১২তম বেসরকারি প্রভাষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন পরিক্ষা-১২.০৬.২০১৫/বাংলা এর প্রশ্ন পরুন ।

প্রশ্নঃ বাংলা ব্যাকরণের ধ্বনিতত্ত্ব অংশে কোন বিষয়টি আলোচনা করা হয়?

বর্ণনাঃ বাংলা ব্যাকরণের ধ্বনিতত্ত্ব অংশে আলোচিত হয় - ধ্বনির পরিবর্তন ,সন্ধি ণ-ত্ব ও ষ-ত্ব বিধান। ধ্বনি , এর উচ্চারণরীতি, উচ্চারণের স্থান ইত্যাদি। সমসা, কারক ও প্রত্যয় আলোচিত হয় ব্যাকরণের শব্দতত্ত্ব বা রুপতত্ত্ব অংশে।

প্রশ্নঃ সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র সম্পাদিত পত্রিকার নাম কি ?

বর্ণনাঃ বাংলা উপন্যাস সাহিত্যে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য ভাবাদর্শের সমন্বয় সাধনকারী বঙ্কিমচন্দ্র সম্পাদিত পত্রিকার নাম 'বঙ্গদর্শন' (১৮৭২) । তিনি ছাড়া এই পত্রিকার বিশিষ্ট চারজন লেখক হলেন- সঞ্জীবচন্দ্র চট্রোপাধ্যায় ,হরপ্রসাদ শাস্ত্রী, রামকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় ও অক্ষয়চন্দ্র সরকার। সংবাদ প্রভাকর (১৮৩১) ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত, মাসিক পত্রিকা (১৮৫৪) প্যারীচাঁদ মিত্র ও রাধানাধ শিকদার , গ্রামবার্তা প্রকাশিকা (১৮৬৩) কাঙাল হরিনাথ মজুমদার সম্পাদনা করেন।

প্রশ্নঃ 'আকাশ' শব্দের সমার্থক শব্দ কোনটি?

বর্ণনাঃ 'আকাশ' শব্দের সমার্থক শব্দ হলো - আসমান, অম্বর, গগন, ব্যোম, নভঃ নভোমণ্ডল ,শুণ্য , দ্যু, ছায়ালোক , অনন্ত , দ্যুলোক । বিভু, প্রভাকর ও সুধাকর হচ্ছে যথাক্রমে , ঈশ্বর, সূর্য ও চাঁদ শব্দের সমার্থক শব্দ।

প্রশ্নঃ সর্বজনের হিতকর ----এককথায় কী হবে?

বর্ণনাঃ সর্বজনীন শব্দের অর্থ হচ্ছে সকলের মঙ্গলজনক বা কল্যাণকর। আবার সর্বসাধারণের জন্য অনুষ্ঠিত ; বারোয়ারি। সার্বজনীন অর্থ - সকলের মধ্যে প্রবীণ; সর্বশ্রেষ্ঠ। বিশ্বজনীন অর্থ জগদ্ব্যাপী , বিশ্বের মঙ্গলজনক , সর্বজনহিতকর। সকল মানুষ সম্পর্কীয় সর্বহিতকর।

প্রশ্নঃ 'অনুমোদিত' শব্দটির বিপরীতার্থক শব্দ কোনটি?

বর্ণনাঃ 'অনুমোদিত' বিশেষণ শব্দটির অর্থ: সম্মতিপ্রাপ্ত, যার বিপরীত শব্দ -অননুমোদিত। 'অনুমেয় ' শব্দের বিপরীত অননুমেয়, 'আবশ্যক' শব্দের বিপরীত 'অনাবশ্যক' এবং 'ঐকমত্য' শব্দের বিপরীত শব্দ ' মতানৈক্য'।

প্রশ্নঃ পাঠক শব্দের যথার্থ প্রকৃতি ও প্রত্যয় কোনটি?

বর্ণনাঃ কর্তৃবাচ্য ধাতুর পরে 'অক' প্রত্যয় যোগ হয়ে রুট পঠ + অক = পাঠক শব্দটি গঠিত হয়েছে।

প্রশ্নঃ নিচের কোন শব্দটি শুদ্ধ?

বর্ণনাঃ কৌতুহল শব্দের শুদ্ধ রুপ কৌতূহল, কাংখিত শব্দের শুদ্ধরুপ কাঙ্ক্ষিত ,শ্রদ্ধাঞ্চলী শব্দের শুদ্ধ রুপ শ্রদ্ধাঞ্জলি।

প্রশ্নঃ বাগযন্ত্রের অংশ নয় ---

বর্ণনাঃ উচ্চারণ কার্যের সঙ্গে যুক্ত ইন্দ্রিয়সমূহ ১. ঠোঁট , ওষ্ঠ ২. দাঁতের পাটি ৩. দন্তমূল, অগ্র দন্তমূল ৪. অগ্রতালু, শক্ত তালু ৫. পশ্চাত্তালু , নরম তালু, মূর্ধা ৬. আলজিভ ৭. জিহ্বাগ্র ৮. সম্মুখ জিহ্বা ৯. পশ্চাদ জিহ্বা, জিহ্বামূল ১০. নাসা-গহ্বর ১১. স্বর-পল্লব, স্বরতন্ত্রী ও ১২. ফুসফুস।

প্রশ্নঃ কোন শব্দটি 'সিক্ত'র বিপরীত?

বর্ণনাঃ প্রত্যেকটি শব্দের নিজস্ব অর্থ আছে। একটি শব্দ যখন অন্য একটি শব্দের বিপরীত অবস্থানে থাকে বা বিপরীত অর্থ প্রকাশ করে, তখন তাকে বিপরীত শব্দ বলে। যেমন - অর্জন-বর্জন, সিক্ত - শুষ্ক , তীব্র - লঘু ইত্যাদি।

প্রশ্নঃ গাড়ি 'স্টেশন' ছাড়ল ---এখানে 'স্টেশন' কোন কারকের কোন বিভক্তি?

বর্ণনাঃ যা থেকে কিছু বিচ্যুত , গৃহীত, জাত, বিরত, আরম্ভ, দূরীভূত ও রক্ষিত হয় এবং যা দেখে কেউ ভীত হয়, তাকেই অপাদান কারক বলে। যেমন : পাপে বিরত হও। অপাদান কারকে বিভিন্ন বিভক্তি ছাড়াও হতে , থেকে, দিয়া, দিয়ে ইত্যাদি অনুসর্গ ব্যবহৃত হয়। যথা: তিনি কুষ্টিয়া থেকে এসেছেন।

প্রশ্নঃ বাক্যে দাঁড়ি (। ) থাকলে কতক্ষণ থামতে হয়?

বর্ণনাঃ বাক্যের পরিসমাপ্তি বোঝাতে দাঁড়ি বা পূর্ণচ্ছেদ ব্যবহার করতে হয়। যথা- চুয়াডাঙ্গায় বাংলাদেশের প্রথম ডাকঘর স্থাপতি হয়। দাঁড়ি বা পূর্ণচ্ছেদের বিরতিকাল এক সেকেন্ড। জিজ্ঞাসা চিহ্ন (?) , বিস্ময় চিহ্ন (!) কোলন (:) কোলন ড্যাস (:-) ও ড্যাস (-) থাকলে এক সেকেন্ড থামতে হয়।

প্রশ্নঃ 'গিন্নি' কোন শব্দ?

বর্ণনাঃ বাংলা ভাষায় যেসব সংস্কৃত শব্দ কিঞ্চিৎ পরিবর্তিত আকারে ব্যবহৃত হয়, সেগুলোকে বলে অর্ধ-তৎসম শব্দ। তৎসম মানে সংস্কৃত আর অর্থ- তৎসম মানে আধা সংস্কৃত । যেমন -জ্যোৎস্না>জ্যোছনা, শ্রাদ্ধ>ছেরাদ্দ, গৃহিণী>গিন্নী, বৈষ্ণব> বোষ্টম ,কুৎসিত > কুচ্ছিত। যেসব শব্দের মূল সংস্কৃত ভাষায় পাওয়া যায়, কিন্তু ভাষার স্বাভাবিক বিবর্তন ধারায় প্রাকৃতের মাধ্যমে পরিবর্তিত হয়ে আধুনিক বাংলা ভাষায় স্থান করে নিয়েছে , সেসব শব্দকে বলা হয় তদ্ভব শব্দ। যেমন : হস্ত> হত্থ> হাত। যেসব শব্দ সংস্কৃত ভাষা থেকে অপরিবর্তিত অবস্থায় বাংলায় এসেছে, সেসব শব্দকে তৎসম শব্দ বলে। যেমন : চন্দ্র সূর্য, নক্ষত্র ,ভবন ইত্যাদি।

প্রশ্নঃ কাঁদ + না ---এটি কোন সন্ধি?

বর্ণনাঃ কাঁদ + না =কান্না শব্দটি ব্যঞ্জনসন্ধি সাধিত । স্বরে আর ব্যঞ্জনে, ব্যঞ্জনে আর ব্যঞ্জনে এবং ব্যঞ্জনে আর স্বরে মিলিত হয়ে যে সন্ধি হয় তাকে ব্যঞ্জন সন্ধি বলে। বাংলা ব্যঞ্জন সন্ধি সমীভবন (assimilation)- এর নিয়মেই হয়ে থাকে। আর তাও মূলত কথ্য রীতিতে সীমাবদ্ধ। যেমন- সুপ + অন্ত = সুবন্ত, পরি +ছদ = পরিচ্ছদ, সৎ + চিন্তা =সচ্চিন্তা।

প্রশ্নঃ অনুরাগ শব্দটির বিপরীত শব্দ কোনটি?

বর্ণনাঃ 'অনুরাগ' বিশেষ্য শব্দটির অর্থ: প্রীতি ,স্নেহ, যার বিপরীত শব্দ: বিরাগ। 'অনুরক্ত' ও 'ঘাত' শব্দের বিপরীত শব্দ যথাক্রমে : 'বিরক্ত' ও 'প্রতিঘাত' ।

প্রশ্নঃ গাছে উঠতে পটু যে ---এক কথায় কী হবে?

বর্ণনাঃ গাছে উঠতে পটু যে- গেছো। আরোহণ করে যে - আরোহী।

প্রশ্নঃ 'বীণাপাণি' কোন সমাস?

বর্ণনাঃ যে সমাসে সমস্যমান পদগুলোর কোনোটির অর্থ না বুঝিয়ে অন্য কোনো পদকে বোঝায়, তাকে বহুব্রীহি সমাস বলে। যথা- বহুব্রীহি (ধান) আছে যার = বহুব্রীহি। এখানে বহু কিংবা ব্রীহি কোনোটিরই অর্থের প্রাধান্য নেই, যার বহু ধান আছে এমন লোককে বোঝাচ্ছে। বহুব্রীহি সমাসে সাধারণত যার, যাতে ইত্যাদি শব্দ ব্যাসবাক্যরুপে ব্যবহৃত হয়।

প্রশ্নঃ 'Justification for' --এর সঠিক অনুবাদ কোনটি?

বর্ণনাঃ ' Justification for' এর অর্থ: সমর্থন। অপরদিকে Judgement , Comment ও Lebate - দ্বারা যথাক্রমে : বিচার, মন্তব্য ও তর্ক বোঝায় ।

প্রশ্নঃ ণত্ব বিধান বাংলা বানানে কোন শব্দের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য?

বর্ণনাঃ তৎসম শব্দের বানানে মূধন্য ণ এর সঠিক ব্যবহারের নিয়মই ণত্ব বিধান। বাংলা ভাষায় সাধারণত মূর্ধন্য -ণ ধ্বনির ব্যবহার নেই। সে জন্য বাংলা (দেশি) , তদ্ভব ও বিদেশি শব্দের বানানে মূর্ধন্য -ণ বর্ণ লেখার প্রয়োজন হয় না। কিন্তু বাংলা ভাষায় বহু তৎসম বা সংস্কৃত শব্দে মূর্ধন্য -ণ এবং দন্ত্য- ন এর ব্যবহার আছে। তা বাংলায় অবিকৃতভাবে রক্ষিত হয়।