মানুষ তারেই বলি মানুষ কে আর?
অহংকার-মদে কভু নহে অভিমানী।
সর্বদা রসনারাজ্যে বাস করে বাণী।।
ভুবন ভূষিত সদা বক্তৃতার বশে।
পর্বত সলিল হয় রসনার রসে।।
মিথ্যার কাননে কভু ভ্রমে নাহি ভ্রমে।
অঙ্গীকার অস্বীকার নাহি কোন ক্রমে।।
অমৃত নিঃসৃত হয় প্রতি বাক্যে যার।
মানুষ তারেই বলি মানুষ কে আর?
চেষ্টা যত্ন অনুরাগ মনের বান্ধব।
আলস্য তাদের কাছে রণে পরাভব।।
ভক্তিমতে কুশলগণে আয় আয় ডাকে।।
পরিশ্রম প্রতিজ্ঞার সঙ্গে সঙ্গে থাকে।
চেষ্টায় সুসিদ্ধ করে জীবনের আশা।
যতনে হৃদয়েতে সমুদয় বাসা।।
স্মরণ স্মরণ মাত্রে আজ্ঞাকারী যার।
মানুষ তারেই বলি মানুষ কে আর?
ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত (৬ মার্চ ১৮১২ - ২৩ জানুয়ারি ১৮৫৯) ঊনবিংশ শতাব্দীর একজন বাঙ্গালী কবি ও সাহিত্যিক এবং সাংবাদিক । তিনি সংবাদ প্রভাকর (বা 'সম্বাদ প্রভাকর') এর সম্পাদক। কিন্তু ব্যাপক ভাবে বলতে গেলে তিনি ঊনবিংশ শতাব্দীর একজন কবি ও সাহিত্যিক। তার হাত ধরেই মধ্যযুগের গণ্ডি পেড়িয়ে বাংলা কবিতা আধুনিকতার পথে নাগরিক রূপ পেয়েছিল। তিনি "গুপ্ত কবি" নামে সমধিক পরিচিত। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের মতো তার পরবর্তী সাহিত্যিকরা ঈশ্বর গুপ্তকে 'গুরু'পদে বরণ করেছিলেন। তার ছদ্মনাম 'ভ্রমণকারী বন্ধু'। এছাড়া বহুবিধ পত্র-পত্রিকা তিনি সম্পাদনা করেছেন।
ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত |
|
---|---|
জন্ম | ৬ মার্চ ১৮১২
বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি |
মৃত্যু | ২৩ জানুয়ারি ১৮৫৯ |
নাগরিকত্ব | ব্রিটিশ ভারত |
পরিচিতির কারণ | বাঙালি কবি, সাহিত্যিক এবং সাংবাদিক |
সঙ্গী | দুর্গামণি দেবী রেবা |
প্রশ্নঃ বাংলা কাব্যে অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবর্তক-
Best One ব্যাখ্যা যোগ করুন।বর্ণনাঃ
বাংলা কাব্যে অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবর্তক- মাইকেল মধুসূদন দত্ত
যে ছন্দে চরণদ্বয়ের অন্ত্যবর্ণের মিল থাকে না, তাকে অমিত্রাক্ষর ছন্দ বলে। অমিত্রাক্ষর ছন্দ বাংলা কাব্যের একটি বিশেষ ছন্দরূপ যা ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগে মাইকেল মধুসূদন দত্ত কর্তৃক প্রবর্তিত হয়েছিল।
চরণান্তিক মিল বাংলা পদ্যের অন্যতম বৈশিষ্ট্য; কিন্তু অমিত্রাক্ষর ছন্দে চরণান্তিক মিল থাকে না। এছাড়া অমিত্রাক্ষর ছন্দে রচিত কবিতার প্রতিটি পঙক্তিতে চৌদ্দটি অক্ষর থাকা আবশ্যিক । কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত অমিত্রাক্ষর ছন্দে প্রথম যে কাব্যটি রচনা করেন তা হলো তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য; এটি ১৮৬০ সালে প্রথম প্রকাশিত হয়। অতঃপর তিনি অমিত্রাক্ষর ছন্দে মেঘনাদবধ কাব্য রচনা করেন যা ১৮৬১ সালে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়। মেঘনাদবধ কাব্যের ষষ্ঠ সর্গের অংশ বিশেষ যা “মেঘনাদ ও বিভীষণ” নামে পরিচিত তা নিম্নরূপ। এ থেকে অমিত্রাক্ষর ছন্দের স্বরূপ বোঝা যায়:
“ |
"এতক্ষণে" --অরিন্দম কহিলা বিষাদে "জানিনু কেমনে আসি লক্ষণ পশিল রক্ষঃপুরে! হায়, তাত, উচিত কি তব একাজ, নিকষা সতী তোমার জননী, সহোদর রক্ষশ্রেষ্ঠ? --শূলী-শম্ভূনিভ কুম্ভকর্ণ? ভ্রাতৃপুত্র বাসব বিজয়ী? নিজগৃহপথ, তাত, দেখাও তস্করে? চণ্ডালে বসাও আনি রাজার আলয়ে? কিন্তু নাহি গঞ্জি তোমা, গুরুজন তুমি পিতৃতুল্য। ছাড় দ্বার, যাব অস্ত্রাগারে, পাঠাইব রামানুজে শমন-ভবনে, লঙ্কার কলঙ্ক আজি ভঞ্জিব আহবে" |
” |
দুঃখিত । আপনি লগ ইন করেন নি। কোন প্রশ্ন কে পরিবর্তন করার জন্য প্রথমে আপনাকে লগ ইন করতে হবে।
বিষয়ভিত্তিক সমাধান
প্রতিষ্ঠানভিত্তিক সমাধান
অনলাইন মডেল টেস্ট
আমাদের সিস্টেম ডেভেলপারগণ এই অপশন নিয়ে কাজ করছে । আগামী ৩১ September অপশনটি শুভ উদ্বোধন করা হবে।
আর মাত্র
বাকি
আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ